রাজারহাটের যুবকের মৃত্যু ঘিরে বাড়ছে রহস্য

১৯ সেপ্টেম্বর, রাজারহাটে ঘটে যায় এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। খবরের শিরোনামে উঠে আসে আবাসনের বহুতল থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন এক যুবক। যুবকের নাম আদিত্য শ্রীবাস্তব। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান আত্মহত্যা করেছেন ওই যুবক। তবে দিন যত গড়াচ্ছে, রহস্য ততই দানা বাঁধছে। মৃত্যুর পিছনে আত্মহত্যা, নাকি খুন? এই নিয়েই শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।

পুলিশের পক্ষ থেকে আগেই যুবককে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ধৃত মুকুন্দ আগরওয়াল এবং সঞ্জয় শ্রীমানি মৃত যুবকের সহকর্মী। তাঁরাই নিহত আদিত্য শ্রীবাস্তবকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আত্মহত্যার পথে ঠেলে দেন, এই অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁদের। যদিও নিহতের বাবা দিলীপ শ্রীবাস্তব দাবি করেন, আত্মহত্যা নয়, তাঁর ছেলেকে সুপরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। তিনি বলেন, তাঁর ছেলেকে বহুতল থেকে ধাক্কা দিয়ে নীচে ফেলে দেওয়া হয়।

কিন্তু কেন?


দিলীপ বাবু জানান, ‘আদিত্য সল্টলেকের এক সংস্থায় বহুবছর যাবৎ হিসাবরক্ষক হিসাবে কর্মরত ছিল। সেখানে তাকে দিয়ে অবৈধ লেনদেন করানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু আদিত্য তাতে রাজি হয়নি। তারপরই বিভিন্নরকমভাবে তার উপর শুরু হয় চাপ সৃষ্টি। যার জেরে চাকরি ছাড়ার ভাবনাও আসে তার। যত দিন যায়, মানসিক অত্যাচারের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। অসুস্থতার কারণে অফিস যেতে না পারায় সেই দিনই আদিত্যর তিন সহকর্মী উপস্থিত হয় বাড়িতে। বন্ধ ঘরের মধ্যে চলে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা। সেসময় মাঝে মধ্যেই চেঁচামেচির শব্দ পাওয়া যায়। আর তারপরই ছেলেকে বহুতল থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়।’ এই অভিযোগ তোলেন নিহতের পিতা।

যদিও পুলিশের দাবি, খুন নয়, আত্মহত্যাই। নিহত আদিত্য নিজেই ঝাঁপ দিয়েছেন বহুতল থেকে। পুলিশের অভিযোগ, আদিত্যকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁরা আবার উল্টে অভিযোগ তুলেছেন আদিত্যের বিরুদ্ধেই। তাঁদের দাবি, আদিত্য তাঁর কর্মরত সংস্থা থেকে দেড় কোটি টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নিয়েছিলেন। পুলিশের দাবি, ‘আত্মহত্যায় আদিত্যকে চাপ সৃষ্টির অভিযোগে ইতিমধ্যেই দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও একজনের খোঁজ চলছে। এমনকি আদিত্য কোনোভাবে অনলাইন জুয়া চক্রে জড়িয়ে পড়েছিলেন কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ এই কথা জানালেন পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক।

বিধাননগর পুলিশের পক্ষ থেকে, রাজারহাটের আবাসনের ওই জায়গাটি ঘিরে রাখা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে করা হবে ফরেন্সিক পরীক্ষাও। তবে কবে আসবেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা? জানতে চান নিহতের পরিবার।