• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

তাজমহল

ছন্দা বিশ্বাস মোবাইল অন করতেই চোখে পড়ল, আজকের আপডেট৷ টেম্পারেচার ফর্টি টু দেখালেও অনুভূতি প্রায় ফিফটি ডিগ্রির মতো৷ পুড়ে ছারখার হচ্ছে কলকাতা৷ অদ্রিজার আসার কথা, তাই মেট্রোর সামনে দাঁড়িয়ে আছে সায়ক৷ ঘামে সপসপে অবস্থা৷ রুমাল দিয়ে ঘন ঘন কপাল গলা মুছেও স্বস্তি পাচ্ছে না৷ আকাশের দিকে তাকালে চোখ ঝলসে উঠছে৷ এরকম একটা সময়ে শাওনের ফোন

ছন্দা বিশ্বাস

মোবাইল অন করতেই চোখে পড়ল, আজকের আপডেট৷ টেম্পারেচার ফর্টি টু দেখালেও অনুভূতি প্রায় ফিফটি ডিগ্রির মতো৷ পুড়ে ছারখার হচ্ছে কলকাতা৷ অদ্রিজার আসার কথা, তাই মেট্রোর সামনে দাঁড়িয়ে আছে সায়ক৷ ঘামে সপসপে অবস্থা৷ রুমাল দিয়ে ঘন ঘন কপাল গলা মুছেও স্বস্তি পাচ্ছে না৷ আকাশের দিকে তাকালে চোখ ঝলসে উঠছে৷

এরকম একটা সময়ে শাওনের ফোন এলো৷ কথাটা শোনা মাত্র মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠল৷ দুই চোখে অন্ধকার ঘনিয়ে এল সাময়িকের জন্যে৷ কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, ‘ক্-কী বললি? শাওন বলল, জলদি আয়— এসএসকেএমে ভর্তি আছে৷ সাবধানে আসিস৷’ সায়কের পা দুটো কাঁপছে থরথর করে৷ ঝাপসা চোখে কোনোমতে একটা উবার বুক করে ফেলল৷ সময় দেখাচ্ছে দশ মিনিট৷ জ্যাম থাকলে সেটা বেশি হয়ে যাবে৷ আবার কমেও যায় সময়ে সময়ে৷ পুরোটাই রাস্তার কন্ডিশনের উপরে ডিপেন্ড করছে৷ এই সময়টুকু সে শাওনের সঙ্গে কথা বলল৷ শাওন বিশেষ কিছু বলতে পারল না৷

আট মিনিটের মাথায় উবার এলে ও বেরিয়ে গেল৷ হাসপাতালে পৌঁছে জানতে পারল সিসিইউতে অ্যাডমিট করা হয়েছে৷ শাওনকে দেখতে না পেয়ে সায়ক উদবিগ্ন হয়ে সিসিইউ-এর দিকে এগিয়ে গেল৷ লিফট আসতে দেরি দেখে সিঁড়ি ধরেই চারতলায় উঠল৷ গেটে সিকিওরিটিকে নিজের পরিচয় দিল৷ অদ্রিজার হাজব্যান্ড শুনে সিকিওরিটি যুবক এক নজর তাকাল সায়কের দিকে৷ তারপরে বলল, ‘আমি ভিতরে গিয়ে শুনে আসছি আপনি এখন যেতে পারবেন কিনা৷’ সিসিইউ-তে দায়িত্বপ্রাপ্ত যে এমও আছেন তার কাছে সায়কের পরিচয় দিলে ডাঃ সোম জানালেন, ভিতরে আসতে বলো৷ সিকিওরিটির মুখের দিকে তাকিয়ে সায়ক ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল৷ বিহ্বল গলায় জিজ্ঞাসা করল, কিছু বলল? ছেলেটি ধীর গলায় বলল, ভিতরে যান৷ ডান দিকে পোশাক রাখা আছে৷ গায়ে দিয়ে ভিতরের চটি পরে যাবেন৷ নয় নম্বরে আপনার পেশেন্ট৷

বাইরে জুতো খুলে দরজা দিয়ে ভিতরে ঢুকেই ডান দিকের র্যাকে গাউন রাখা আছে দেখল৷ নীল রঙের গাউন আর চটি পরতে যেটুকু সময় অথচ সায়কের মনে হচ্ছে যেন কত সময়ে পেরিয়ে যাচ্ছে৷ কেমন আছে অদ্রিজা? কী অবস্থায় দেখবে ওকে৷ হতবিহ্বল চোখে দেখল দুইপাশে মৃতপ্রায় রোগীর সারি৷ ভেন্টিলেশনে রাখা আছে প্রায় সকলকে৷ বাইপ্যাপ দেওয়া হয়েছে বাম দিকের দুইজন রুগীকে৷ কারো চোখ ঠেলে বেরিয়ে আসছে, কারো মুখ চোখ বীভৎস কদাকার হয়ে আছে৷


সায়ক এইসব মুমূর্ষু রোগীদের ভিতরে ওর প্রিয়তমাকে খুঁজে চলেছে৷ নয় নম্বর বেডের কথা মাথা থেকে এই মুহূর্তে আউট হয়ে গেছে৷ একজন সিস্টার এগিয়ে এলেন৷ হাতের ইশারায় দেখালেন৷ সায়ক ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে নয় নম্বর বেডের দিকে৷ মাথায় কপালে প্যাঁচানো ব্যান্ডেজ৷ গায়ে দুধ সাদা চাদর৷ ফর্সা ধবধবে চেহারার অদ্রিজার শরীরের সামান্য অংশ উন্মুক্ত৷ মমির মতো দেখাচ্ছে৷ মুখের দিকে তাকানোর মত অবস্থা নেই৷ সায়ক পাথরের মূর্তির মত নিশ্চল, নির্বাক৷

দীর্ঘ দশ বছরের প্রেম৷ মাত্র ছয় মাস হল ওদের বিয়ে হয়েছে৷ সায়নের চাকরির জন্যেই এতদিন অপেক্ষা করছিল৷ যাদবপুরে পড়াকালীন পরিচয় সায়ক আর অদ্রিজার৷ বিএসসিতে অ্যাডমিট নেওয়ার সময়েই ওদের আলাপ পরিচয় শুরু৷ তারপরে কত কিছু ঘটে গেল জীবনের উপর দিয়ে৷ কিছুদিন ছাড়াছাড়ি হয়েছিল সামান্য ভুল বোঝাবুঝির কারণে৷ দুই বছর বাদে ফের জোড়া লাগল৷ বন্ধুরা তখন খুবই হেল্প করেছিল৷ বিশেষ করে শাওন, সঞ্জয় আর কমলেশ৷
একেবারে জীবন্মৃত অবস্থা৷

সায়ক জানে এই স্পন্দন অর্থহীন৷ আশাহীন ব্যর্থ চেষ্টা মাত্র৷ অদ্রিজা যেন তাকে উপহাস করছে৷ বলছে, দেখো মরে গিয়েও কেমন বেঁচে আছি৷ পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে সায়নের৷ পড়তে গিয়েও নিজেকে কোনোমতে সামলে নিল৷ সিস্টার একটা চেয়ার দেখিয়ে বলল, বসুন৷ শান্ত হোন৷ হার্ট সচল আছে, তাই ডেথ ডিক্লেয়ার করা যাচ্ছে না৷ কিছু সময়ের জন্যে শাওন বাইরে গিয়েছিল৷ গুরুদোয়ারার সামনে চায়ের দোকান থেকে চা খেতে খেতে কমলেশের ফোন এল৷

একটু আগেই ও কাঁপা কাঁপা হাতে ফোন করল কমলেশকে৷ আসলে অদ্রিজার এই খবর ও নিতে পারছিল না৷ সায়ককে কীভাবে বলবে সেটাই ভাবছিল৷ ফোনে ওর গলা শুনে কমলেশ চমকে ওঠে৷ বলে, কী হয়েছে রে? শাওন সংক্ষেপে জানাল৷
কমলেশ যেন বিশ্বাস করতে পারছে না৷ বলল, অদ্রিজার অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে?
ভগ্ন গলায় বলল, হ্যাঁ রে— আজ সকালেই৷
তারপরে কম্পিত গলায় বলল, চলে আয় একা সামলাতে পারছি না৷


সায়ক টলোমলো পায়ে সিসিইউ থেকে বেরিয়ে আসে৷ দরজার বাইরে অপেক্ষমাণ মুখগুলো ওর দিকে তাকিয়ে আছে৷ কারো মুখে কথা নেই৷ নির্বাক মূক হয়ে আছে যেন সকলে৷ হয়ত সকলের ভিতরে একই সংশয় কাজ করছে, কে রয় আর কে যায়৷
উপস্থিত একজন সামান্য সরে বসে সায়কের জন্যে জায়গা করে দিল৷ সায়ক দুই পা এগিয়েও বেঞ্চের সামনে পৌঁছুতে পারল না৷
ধপ করে মেঝেতে বসে পড়ল৷ কয়েকজন ধরতে এলে সায়ক হাত উঁচু করে তাদের জানাল, ঠিক আছে৷ সকলের ভিতরে একইরকম টানাপোড়েন চলছে৷ তাই সকলেই সকলের মনের অবস্থা উপলব্ধি করতে পারছে৷
কিছুক্ষণ সিসিইউ-এর সামনে হাঁটু মুড়ে বসেছিল৷ খানখান হয়ে যাচ্ছে বুকের ভিতরটা৷ পাজরগুলো ভেঙে চূর্ণ-বিচূর্ণ হচ্ছে৷ কিন্ত্ত কাঁদতে পারছে কই?
আধ ঘন্টার ভিতরে চলে এল কমলেশ, শাওন, সঞ্জয়রা৷
ডাঃ সোম পরিষ্কার করে জানিয়ে দিলেন, ব্রেন ডেথ৷
এই অবস্থা থেকে কি রোগী কখনো সারভাইভ করতে পারে?
কিঞ্জলের কথায় ডাঃ সোম মাথা নাড়েন, যেখানে মস্তিষ্কের মৃতু্য ঘটেছে সেখানে সারভাইভের প্রশ্নই আসে না৷
তাহলে আপনারা ডেথ ডিক্লেয়ার করছেন না কেন?
ওই যে বলে যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আঁশ৷ তাই হার্ট না-থামা পর্যন্ত ডেথ ডিক্লেয়ার করা আইন বিরুদ্ধ৷ তবে যদি ওর বাড়ির লোক চান—
ওর বাড়ির লোক বলতে সায়ক ছাড়া এই মুহূর্তে আর কেউই নেই৷
অদ্রিজার বাবা তো আগেই মারা গেছেন৷ গত বছর মাও চলে গেলেন৷ অদ্রিজা বলত, আমি খুব অভাগা জানিস৷
সায়ক ওকে বুকে টেনে বলত, আমি তো আছি৷ তোর সব কষ্ট আমি নিজের কাছে রেখে দিলাম৷
ডাঃ সোম কথাটা শেষ করতে না করতেই সায়ক হঠাৎ বলে ওঠে, অদ্রিজা বডিটা দান করার কথা বলেছিল—
কমলেশ আর শাওনও জানত৷ ওদেরকে অদ্রিজাই বলেছিল, সায়কের সঙ্গে যখন ব্রেক আপ হয়ে গেল তখনই ও বডি ডোনেট করবে বলেছিল৷ রীতিমতো রেজিস্ট্রেশন করে এসএসকেএম হাসপাতালেই ওর বডি ডোনেট করবে জানিয়েছিল৷ ভলান্টারি বডি ডোনেশন৷ মরে যাওয়ার পরে যাতে ওর শরীর নিয়ে মেডিকেল স্টুডেন্টরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারে৷
ডাঃ সোম পাশ থেকে বললেন, সত্যি?
ডাঃ সোমের দু’চোখে ঝিলিক খেলে গেল৷
সায়নের বুকের ভিতরে তখন পাড় ভাঙার শব্দ৷
একজনের মৃতু্য যে অন্য জনের ভিতরে এমন আশার আলো জ্বালতে পারে!


ডাঃ সোম বললেন, ব্যাপারটা যদি সত্যি এমন হয় তাহলে আপনাদের রোগীর কিছু কিছু ভাইটাল অর্গ্যান যা এই মুহূর্তে সচল আছে সেগুলো কোনো মৃতু্যপথযাত্রীর প্রাণ ফেরাতে পারে৷ হার্ট, লাং, লিভার, কিডনি, এমনকি বিভিন্ন টেন্ডন, কার্টিলেজ, কর্নিয়া টিসু্য, স্কিন, কার্টিলেজ এমনকি ইনটেস্টাইন, প্যাংক্রিয়াস, হার্টের ভাল্ভ, বোন ইত্যাদি কাজে লাগতে পারে৷ শরীরে প্রতিটা অর্গানই গুরুত্বপূর্ণ৷ কত মুমূর্ষু রোগীর প্রাণ ফেরাতে পারে৷ আশাহত মানুষদেরকে আশার আলো দেখাতে পারে৷

সায়ক একটা ফর্ম ফিল আপ করে নিচে সই করে দিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে আসে৷
একটা ধ্বস্ত মন নিয়ে শাওনের বাইকে উঠে পড়ল৷ বলল, আমাকে একবার প্রিন্সেপ ঘাটে নিয়ে যেতে পারিস?
জেটিতে এসে দাঁড়াল সায়ক আর শাওন৷ আকাশে মেঘের আনাগোনা৷

তীব্র দাবদাহের পরে এক পশলা বৃষ্টি নামল৷ অথচ সকালের দিকে আগুন বাতাস চোখে মুখে যেন ঝাপটা দিচ্ছিল৷ মুখ মাথা কাপড়ে ঢাকা দিয়েও শেষ রক্ষা করা যাচ্ছিল না৷ অদ্রিজা রাস্তায় নেমে প্রচণ্ড একটা অস্বস্তি বোধ করতে লাগল৷ কেমন যেন দমচাপা একটা কষ্ট৷ অক্সিজেনের অভাব বোধ করছে৷ ব্যাগ থেকে বের করে কয়েক ঢোক জল খেল৷ চাপ-চাপ কষ্ট হচ্ছে বুকে৷ ঘামে ভিজে গিয়ে শরীরে লেপটে আছে পরিধেয়৷

ও একটা ছায়া খুঁজছিল৷ নিদেনপক্ষে একটা গাছ৷ একটু অক্সিজেনের জন্যে প্রাণ হাহাকার করছিল৷ কিন্ত্ত মরুপ্রায় এই শহরটাতে তেমন কোনো গাছ নজরে পড়ল না৷ ও বাসের জন্যে ওয়েট করছিল৷ কিন্ত্ত আর যে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না৷ ওর পা দুটো টলছিল মাঠটা চক্কর দিল৷ ও দু’বার পাক খেল এবং মাথা ঘুরে পড়ে গেল রাস্তার উপরেই৷

ঠিক সেই মুহূর্তে একটা গতিময় গাড়ি ওকে ধাক্কা দিয়ে বেরিয়ে গেল৷
একজন পথচারী তখন সেই পথ ধরে যাচ্ছিলেন৷ লোকটার চোখের সামনে এতবড় দুর্ঘটনা ঘটে গেল দেখে তিনি ছুটে গেলেন৷ দেখলেন মাথা কপাল ফেটে রক্তে ভেসে যাচ্ছে পোশাক৷ পিপাসু রাজপথ শুষে নিচ্ছে তরল রক্ত৷
লোকটা তখন অন্য পথচারীদের খুঁজছিলেন৷ ‘হেল্প হেল্প’, বলে চিৎকার করতে লাগলেন৷ কিছুটা দূরে দু’জন শাদা পোশাকের ট্র্যাফিক সার্জেন্ট ছিলেন৷ ছুটে গেলেন তাদের কাছে৷
এই ঘটনা শুনেই দ্রুত ছুটে এলেন ট্র্যাফিক সার্জেন্ট৷ তৎক্ষণাৎ অদ্রিজাকে পুলিশ ভ্যানে চাপিয়ে এসএসকেএম হাপাতালে নিয়ে গেল৷

দেখতে দেখতে বেশ কয়েক মাস কেটে গেছে৷
সেদিন সময় বের করে সায়ক প্রিন্সেপ ঘাটে চলে আসে৷ আজ ওদের প্রথম বিবাহবার্ষিকী৷ মোবাইলে রিমাইন্ডার সেট করা ছিল৷ অদ্রিজাই করেছিল৷ আজ বুকের ভিতরে ঝড় বয়ে চলেছে সায়কের৷ অদ্রিজার স্মৃতি ভোলার নয়৷ একাকিত্ব কী ভীষণ দুঃসহ৷ পাগল মন ঘর থেকে টেনে আজ বের করে নিয়ে এল৷ এই জায়গাটা ওদের দু’জনেরই খুব প্রিয়৷


ওরা যে জায়গায় এসে সূর্যাস্ত দেখত আজ সেখানে এল সায়ক৷ বেলা পড়ে এসেছে৷ পশ্চিম আকাশে তখন বৈরাগ্যের রং৷ স্মৃতির ঝড় পাতাগুলোকে ওলট-পালট করে দিচ্ছে ৷ মনে পড়ে সেই হূদয় দেওয়ার স্মৃতি৷ এই সময়টুকুর ভিতরে কত কী যে ঘটে গেল৷

সায়ক ভাবছিল অদ্রিজার কথা৷ সেদিন মেডিকেল টিম এসে তাদের কাজ শুরু করে দিল৷
গ্রিন করিডর ধরে বেরিয়ে গেল অদ্রিজার শরীরের বিভিন্ন অর্গান নিয়ে৷
ডাঃ সোম এই কাজে তাকে সাহায্য করেছিলেন৷ আসলে অদ্রিজার এটাই ইচ্ছা ছিল৷ বডি ডোনেটের ফর্ম ফিল আপ করেও শেষ মুহূর্তে সেটা জমা দিতে পারেনি৷
মৃতু্যর পরে তার শেষ ইচ্ছেটা পূর্ণ করল সায়ক৷
সায়ক জেনেছে অদ্রিজার শরীরের যে-যে অর্গ্যান নিয়ে যাঁরা বেঁচে আছেন তাঁরা প্রায় সকলেই রীতিমতো সুস্থ৷

হঠাৎই একটা শব্দে চমক ভাঙে সায়কের৷ সামনেই একটা জাহাজ হুইসেল বাজাতে বাজাতে জেটি ছেড়ে বেরিয়ে গেল৷ বিষণ্ণ ঢেউগুলো ভেঙে-চুরে জলের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে৷ দূরে একটা নৌকায় দাঁড় বাইতে বাইতে মাঝি আপন মনে গাইছে— মাঝি বাইয়া যাও রে…৷ সায়ক ভাবছিল অদ্রিজা আজ ওর একার নয়, কত জনের হূদয়-মন্দিরে তাজ হয়ে আছে অদ্রিজা৷
ঈশ্বরীই বটে৷ নইলে নিজের দেহাংশ দিয়ে এতগুলো মানুষের প্রাণ ফিরিয়ে দিতে পারত না৷