উপনির্বাচনের দিনেই ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়া। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল এক তৃণমূল কর্মীর। দুষ্কৃতীদের এলোপাথাড়ি গুলির জেরে মৃত ওই কর্মীর নাম অশোক সাউ। এই ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আক্রান্ত ওই ব্যক্তি একসময়ে ভাটপাড়া পৌরসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের ১২ নং ওয়ার্ডের সভাপতি ছিলেন।
জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে জগদ্দল থানার কাছে একটি চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিলেন তৃণমূল কর্মী অশোক সাউ। সেই সময় অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁর ওপর হামলা করে। আচমকা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আততায়ীরা গুলির পর এলাকা ফাঁকা করতে বোমা ছোঁড়ে। এরপর পালিয়ে যায়।
এদিকে তৃণমূল নেতাকে গুলির ঘটনা জানতে পেরে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। খবর পেয়ে ছুটে আসে জগদ্দল থানার পুলিশ। গুলিবিদ্ধ অশোকবাবুকে দ্রুত ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই এলাকায় পুলিশের একটি বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের কাছে এই ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যদিও এই খুনের ঘটনা যথেষ্ট রহস্যজনক। বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার আলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, যে জায়গায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে ২০২৩ সালেও অশোক সাউকে আক্রমণ করেছিল দুষ্কৃতীরা। রাজোরিয়া বলেন,’আমরা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি। ওই এলাকায় যেখানে যেখানে সিসিটিভি বসানো আছে, সেখানকার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা আশা করছি, খুব দ্রুত আততায়ীদের নাগাল পাওয়া যাবে।’
এদিকে এই ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। কী কারণে তাঁকে হত্যা করেছে, তার কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। ঘটনার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক কারণ জড়িত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পুরনো শত্রুতার জেরেই অশোকবাবুকে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা।
উল্লেখ্য, রাজ্যের উপনির্বাচনে ছয়টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে প্রথম হতাহতের খবর পাওয়া গিয়েছে ভাটপাড়া কেন্দ্রে। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, দুপুর তিনটে পর্যন্ত রাজ্যে ৬০ শতাংশ ভোট পড়েছে। মুখ্য নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে এপর্যন্ত মোট ৪১টি অভিযোগ নথিবন্ধ হয়েছে। যার মধ্যে ১৬টি অভিযোগ করেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। তিনটে পর্যন্ত তালডাংরায় ভোট পড়েছে ৬৫ শতাংশ, সিতাইয়ে ৫৮ শতাংশ। এছাড়া মাদারিহাট, নৈহাটি, হাড়োয়া এবং মেদিনীপুরে যথাক্রমে ৫৭.৯৮, ৫২.৪, ৬৩.১১ ও ৬১.৫৪ শতাংশ করে ভোট পড়েছে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে।