স্লোগানে এবার ‘বদলে’র ডাক দিল নির্যাতিতার  পরিবার

স্লোগানে এবার ‘বদলে’র ডাক দিল নির্যাতিতার  পরিবার। ‘উই ওয়ান্ট ‘জাস্টিস পরিবর্তিত হল ‘উই ডিমান্ড জাস্টিসে’।  রবিবার এন আর এস হাসপাতাল থেকে ধর্মতলার উদ্দেশ্যে একটি মিছিল করেন চিকিৎসকেরা। সেই মিছিলে পা মিলিয়ে ছিলেন নির্যাতিতার মা-বাবা সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। সেই মিছিল থেকে উঠেছিল দ্রুত বিচারের দাবি। আগে মৃতের পরিবারের  স্লোগান ছিল ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ ( আমরা বিচার চাই), কিন্তু এই মিছিলে সেই শ্লোগান পরিবর্তিত হয়ে নির্যাতিতার কাকিমা বললেন, ‘  উই ডিমান্ড জাস্টিস’ (  বিচার আমাদের দাবি)। আজ সোমবার  সুপ্রিম কোর্টে আরজি করের ঘটনার শুনানি রয়েছে।  এবং আজকেই সেই ‘নারকীয়’ ঘটনার একমাস পূর্তি। তাই রবিবার চিকিৎসকদের ডাকা সেই মিছিল থেকে  নির্যাতিতার পরিবারের  গলায় ‘উই ডিমান্ড জাস্টিস’। তাঁদের সঙ্গে গলা মেলালেন চিকিৎসকেরাও। বললেন, ‘একটাই দাবি আমাদের। বিচার চাই। এবার সুপ্রিম কোর্টের পরীক্ষা। আমরা আশাহত হয়ে আছি, আমাদের আশা পূরণ করতে পারে শীর্ষ আদালতই।’

এই মিছিলে দাঁড়িয়ে ধর্মতলা থেকে নির্যাতিতার বাবা জানান, সহজে বিচার পাবেন না, তাঁরা সেটা জানেন।কিন্তু সবাই পাশে থাকলে মেয়ের মৃত্যুর বিচার তিনি ছিনিয়ে আনবেন। তাঁর কথায়, ‘ মেয়ের সঙ্গে যে জঘন্য অপরাধ হয়েছে, তার যে সম্মিলিত প্রতিবাদ হচ্ছে, তাতে আমি সাহস পেয়েছি।  সবাইকে বলতে চাই, আমার সঙ্গে থাকুন। যা পরিস্থিতি দেখছি, বিচার সহজে পাব না। বিচার আমাদের ছিনিয়ে নিয়ে আসতে হবে। আশা করি সবাই আমাকে সহযোগিতা করবেন। আপনারাই আমার সাহস।’  মৃতা চিকিৎসকের মা ধন্যবাদ জানান সকল আন্দোলনকারীকে। নির্যাতিতার মায়ের কথায়, ‘ছোট থেকেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছিল।  বলত, ‘আমি ডাক্তার হব মা’।  বড় হয়ে ডাক্তার হয়ে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আরজি করে বলিদান করল আমার মেয়ে। নৃশংস, অত্যাচারিত হয়ে হয়তো মেয়েটা ‘মা-মা’ বলেছে। প্রতিদিন কানে মেয়ের ‘মা’ ডাক শুনি।’ এরপর তিনি অভিযোগ  করেন তদন্ত নিয়ে। নির্যাতিতার মার কথায়, ‘সরকার পুলিশ প্রশাসন প্রথম থেকে আমাদের অসহযোগিতা করেছে। তাঁরা সহযোগিতা করলে আমরা আশার আলো দেখতাম। কিন্তু প্রথম থেকেই প্রমাণ লোপাট করেছে পুলিশ। শুধু একটাই আবেদন, যতদিন আমার মেয়ে বিচার না পায়, আপনারা আন্দোলন জারি রাখুন।’

রবিবার ওই মিছিল থেকেই মৃতার কাকিমা বলেন, ‘ছোট থেকে যে মেয়েটাকে বড় হতে দেখেছি, বাপি-মায়ের সঙ্গে যে কাকিমা ডাক শুনেছি মেয়েটার গলায়, আমাকে কাকিমা বলার মতো আর কেউ নেই।’  কান্না জড়ানো গলায় তিনি আরও জানান,   ‘মৃত্যুর দিন দশ আগেও সারা রাত কত গল্প, কত প্ল্যান করলাম। বাড়িতে দুর্গাপুজো হবে বলে কত কথা হল। তার দশ দিন পরে যে আমাদের ভাগ্যে এমন নিষ্ঠুর দিন অপেক্ষা করছে, কল্পনা করতে পারিনি।’   কথাগুলি বলতে বলতেই  মৃতার কাকিমা বলে ওঠেন, ‘শুধু বলতে চাই ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’  না ‘উই ডিমান্ড জাস্টিস’।  যতদিন না এই ঘটনার সুবিচার আসে, ততদিন আপনারা কেউ রাস্তা ছাড়বেন না।’  তিনি আরও বলেন , ‘আমরা হয়তো প্রতিদিন রাস্তায় নামতে পারি না।


অনেক  প্রতিকূলতা থাকে। বাধা আছে। কিন্তু আপনারা কেউ এই জায়গা ছাড়বেন না।’