তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর এবার আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে ফেরার আহ্বান জানালেন প্রাক্তন আমলা জহর সরকার। মঙ্গলবার প্রতিবাদীদের মিছিলে হাঁটার পর, নিজের পদত্যাগের প্রসঙ্গে টুইট করে তিনি চিকিৎসকদের প্রতি এই অনুরোধ জানান। তিনি লিখেছেন, ‘মানুষের কষ্ট বাড়িয়ে লাভ নেই। কর্মবিরতি অব্যাহত রাখলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, আরজি কর হাসপাতালের পরিস্থিতি এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত দাবির জন্য তিনি আন্দোলনকারীদের পাশে রয়েছেন। নিজের টুইটে জহর বলেন, ‘আপনাদের আন্দোলনের প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে, এবং সেই কারণেই আমি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। কিন্তু দয়া করে নিজেদের কাজ থেকে বিরত থাকবেন না, কারণ এর জন্য সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।’
এদিন এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘জুনিয়র ডাক্তারদের বলব, তাঁরা সম্পূর্ণভাবে দ্বিতীয়বারের জন্য যদি কর্মবিরতিতে যায় এটা চিন্তা করে দেখতে হবে। সম্পূর্ণ কর্মবিরতি হলে মানুষের ক্ষতি হবে। প্রতিবাদের অনেক স্বরূপ আছে, অনেক রূপ আছে। প্রতিবাদ বন্ধ করতে বলছি না, আমি বলছি সাধারণ মানুষের ওপর কী প্রভাব পড়তে পারে এবং মানুষের সমর্থন কতখানি থাকতে পারে।’
অন্যদিকে, সেই একই সাংবাদিক বৈঠকে কুণাল সরকারও একই সুরে বলেছেন, ‘আমরা কতটা এই জিনিসটাকে সামাজিক সমস্যা বলে ভাবছি আর কতটা রাজনৈতিক সমস্যা বলে ভাবছি আমাদের সেই দৃষ্টিভঙ্গিটার ওপর দৃষ্টান্ত রাখা দরকার। সময় এসেছে ভাবার, যে সমস্যাটা জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টকে এনে সালিশি সভাটা বসিয়ে আমরা এই সমস্যাটাকে সহজ করছি নাকি আরও এই সমস্যাটাকে বিকৃত করছি।’
প্রসঙ্গত, আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছিলেন, যেখানে তিনি বর্তমান পরিস্থিতির জন্য কিছু নির্দিষ্ট আমলা ও দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের দায়ী করেন। চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘আমি কখনও রাজ্যের মানুষের মধ্যে এমন অসন্তোষ ও সরকারের প্রতি অনাস্থা দেখিনি।’ তিনি আরও জানান, ‘গত একমাস ধরে আমি আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছি এবং ভাবছি, আপনি কেন সেই আগের মমতা ব্যানার্জীর মতো সরাসরি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলছেন না!’
তবে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরে নিজে জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনামঞ্চে উপস্থিত হয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলার পর জহর তার প্রশংসা করেছিলেন। এবার তিনি পুনরায় জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার আহ্বান জানালেন।