ছন্দা বিশ্বাস
মোবাইল অন করতেই চোখে পড়ল, আজকের আপডেট৷ টেম্পারেচার ফর্টি টু দেখালেও অনুভূতি প্রায় ফিফটি ডিগ্রির মতো৷ পুড়ে ছারখার হচ্ছে কলকাতা৷ অদ্রিজার আসার কথা, তাই মেট্রোর সামনে দাঁড়িয়ে আছে সায়ক৷ ঘামে সপসপে অবস্থা৷ রুমাল দিয়ে ঘন ঘন কপাল গলা মুছেও স্বস্তি পাচ্ছে না৷ আকাশের দিকে তাকালে চোখ ঝলসে উঠছে৷
এরকম একটা সময়ে শাওনের ফোন এলো৷ কথাটা শোনা মাত্র মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠল৷ দুই চোখে অন্ধকার ঘনিয়ে এল সাময়িকের জন্যে৷ কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, ‘ক্-কী বললি? শাওন বলল, জলদি আয়— এসএসকেএমে ভর্তি আছে৷ সাবধানে আসিস৷’ সায়কের পা দুটো কাঁপছে থরথর করে৷ ঝাপসা চোখে কোনোমতে একটা উবার বুক করে ফেলল৷ সময় দেখাচ্ছে দশ মিনিট৷ জ্যাম থাকলে সেটা বেশি হয়ে যাবে৷ আবার কমেও যায় সময়ে সময়ে৷ পুরোটাই রাস্তার কন্ডিশনের উপরে ডিপেন্ড করছে৷ এই সময়টুকু সে শাওনের সঙ্গে কথা বলল৷ শাওন বিশেষ কিছু বলতে পারল না৷
আট মিনিটের মাথায় উবার এলে ও বেরিয়ে গেল৷ হাসপাতালে পৌঁছে জানতে পারল সিসিইউতে অ্যাডমিট করা হয়েছে৷ শাওনকে দেখতে না পেয়ে সায়ক উদবিগ্ন হয়ে সিসিইউ-এর দিকে এগিয়ে গেল৷ লিফট আসতে দেরি দেখে সিঁড়ি ধরেই চারতলায় উঠল৷ গেটে সিকিওরিটিকে নিজের পরিচয় দিল৷ অদ্রিজার হাজব্যান্ড শুনে সিকিওরিটি যুবক এক নজর তাকাল সায়কের দিকে৷ তারপরে বলল, ‘আমি ভিতরে গিয়ে শুনে আসছি আপনি এখন যেতে পারবেন কিনা৷’ সিসিইউ-তে দায়িত্বপ্রাপ্ত যে এমও আছেন তার কাছে সায়কের পরিচয় দিলে ডাঃ সোম জানালেন, ভিতরে আসতে বলো৷ সিকিওরিটির মুখের দিকে তাকিয়ে সায়ক ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল৷ বিহ্বল গলায় জিজ্ঞাসা করল, কিছু বলল? ছেলেটি ধীর গলায় বলল, ভিতরে যান৷ ডান দিকে পোশাক রাখা আছে৷ গায়ে দিয়ে ভিতরের চটি পরে যাবেন৷ নয় নম্বরে আপনার পেশেন্ট৷
বাইরে জুতো খুলে দরজা দিয়ে ভিতরে ঢুকেই ডান দিকের র্যাকে গাউন রাখা আছে দেখল৷ নীল রঙের গাউন আর চটি পরতে যেটুকু সময় অথচ সায়কের মনে হচ্ছে যেন কত সময়ে পেরিয়ে যাচ্ছে৷ কেমন আছে অদ্রিজা? কী অবস্থায় দেখবে ওকে৷ হতবিহ্বল চোখে দেখল দুইপাশে মৃতপ্রায় রোগীর সারি৷ ভেন্টিলেশনে রাখা আছে প্রায় সকলকে৷ বাইপ্যাপ দেওয়া হয়েছে বাম দিকের দুইজন রুগীকে৷ কারো চোখ ঠেলে বেরিয়ে আসছে, কারো মুখ চোখ বীভৎস কদাকার হয়ে আছে৷
২
সায়ক এইসব মুমূর্ষু রোগীদের ভিতরে ওর প্রিয়তমাকে খুঁজে চলেছে৷ নয় নম্বর বেডের কথা মাথা থেকে এই মুহূর্তে আউট হয়ে গেছে৷ একজন সিস্টার এগিয়ে এলেন৷ হাতের ইশারায় দেখালেন৷ সায়ক ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে নয় নম্বর বেডের দিকে৷ মাথায় কপালে প্যাঁচানো ব্যান্ডেজ৷ গায়ে দুধ সাদা চাদর৷ ফর্সা ধবধবে চেহারার অদ্রিজার শরীরের সামান্য অংশ উন্মুক্ত৷ মমির মতো দেখাচ্ছে৷ মুখের দিকে তাকানোর মত অবস্থা নেই৷ সায়ক পাথরের মূর্তির মত নিশ্চল, নির্বাক৷
দীর্ঘ দশ বছরের প্রেম৷ মাত্র ছয় মাস হল ওদের বিয়ে হয়েছে৷ সায়নের চাকরির জন্যেই এতদিন অপেক্ষা করছিল৷ যাদবপুরে পড়াকালীন পরিচয় সায়ক আর অদ্রিজার৷ বিএসসিতে অ্যাডমিট নেওয়ার সময়েই ওদের আলাপ পরিচয় শুরু৷ তারপরে কত কিছু ঘটে গেল জীবনের উপর দিয়ে৷ কিছুদিন ছাড়াছাড়ি হয়েছিল সামান্য ভুল বোঝাবুঝির কারণে৷ দুই বছর বাদে ফের জোড়া লাগল৷ বন্ধুরা তখন খুবই হেল্প করেছিল৷ বিশেষ করে শাওন, সঞ্জয় আর কমলেশ৷
একেবারে জীবন্মৃত অবস্থা৷
সায়ক জানে এই স্পন্দন অর্থহীন৷ আশাহীন ব্যর্থ চেষ্টা মাত্র৷ অদ্রিজা যেন তাকে উপহাস করছে৷ বলছে, দেখো মরে গিয়েও কেমন বেঁচে আছি৷ পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে সায়নের৷ পড়তে গিয়েও নিজেকে কোনোমতে সামলে নিল৷ সিস্টার একটা চেয়ার দেখিয়ে বলল, বসুন৷ শান্ত হোন৷ হার্ট সচল আছে, তাই ডেথ ডিক্লেয়ার করা যাচ্ছে না৷ কিছু সময়ের জন্যে শাওন বাইরে গিয়েছিল৷ গুরুদোয়ারার সামনে চায়ের দোকান থেকে চা খেতে খেতে কমলেশের ফোন এল৷
একটু আগেই ও কাঁপা কাঁপা হাতে ফোন করল কমলেশকে৷ আসলে অদ্রিজার এই খবর ও নিতে পারছিল না৷ সায়ককে কীভাবে বলবে সেটাই ভাবছিল৷ ফোনে ওর গলা শুনে কমলেশ চমকে ওঠে৷ বলে, কী হয়েছে রে? শাওন সংক্ষেপে জানাল৷
কমলেশ যেন বিশ্বাস করতে পারছে না৷ বলল, অদ্রিজার অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে?
ভগ্ন গলায় বলল, হ্যাঁ রে— আজ সকালেই৷
তারপরে কম্পিত গলায় বলল, চলে আয় একা সামলাতে পারছি না৷
৩
সায়ক টলোমলো পায়ে সিসিইউ থেকে বেরিয়ে আসে৷ দরজার বাইরে অপেক্ষমাণ মুখগুলো ওর দিকে তাকিয়ে আছে৷ কারো মুখে কথা নেই৷ নির্বাক মূক হয়ে আছে যেন সকলে৷ হয়ত সকলের ভিতরে একই সংশয় কাজ করছে, কে রয় আর কে যায়৷
উপস্থিত একজন সামান্য সরে বসে সায়কের জন্যে জায়গা করে দিল৷ সায়ক দুই পা এগিয়েও বেঞ্চের সামনে পৌঁছুতে পারল না৷
ধপ করে মেঝেতে বসে পড়ল৷ কয়েকজন ধরতে এলে সায়ক হাত উঁচু করে তাদের জানাল, ঠিক আছে৷ সকলের ভিতরে একইরকম টানাপোড়েন চলছে৷ তাই সকলেই সকলের মনের অবস্থা উপলব্ধি করতে পারছে৷
কিছুক্ষণ সিসিইউ-এর সামনে হাঁটু মুড়ে বসেছিল৷ খানখান হয়ে যাচ্ছে বুকের ভিতরটা৷ পাজরগুলো ভেঙে চূর্ণ-বিচূর্ণ হচ্ছে৷ কিন্ত্ত কাঁদতে পারছে কই?
আধ ঘন্টার ভিতরে চলে এল কমলেশ, শাওন, সঞ্জয়রা৷
ডাঃ সোম পরিষ্কার করে জানিয়ে দিলেন, ব্রেন ডেথ৷
এই অবস্থা থেকে কি রোগী কখনো সারভাইভ করতে পারে?
কিঞ্জলের কথায় ডাঃ সোম মাথা নাড়েন, যেখানে মস্তিষ্কের মৃতু্য ঘটেছে সেখানে সারভাইভের প্রশ্নই আসে না৷
তাহলে আপনারা ডেথ ডিক্লেয়ার করছেন না কেন?
ওই যে বলে যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আঁশ৷ তাই হার্ট না-থামা পর্যন্ত ডেথ ডিক্লেয়ার করা আইন বিরুদ্ধ৷ তবে যদি ওর বাড়ির লোক চান—
ওর বাড়ির লোক বলতে সায়ক ছাড়া এই মুহূর্তে আর কেউই নেই৷
অদ্রিজার বাবা তো আগেই মারা গেছেন৷ গত বছর মাও চলে গেলেন৷ অদ্রিজা বলত, আমি খুব অভাগা জানিস৷
সায়ক ওকে বুকে টেনে বলত, আমি তো আছি৷ তোর সব কষ্ট আমি নিজের কাছে রেখে দিলাম৷
ডাঃ সোম কথাটা শেষ করতে না করতেই সায়ক হঠাৎ বলে ওঠে, অদ্রিজা বডিটা দান করার কথা বলেছিল—
কমলেশ আর শাওনও জানত৷ ওদেরকে অদ্রিজাই বলেছিল, সায়কের সঙ্গে যখন ব্রেক আপ হয়ে গেল তখনই ও বডি ডোনেট করবে বলেছিল৷ রীতিমতো রেজিস্ট্রেশন করে এসএসকেএম হাসপাতালেই ওর বডি ডোনেট করবে জানিয়েছিল৷ ভলান্টারি বডি ডোনেশন৷ মরে যাওয়ার পরে যাতে ওর শরীর নিয়ে মেডিকেল স্টুডেন্টরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারে৷
ডাঃ সোম পাশ থেকে বললেন, সত্যি?
ডাঃ সোমের দু’চোখে ঝিলিক খেলে গেল৷
সায়নের বুকের ভিতরে তখন পাড় ভাঙার শব্দ৷
একজনের মৃতু্য যে অন্য জনের ভিতরে এমন আশার আলো জ্বালতে পারে!
৪
ডাঃ সোম বললেন, ব্যাপারটা যদি সত্যি এমন হয় তাহলে আপনাদের রোগীর কিছু কিছু ভাইটাল অর্গ্যান যা এই মুহূর্তে সচল আছে সেগুলো কোনো মৃতু্যপথযাত্রীর প্রাণ ফেরাতে পারে৷ হার্ট, লাং, লিভার, কিডনি, এমনকি বিভিন্ন টেন্ডন, কার্টিলেজ, কর্নিয়া টিসু্য, স্কিন, কার্টিলেজ এমনকি ইনটেস্টাইন, প্যাংক্রিয়াস, হার্টের ভাল্ভ, বোন ইত্যাদি কাজে লাগতে পারে৷ শরীরে প্রতিটা অর্গানই গুরুত্বপূর্ণ৷ কত মুমূর্ষু রোগীর প্রাণ ফেরাতে পারে৷ আশাহত মানুষদেরকে আশার আলো দেখাতে পারে৷
সায়ক একটা ফর্ম ফিল আপ করে নিচে সই করে দিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে আসে৷
একটা ধ্বস্ত মন নিয়ে শাওনের বাইকে উঠে পড়ল৷ বলল, আমাকে একবার প্রিন্সেপ ঘাটে নিয়ে যেতে পারিস?
জেটিতে এসে দাঁড়াল সায়ক আর শাওন৷ আকাশে মেঘের আনাগোনা৷
তীব্র দাবদাহের পরে এক পশলা বৃষ্টি নামল৷ অথচ সকালের দিকে আগুন বাতাস চোখে মুখে যেন ঝাপটা দিচ্ছিল৷ মুখ মাথা কাপড়ে ঢাকা দিয়েও শেষ রক্ষা করা যাচ্ছিল না৷ অদ্রিজা রাস্তায় নেমে প্রচণ্ড একটা অস্বস্তি বোধ করতে লাগল৷ কেমন যেন দমচাপা একটা কষ্ট৷ অক্সিজেনের অভাব বোধ করছে৷ ব্যাগ থেকে বের করে কয়েক ঢোক জল খেল৷ চাপ-চাপ কষ্ট হচ্ছে বুকে৷ ঘামে ভিজে গিয়ে শরীরে লেপটে আছে পরিধেয়৷
ও একটা ছায়া খুঁজছিল৷ নিদেনপক্ষে একটা গাছ৷ একটু অক্সিজেনের জন্যে প্রাণ হাহাকার করছিল৷ কিন্ত্ত মরুপ্রায় এই শহরটাতে তেমন কোনো গাছ নজরে পড়ল না৷ ও বাসের জন্যে ওয়েট করছিল৷ কিন্ত্ত আর যে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না৷ ওর পা দুটো টলছিল মাঠটা চক্কর দিল৷ ও দু’বার পাক খেল এবং মাথা ঘুরে পড়ে গেল রাস্তার উপরেই৷
ঠিক সেই মুহূর্তে একটা গতিময় গাড়ি ওকে ধাক্কা দিয়ে বেরিয়ে গেল৷
একজন পথচারী তখন সেই পথ ধরে যাচ্ছিলেন৷ লোকটার চোখের সামনে এতবড় দুর্ঘটনা ঘটে গেল দেখে তিনি ছুটে গেলেন৷ দেখলেন মাথা কপাল ফেটে রক্তে ভেসে যাচ্ছে পোশাক৷ পিপাসু রাজপথ শুষে নিচ্ছে তরল রক্ত৷
লোকটা তখন অন্য পথচারীদের খুঁজছিলেন৷ ‘হেল্প হেল্প’, বলে চিৎকার করতে লাগলেন৷ কিছুটা দূরে দু’জন শাদা পোশাকের ট্র্যাফিক সার্জেন্ট ছিলেন৷ ছুটে গেলেন তাদের কাছে৷
এই ঘটনা শুনেই দ্রুত ছুটে এলেন ট্র্যাফিক সার্জেন্ট৷ তৎক্ষণাৎ অদ্রিজাকে পুলিশ ভ্যানে চাপিয়ে এসএসকেএম হাপাতালে নিয়ে গেল৷
দেখতে দেখতে বেশ কয়েক মাস কেটে গেছে৷
সেদিন সময় বের করে সায়ক প্রিন্সেপ ঘাটে চলে আসে৷ আজ ওদের প্রথম বিবাহবার্ষিকী৷ মোবাইলে রিমাইন্ডার সেট করা ছিল৷ অদ্রিজাই করেছিল৷ আজ বুকের ভিতরে ঝড় বয়ে চলেছে সায়কের৷ অদ্রিজার স্মৃতি ভোলার নয়৷ একাকিত্ব কী ভীষণ দুঃসহ৷ পাগল মন ঘর থেকে টেনে আজ বের করে নিয়ে এল৷ এই জায়গাটা ওদের দু’জনেরই খুব প্রিয়৷
৫
ওরা যে জায়গায় এসে সূর্যাস্ত দেখত আজ সেখানে এল সায়ক৷ বেলা পড়ে এসেছে৷ পশ্চিম আকাশে তখন বৈরাগ্যের রং৷ স্মৃতির ঝড় পাতাগুলোকে ওলট-পালট করে দিচ্ছে ৷ মনে পড়ে সেই হূদয় দেওয়ার স্মৃতি৷ এই সময়টুকুর ভিতরে কত কী যে ঘটে গেল৷
সায়ক ভাবছিল অদ্রিজার কথা৷ সেদিন মেডিকেল টিম এসে তাদের কাজ শুরু করে দিল৷
গ্রিন করিডর ধরে বেরিয়ে গেল অদ্রিজার শরীরের বিভিন্ন অর্গান নিয়ে৷
ডাঃ সোম এই কাজে তাকে সাহায্য করেছিলেন৷ আসলে অদ্রিজার এটাই ইচ্ছা ছিল৷ বডি ডোনেটের ফর্ম ফিল আপ করেও শেষ মুহূর্তে সেটা জমা দিতে পারেনি৷
মৃতু্যর পরে তার শেষ ইচ্ছেটা পূর্ণ করল সায়ক৷
সায়ক জেনেছে অদ্রিজার শরীরের যে-যে অর্গ্যান নিয়ে যাঁরা বেঁচে আছেন তাঁরা প্রায় সকলেই রীতিমতো সুস্থ৷
হঠাৎই একটা শব্দে চমক ভাঙে সায়কের৷ সামনেই একটা জাহাজ হুইসেল বাজাতে বাজাতে জেটি ছেড়ে বেরিয়ে গেল৷ বিষণ্ণ ঢেউগুলো ভেঙে-চুরে জলের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে৷ দূরে একটা নৌকায় দাঁড় বাইতে বাইতে মাঝি আপন মনে গাইছে— মাঝি বাইয়া যাও রে…৷ সায়ক ভাবছিল অদ্রিজা আজ ওর একার নয়, কত জনের হূদয়-মন্দিরে তাজ হয়ে আছে অদ্রিজা৷
ঈশ্বরীই বটে৷ নইলে নিজের দেহাংশ দিয়ে এতগুলো মানুষের প্রাণ ফিরিয়ে দিতে পারত না৷