আরামবাগে যুবককে ‘পিটিয়ে হত্যা’, ধৃত তৃণমূল নেতা

মদ্যপানের প্রতিবাদ করাই ছিল ‘অপরাধ’। তাই পঞ্চমীর রাতে প্রাণ হারাতে হল এক যুবককে। হুগলির আরামবাগে যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। পঞ্চমীর রাতে আরামবাগ পোস্ট অফিস সংলগ্ন এলাকায় তুলকালাম। ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে আরামবাগ মহকুমা পুলিশ। পুলিশের জালে আরও ১। মৃত যুবকের নাম দেবাশিস আশ (৩২)। বাড়ি শ্রীনিকেতন পল্লিতে।

পুলিশ সূত্রে খবর, আরামবাগ পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা হেমন্ত পালের সঙ্গে দেবাশিসের ভাগ্নে সায়ন চক্রবর্তীর বচসা শুরু হয়। হেমন্ত পালের বিরুদ্ধে মদ খেয়ে গালিগালাজ করার অভিযোগ ওঠে। তারই প্রতিবাদ করেছিলেন সায়ন। এর পরই দু’পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। বচসা হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছলে হেমন্ত এবং তাঁর দুই সঙ্গী অচিন্ত্য এবং স্বর্ণদীপ প্রতিহারের বিরুদ্ধে সায়নকে মারধরের অভিযোগ ওঠে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন সায়নের মামা দেবাশিস। কেন ভাগ্নেকে মারধর করা হল, সেই প্রশ্নই তুলেছিলেন দেবাশিস আশ। তাতেই দেবাশিসের উপর চড়াও হন হেমন্ত এবং তাঁর সঙ্গীরা। লোহার রড দিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয় দেবাশিসকে। তিনি লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। সেই সুযোগে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেন হেমন্ত এবং তাঁর সঙ্গীরা।
তড়িঘড়ি দেবাশিসকে উদ্ধার করে আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।


ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। দেবাশিসের পরিবার এবং স্থানীয় বাসিন্দারা দোষীর কঠোর শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছন আরামবাগ থানার আইসি রাকেশ সিংহ। এ বিষয়ে আরামবাগ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক (এসডিপিও) সুপ্রভাত চক্রবর্তী জানান, ইতিমধ্যেই তৃণমূল নেতা হেমন্ত এবং তাঁর এক সঙ্গীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে খবর, এক সময়ে হেমন্তের ঘনিষ্ঠই ছিলেন সায়ন। কিন্তু বর্তমানে তাঁদের মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই। দূরত্ব বাড়ায় দু’পক্ষের অশান্তি? নাকি দেবাশিসের সঙ্গে ব্যক্তিগত কোনও শত্রুতা ছিল হেমন্তের? পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এ বিষয়ে আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি রামেন্দু সিংহ রায় বলেন, মদ খেয়ে নিজেদের মধ্যে অশান্তি করার ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে। ধৃতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে দোষীর কড়া শাস্তির দাবিতে সুর চড়িয়েছেন বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষও।