সুপ্রিম কোর্টে কড়া প্রশ্নের মুখে পড়ে রাতে মহিলাদের কর্মস্থল সংক্রান্ত ‘বিতর্কিত’ বিজ্ঞপ্তি মুছে ফেলছে রাজ্য সরকার। আগস্ট মাসে মহিলাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা করে একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল রাজ্য। সেই নির্দেশিকার পাঁচ ও ছয় নম্বর অংশতে বলা হয়েছিল, যতদূর সম্ভব মহিলাদের রাতের শিফট থেকে অব্যাহতি দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় এক আইনজীবী এই বিষয়টি নিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এই নির্দেশিকার বিষয়টি শোনার পরই রাজ্যকে তা সংশোধন করার নির্দেশ নেয় সুপ্রিম কোর্ট । প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, কীভাবে রাজ্য এই বিজ্ঞপ্তি জারি করল? ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের ভর্ৎসনার পরই নির্দেশিকার ওই ‘বিতর্কিত’ অংশ মুছে ফেলছে রাজ্য সরকার।
নির্দেশিকার এই অংশটা নিয়ে বিরোধীরাও একাধিক প্রশ্ন তুলেছিল। বিধানসভায় এর বিরোধীতা করে সরব হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন রাজ্য সরকারের জারি করা বিজ্ঞপ্তির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন, ‘এটা কীভাবে হতে পারে? মহিলারা এই ধরনের কোনও ছাড় চান না। তাঁরা চান সমান সুযোগ। মহিলা ডাক্তারেরা সব পরিস্থিতিতে কাজ করতে চান। তাঁদের সব পরিস্থিতিতে কাজ করা উচিত। রাজ্যকে এটি সুনিশ্চিত করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের দায়িত্ব নিরাপত্তা দেওয়া। মহিলারা রাতে কাজ করতে পারবেন না, আপনারা এ কথা বলে দিতে পারেন না। বিমান পরিষেবা, সেনায় অনেক মহিলা রাতে কাজ করেন। ফলে এই বিজ্ঞপ্তি কেন?’
প্রধান বিচারপতির কথা শুনে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল আশ্বাস দেন, বিজ্ঞপ্তির ওই অংশটুকু মুছে ফেলা হবে।
উল্লেখ্য, রাজ্যের তরফে জারি করা বিজ্ঞপ্তি প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন আরজি করের জুনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তার রিয়া বেরা । তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে যে ছেলেরা পড়াশোনা করছেন, তাঁরা সমান পড়াশোনা করে এসেছেন। তা হলে কাজের ক্ষেত্রে কেন আমরা সমান সুযোগ পাব না? আমরা তো খাঁচার পাখি নই।’