রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে জাল ওষুধ উদ্ধার হওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে। এর জেরে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। মঙ্গলবারই বড়বাজারের বাগরি মার্কেট ও মেহতা বিল্ডিংয়ে অভিযান চালিয়ে নিম্নমানের ওষুধের সন্ধান মিলেছিল। সেই ঘটনার সূত্রে ধরেই শুক্রবার কেষ্টপুরে এক ডিস্ট্রিবিউটরের স্টোরে হানা দেন রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের আধিকারিকরা।
এ দিন রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের ৪ সদস্যের একটি দল কেষ্টপুরের ওই ডিস্ট্রিবিউটরের স্টোরে হানা দিয়েছেন। ওই স্টোরে থাকা ওষুধের কিউ আর কোড ও ব্যাচ নম্বর স্ক্যান করে দেখা হয়েছে। খতিয়ে দেখা হয়েছে সেগুলি জাল কি না। সন্দেহজনক কিছু ওষুধ বাজেয়াপ্তও করা হয়েছে।
সম্প্রতি উল্টোডাঙার একটি বেসরকারি হাসপাতালে হানা দিয়ে অ্যালবুমিন ইনজেকশনের পাঁচটি ভায়াল বাজেয়াপ্ত করেন কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোলের আধিকারিকেরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই ইনজেকশনগুলি বেলেঘাটার এক ডিস্ট্রিবিউটরের কাছ থেকে কিনেছিলেন বলে জানা যায়। বেলেঘাটায় ওই ডিস্ট্রিবিউটরের স্টোরে হানা দিয়ে জানা যায়, তারা মেহতা বিল্ডিংয়ের এক পাইকারি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ওষুধ কেনেন। সেই ব্যবসায়ীর কাছে আবার মুম্বইয়ের এক সংস্থার থেকে ওষুধ আসে। এই ঘটনার তদন্তে মঙ্গলবার বড়বাজারে হানা দিয়েছিলেন আধিকারিকরা। এর সূত্র ধরেই কেষ্টপুরে হানা দিয়েছে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল।
বিভিন্ন এলাকা থেকে নামী ও জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের জাল ওষুধ উদ্ধারের পর তৎপরতা বাড়িয়েছে ডাইরেক্টরেট অফ ড্রাগ কন্ট্রোল (পশ্চিমবঙ্গ)। সম্প্রতি এই বোর্ডের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, ওষুধের শিশি বা স্ট্রিপ সন্দেহজনক বলে মনে হলে তৎক্ষণাৎ অভিযোগ জানাতে পারবেন আমজনতা। এর জন্য ফোন নম্বর ও ইমেল আইডি-ও দেওয়া হয়েছে।
বিগত কয়েক মাসে ব়্যানোজেক্স, টেলমা এইচ সহ ৩০০টির বেশি জীবনদায়ী ওষুধ ল্যাবরেটরিতে গুণমান পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক সংস্থার ওষুধ রয়েছে। এই সব ওষুধের ব্যবহার বন্ধ করতে নির্দেশিকা জারি করেছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। পাশাপাশি ওষুধের দোকান ও ডিস্ট্রিবিউটরদের স্টোরে সারপ্রাইজ ভিজিটের নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। সেই মতো শুরু হয়েছে অভিযান।
পাশাপাশি, কুড়ি শতাংশ অথবা তার থেকেও বেশি ছাড়ে ওষুধ বিক্রি করে তাঁদের প্রত্যেককে চিঠি দিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগ। তারা কীভাবে এত বেশি ছাড় দিচ্ছেন তা জানতে চাওয়া হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে এই সব সংস্থাকে চিঠির জবাব দিতে বলেছে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগ।