ফ্ল্যাট নম্বর ৭০৬

সুদীপ সরকার

বেশ কিছুদিনের প্রতীক্ষা শেষে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নেমেছে সকাল থেকে। তীব্র গরমের দহন থেকে মুক্তি পেতে চাতকের মত আকাশের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে ছিল কলকাতা। সারা রাজ্যে এদিক সেদিক বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু ঝড় বৃষ্টি হলেও কলকাতায় এবারে পুরো গ্রীষ্ম জুড়েই দারুণ অগ্নিবাণ ছুটিয়েছে প্রকৃতি। হাওয়া অফিসের কর্তাদের বিশ্লেষণ বলছে ‘বর্ষা স্বাগত দ্বারে’। এই বৃষ্টি বর্ষার না প্রাক-বর্ষার তা নিয়ে আদৌ চিন্তার অবকাশ নেই শুভব্রতর। দক্ষিণ খোলা ব্যালকনিতে বেতের চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে বৃষ্টি দেখছে শুভব্রত। নাইন্থ ফ্লোরের ফ্ল্যাট থেকে বৃষ্টি দেখার মজাটা দারুণ উপভোগ করে ও। সকালের দিকে রাগিণী এফ-এম চালিয়ে রাখে। ‘মূর্ছনায় একটা পজিটিভ ভাইব আসে’— রাগিণীর কথায় একমত শুভব্রতও। সত্তর আশির দশকের কিশোরের গানগুলো শুভব্রতকে নস্টালজিক করে তোলে, সব গানই কী অনায়াস দক্ষতায় গাইতেন মানুষটা। একেকটা গান এক এক সময়ের স্মৃতি উস্কে দিয়ে যায় মনের আনাচে কানাচে, শুভব্রত ফিরে যায় কৈশোরের দিনগুলিতে, মেঘে ঢাকা কালো আকাশের বুক চিরে ঝিলিক দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের মত ক্ষণিকের জন্যে উঁকি দিয়ে যায় মাঝ বয়েসের ফেলে আসা রঙিন মুহূর্তেরা। বৃষ্টির দাপুটে ঝাপটায় আবাসনের গাছগুলো প্রাণ ফিরে পেয়েছে, ধুলোর আস্তরণ ধুয়ে মুছে যাওয়ায় সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা দেবদারু গাছগুলির প্রতিটা পাতায় যেন নতুন করে সবুজের ছোঁয়া লেগেছে। শুভব্রতর অন্যমনস্ক দৃষ্টি বৃষ্টিস্নাত গাছের সারির সীমানা ছাড়িয়ে দূরে কোথাও পৌঁছে গিয়েছিল!

‘চট করে এসো না একবার, দেখে যাও’, রাগিণী যে কখন এসে পাশে দাঁড়িয়েছে খেয়াল করেনি শুভব্রত। রাগিণীর দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল ও, রাগিণীর মুখের দুপাশে অবিন্যস্ত কিছু ঝুরো চুল খামখেয়ালের বশে নেমে এসেছে, রাতের পোশাক পাল্টে একটা হালকা নীল রঙের শাড়ি পড়েছে রাগিণী। মেয়েদের রূপের রহস্য বুঝে উঠতে পারে না শুভব্রত। প্রতিটা দিন, সপ্তাহ মাস দেখে দেখে অভ্যস্ত হয়ে পড়া চোখেও যে কখন কীভাবে সে মোহময়ী হয়ে ওঠে সেটা বোধহয় কবি মনই বোঝে। শুভব্রতকে চেয়ার ছেড়ে উঠতে না দেখে রাগিণী আবার বলল, ‘কী হলো? এসো না, দেখে যাও।’ শুভব্রত জানে রাগিণী কী দেখানোর জন্য এত উদগ্রীব। গত দিনকয়েক ধরেই এই চলছে। আট নম্বর টাওয়ারের সেভেন্থ ফ্লোরে নতুন আবাসিক এসেছে। ঠিক এসেছেও বলা যায় না, জিনিসপত্র ঢুকছে দিন কয়েক হলো। ভদ্রলোক নাকি বিরাট বিজনেস ম্যান, সদ্য দিল্লী না মুম্বাই থেকে কলকাতায় এসেছেন। ওদের উত্তর দিকের বেডরুমের জানলায় উঁকি দিলেই পাশের টাওয়ারের সেভেন্থ ফ্লোরের ৭০৬ নম্বর ফ্ল্যাটটা স্পষ্ট দেখা যায়। শুভব্রত এই আবাসনে আসার পর থেকে ওই ফ্ল্যাটটা বন্ধই ছিল। অভিজাত আবাসনের বেশ কিছু ফ্ল্যাট খালি আছে, সম্ভবত যাঁরা নিয়েছেন তাঁরা এখনো এসে ওঠেননি। ৭০৬ নম্বর ফ্ল্যাটের নতুন আবাসিককে নিয়ে রাগিণী আজকাল একটু বেশিই উৎসাহী হয়ে পড়েছে। আট নম্বর টাওয়ারের ৭০৩ বা ৭০৪ এর বাসিন্দা মিঃ দত্তর ছেলে রাকার সঙ্গেই ক্লাস সেভেনে পড়ে, সেই সূত্রে মিসেস দত্তর সঙ্গে রাগিণীর আলাপ। পড়া আদান প্রদানের মধ্যে দিয়ে সেই আলাপ দৃঢ় হতে বেশি সময় লাগেনি। আজকাল আবার সেকশানের বাচ্চাদের নিয়েও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে নলেজ শেয়ারিং চলে; আর তার আড়ালে স্বাভাবিকভাবেই চলে কিছু কূট-কচালি। মিসের ব্যবহার নিয়ে কারুর অভিযোগ কিংবা কোনও বাচ্চার জ্বর সত্ত্বেও স্কুলে পাঠিয়েছে তার নির্বোধ বাবা-মা, এই নিয়ে অবিরাম মেসেজ চালাচালি হয় সেখানে। রাগিণী আর মিসেস দত্ত ছাড়াও আরও কিছু মহিলা মিলে নাকি একটা কোর গ্রুপ খুলেছে, সেখানেও নিরন্তর চলে মেসেজ চালাচালি। শুভব্রত জানে, মিসেস দত্ত নিয়মিত ৭০৬ নম্বর ফ্ল্যাটের বাসিন্দার আপডেট দিচ্ছেন রাগিণীকে। শুভব্রত আন্দাজ করতে পারে, জানলায় উঁকি দিয়ে অন্য ফ্ল্যাটে কী মালপত্র ঢুকছে, কারা আসছে সেই কৌতূহলের মধ্যে কোথাও একটা রোমাঞ্চকর ব্যাপার আছে যা উপভোগ করছে রাগিণী। শুভব্রতর মনে পড়ে অনেকদিন আগে দেখা হিচককের রেয়ার উইন্ডো সিনেমাটার কথা, পড়শির ঘরে উঁকি দেওয়া হুইল চেয়ারে বন্দি এক ক্যামেরাম্যানের গল্প, প্রেক্ষাপট যদিও সম্পূর্ণ ভিন্ন। রাগিণীর ডাকাডাকিতে শুভব্রত উষ্মা প্রকাশ করল, ‘দেখ বাপু, কার ফ্ল্যাটে কে আসছে এই নিয়ে আমার কোন উৎসাহ নেই, তোমার ইচ্ছে করছে তুমি দেখ। আমাকে আমার মত থাকতে দাও।’ একটু গুনগুনিয়ে বলল শুভব্রত। রাগিণী উদ্বেলিত ভঙ্গিতে বলল, ‘আজকে দেখলাম ভদ্রলোক এলেন, দামি গাড়ি দেখেই সামাজিক অবস্থান বোঝা যায়। বয়েস বেশি নয় জানো, বেশ হ্যান্ডসাম!’ শুভব্রত একটু খোঁচা দেওয়ার ঢঙে প্রত্যুত্তর করল, ‘সে তো আমিও কম হ্যান্ডসাম নই মাই লর্ড, গাড়ি আমারও আছে, আমিও একজন এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার। তবে হ্যাঁ, কাল অফিস যাওয়ার সময় দেখলাম সাত নম্বর টাওয়ারের সামনে তোমার ওই হ্যান্ডসাম ভদ্রলোকের স্ত্রী দাঁড়িয়ে আছেন, বেশ গ্ল্যামারাস, সরু স্লিভলেস, মেদহীন স্লিম চেহারা, স্ট্রেটনিং করা চুল ঘাড়ের ওপর নেমে এসেছে, ব্যাপক লাগল, মাইরি বলছি।’ রাগিণী ফুঁসে উঠল, ‘যত বাজে অবজারভেশান, মেয়ে বড় হয়ে গেল অথচ এখনো পরের বউ দেখলে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকার অভ্যেস গেল না। তাছাড়া, অফিস যাওয়ার সময় এত কিছু খেয়াল করলে কখন? আর সেই মহিলাই যে ৭০৬ নম্বরের লোক জানলে কীকরে? খালি বাজে কথা!’


‘আরে অফিস বেরোনোর সময় পর পর দু-তিনটে গাড়ি গেটের কাছে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, হাফ মিনিট দাঁড়াতে হলো, তখন চোখে পড়ল।’ ফিক ফিক করে হাসল শুভব্রত, ‘একটা ছোট হাতি থেকে কিছু মাল আনলোড চলছিল, উনি ওঁর স্কোডা থেকে নেমে তদারকি করছিলেন, বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কোনও কারণ ছিল না।’

‘সেটাই তো বলছি, কোথায় স্কোডা আর কোথায় তোমার অল্টো; তাও আবার মাসে মাসে ইএমআই। ইঞ্জিনিয়ার হলেও চাকরি তো সরকারি, গ্রুপে হাজব্যান্ডের পে-প্যাকেজ নিয়ে কথা উঠলে কিছু বলতে লজ্জা করে।’ ফোঁস করে রাগিণী, ‘আর আমার বাবাও তেমন, ইঞ্জিনিয়ার শুনেই একদম আহ্লাদে আটখানা হয়ে ঝুলিয়ে দিল মেয়েকে। তখন যদি জানতাম…।’

‘প্লিজ টক সেন্স, রাগিণী’, গম্ভীর শোনায় শুভব্রতকে, ‘আমি যাদবপুরের বি-ই, এম-টেক ফ্রম আইআইটি, খড়গপুর। সরকারি চাকরিতেও আমি যথেষ্ট উচ্চপদে কাজ করি। কোনও ঝুনঝুনওয়ালা আগরওয়ালাকে দেখে নিজের অবস্থান ঠিক করতে চাইলে সেটা মূর্খের কাজ বলেই মনে হয়।’ কথায় কথায় কাটাকাটি এড়াতে রাগিণী আর কথা বাড়াল না, রাকার নাচের স্কুলের সময় হয়ে আসছে, মেয়েকে ঘুম থেকে তুলতে বেডরুমের দিকে চটপট পা বাড়াল।


কাল থেকে এক নতুন সমস্যা শুরু হয়েছে, রমেনের মা আসা বন্ধ করে দিয়েছে হঠাৎ। ‘বলা নেই, কওয়া নেই, এভাবে হঠাৎ কেউ কাজ ছাড়ে? তোমার সঙ্গে আমার ঝগড়া-ঝাঁটিও হয়নি, তাহলে কী হলো তোমার?’ রাগিণী ফোনে ধরল রমেনের মাকে। তানানানা করে শেষ পর্যন্ত আসল রহস্য উদ্ঘাটন হলো, তিনি ৭০৬-এর নতুন আবাসিকের ঘরে কাজ নিয়েছেন তিন গুণ রেটে। কাজের লোক না এলে যা হয়, রাগিণীর মোটামুটি মাথা খারাপ হওয়ার মত অবস্থা। ঘর গেরস্থালির কাজে শুভব্রত একেবারে আনকোরা, অপটু হাতে কিছু করলেও তাতে রাগিণীর সুবিধের থেকে অসুবিধেই বেশি হয়। শুভব্রত শুধু মানসিক শক্তি বৃদ্ধির কৌশল নেয় এইরকম পরিস্থিতিতে, ‘এরা এমনই হয়, সব নিমকহারাম, তুই একবার বউদির কথা ভাবলি না? এত দিন এখানে কাজ করছিস, কোনও কৃতজ্ঞতা নেই! দরকার পড়লে বেশি টাকা দিয়ে লোক রাখতে হবে, ওকে একদম ঢুকতে দেবে না।’

‘ফালতু কথা ছাড়ো, ও তো বেশি টাকার টানেই গেছে, আবার এদিকে আসবে কেন?’ রাগিণীর মেজাজ দেখে আর কথা বাড়ায়নি শুভব্রত। ‘৭০৬ এর লোকটা একেবারে জিনা হারাম করে দেবে দেখছি’, মনে মনে গজরায় বেচারি। সন্ধের দিকে আবাসন কমিটির মিটিঙে এসেও সেই ৭০৬-কে নিয়ে আলোচনা শুনে মাথা গরম হয়ে গেল শুভব্রতর। আবাসন কমিটির সেক্রেটারি রাকেশ বিশ্বাস প্রস্তাব করলেন, ৭০৬-এর মিঃ খৈতানকে অ্যাডভাইসারি কমিটিতে অ্যাডপ্ট করা হোক। শুভব্রত মৃদু প্রতিবাদ করল, ‘জাস্ট এক মাস হয়েছে একজন এসেছেন, তাঁকে এত গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে নেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। সবাই চাইলে অবশ্য আলাদা কথা।’ শুভব্রতকে সমর্থন করলেন অনেকেই কিন্তু রাকেশ বিশ্বাস খোলসা করতে এই প্রস্তাবে আর আপত্তি করার কেউ থাকল না। জানা গেল, ৭০৬-এর মিঃ খৈতান হাউসিংয়ের সার্বিক উন্নতির জন্য এরই মধ্যে নাকি প্রায় এক লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। শুভব্রতর বুঝতে বাকি থাকল না, এই ভদ্রলোক টাকার জোরে সব জায়গায় অবাধে ঢুকে পড়বেন। সে না হয় যা ইচ্ছে করুক, কিন্তু সব ছেড়ে রমেনের মাকেই নিতে হলো? ঘরের অশান্তির কথা মাথায় আসতেই বিরক্তিতে ভরে উঠল মন, কিন্তু মুখে কিছু বলার যো নেই, গণতন্ত্রের এই মহিমা, যার যা খুশি সেটাই সে করতে পারে। ঘরে ফিরে অবশ্য স্বস্তির শ্বাস ফেলার মত কথাটা শোনাল রাগিণী, ‘রমেনের মায়ের পরিবর্ত পাওয়া গেছে, যদিও কিছু বাড়তি দিতে হবে। কাল থেকে কাজে লাগবে বলেছে।’ নিদারুণ গরমের দুপুরে আকাশ কালো করে ঝড় উঠলে যেমন আনন্দে মনটা ভরে ওঠে, তেমনই একটা ফুরফুরে মেজাজে মনটা হালকা হয়ে গেল। একটা গানের কলি গুনগুন করতে করতে শুভব্রত বলল, ‘সব সমস্যারই সমাধান আছে বুঝলে, জীবন মানুষকে সেই শিক্ষাই দেয়।’ রাগিণীর কানে কথা গুলো ঠিক পৌঁছল কিনা বুঝতে পারল না শুভব্রত।


ছুটির দিনে দেরি করেই বিছানা ছাড়ে শুভব্রত, রাগিণীর ডাকাডাকিতে ধড়মড়িয়ে উঠে বসল। ঘুমের ঘোর কাটতে সময় লাগল না ওর কথা শুনে, ‘শীগগির এসো, হাউসিংয়ে পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। বিরাট কিছু হয়েছে নিশ্চয়ই।’ শুভব্রত চটপট নেমে পড়ল বিছানা থেকে, উত্তরের বেডরুম থেকে আবাসনের প্রায় সবদিক দেখা যায়, জানলায় চোখ রাখতেই দেখা গেল অন্তত জনা দশেক পুলিশের লোক আট নম্বর টাওয়ারের সামনে জড়ো হয়েছে। কী হয়েছে জানার জন্য হাউসিং কমিটির সেক্রেটারি রাকেশ বিশ্বাসকে ফোনে ধরার চেষ্টা করল শুভব্রত। বার কয়েক চেষ্টার পর তাকে পাওয়া গেল ফোনে; ‘আরে কী কাণ্ড বলুন তো, এইসব লোক আমাদের এখানে উঠেছিল ভেবেই তো শিউরে উঠছি। পুলিশ তো আমাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবে শুনলাম।’ রাকেশ বিশ্বাস হাঁপিয়ে উঠল কথা শেষ করতে করতে। ওর কথায় কিছু বুঝতে পারল না শুভব্রত, ঢোঁক গিলে জিজ্ঞেস করল, ‘কিন্তু পুলিশ কেন? অভিযোগটা কার বিরুদ্ধে?’ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল রাকেশ বিশ্বাস, ‘সবটা তো ভাই আমিও জানি না, যেটুকু শুনলাম, ওই খৈতান আর ওর বউ নাকি বিহার-ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন এলাকায় ফ্রড করে বহু মানুষের থেকে কোটি কোটি টাকা তুলে এখানে গা ঢাকা দিয়েছিল। ওই চিট ফান্ড টাইপ কিছু হবে আর কি। পুলিশ ঢোকার আগেই পাখি উড়েও গেছে। পুলিশ আপাতত ৭০৬ নম্বর ফ্ল্যাট সিল করবে, এখন সার্চিং চলছে। কী সমস্যায় পড়লাম বলুন তো! আপনার তো ওপর মহলে অনেক যোগাযোগ, দেখবেন দাদা, যদি সমস্যায় পড়ি, হেল্প করবেন প্লিজ। ‘আরও কিছু কথার পর ফোন ছাড়ল রাকেশ বিশ্বাস। জানলা থেকে সরে এলো শুভব্রত, রাগিণীর হাতটা ধরে কাছে টানল ওকে, শান্ত গলায় বলল, ‘তোমার স্পাই গিরি তাহলে শেষ, কী বলো? কিন্তু হ্যান্ডসাম লোকটা কোথায় যে উধাও হয়ে গেল!’ রাগিণী কোনও উত্তর দিল না, ঠোঁটের কোণে আলতো হাসি নিয়ে তাকিয়ে রইল শুভব্রতর দিকে। রাগিণীর হাতের উষ্ণতা অনুভব করতে করতে শুভব্রত বলল, ‘দু-দিন বৃষ্টির পর সব মেঘ কেটে গেছে, কী ঝলমলে রোদ উঠেছে দেখো।’