• facebook
  • twitter
Monday, 25 November, 2024

পুলিশের অনুমতি মেলেনি, তবে বিকল্প পথেই মহামিছিল পৌঁছল ধর্মতলা

সুবোধ মুখার্জী নামক এক প্রৌঢ় বলেন, 'আমার মেয়েও বেঙ্গালুরুতে নার্সিং পড়ে। এই ঘটনার পর থেকে আমরা খুবই চিন্তিত। মেয়েও ভয় পেয়েছে খুব। আর যেন কোনও অভিভাবকের কোল খালি না হয়, সেটা দেখা আমাদের কর্তব্য'।

পুজোর মরশুমে এই ধরনের নাগরিক মিছিল আগে দেখেছে এ শহর? খুব সহজেই বলা চলে না, দেখেনি। তবে পঞ্চমীর সন্ধেয় সেই ঐতিহাসিক মিছিলেরই সাক্ষী থাকলো শহর কলকাতা।

সোমবার রাতে পুলিশের কাছে চাওয়া হয়েছিল মহামিছিলের অনুমতি। কিন্তু আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের যে নির্ধারিত পথ, তাতে রয়েছে শহরে দুটি বড় পুজো। তাই সাধারণ মানুষ পুজো দেখতে ভিড় জমাবেন এই অজুহাতে শেষ পর্যন্ত জুনিয়র চিকিৎসকদের মহামিছিলে অনুমতি দেয়নি পুলিশ। তবে তাতে আটকানো যায়নি মিছিল। উলটে মিছিল বের হয় শহরের দুই প্রান্ত থেকে। একটি মিছিল মেডিক্যাল কলেজের ছ’নম্বর গেট থেকে শুরু হয়ে পৌঁছায় ধর্মতলার অনশন মঞ্চে। অপরটি এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় ওই একই জায়গায়।

উল্লেখ্য, পুজোর মরশুমে যেখানে মণ্ডপে মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড়, সেখানে মিছিলে ধরা পড়ল অন্য ছবি। জুনিয়র থেকে সিনিয়র চিকিৎসকদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মিছিলে সামিল হলেন মাঝবয়সী তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে অসংখ্য সাধারণ মানুষ। দাবি শুধু একটাই, মৃতা চিকিৎসকের ন্যায় বিচার।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাত থেকে দশ দফা দাবি নিয়ে আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এদিন মঙ্গলবার সেই দাবি নিয়েই মহামিছিল করার কথা ছিল কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলার অবস্থান মঞ্চ পর্যন্ত। কিন্তু একদিকে শহরের প্রাণকেন্দ্র, অন্যদিকে একাধিক বড় পুজো। জোড়া চাপে সেই অনুমতি বাতিল করে কলকাতা পুলিশ। তবে দমানো যায়নি আন্দোলনকারীদের। বিকল্প পথে মিছিল সারলেন তাঁরা। সেই মিছিলে জুনিয়রদের মনোবল বাড়িয়ে তুলতে যোগ দিলেন সিনিয়ররাও।

অন্যদিকে অনশনরত এক জুনিয়র চিকিৎসক সোহম পাল বলেন, ‘আমার দিদিকে হত্যা করা হয়েছে হাসপাতালে। কোনও দিন যে আমরাও সেই নারকীয় ঘটনার শিকার হবো না, কে বলতে পারে? অনেক প্রতিশ্রুতি পেয়েছি, আর না। এবার আমাদের হকের দাবি মানতে হবে সরকারকে। তাতে যদি আরও অনেক পুজো এইভাবে বসে থাকতে হয় তাই ভালো’। অন্যদিকে মিছিলে অংশগ্রহণকারী গোবারার বাসিন্দা সুবোধ মুখার্জী নামক এক প্রৌঢ় বলেন, ‘আমার মেয়েও বেঙ্গালুরুতে নার্সিং পড়ে। এই ঘটনার পর থেকে আমরা খুবই চিন্তিত। মেয়েও ভয় পেয়েছে খুব। আর যেন কোনও অভিভাবকের কোল খালি না হয়, সেটা দেখা আমাদের কর্তব্য’।