প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডির দায়ের করা মামলায় বিচার প্রক্রিয়া চলছে সিটি সেশন কোর্টে বিশেষ এজলাসে। বুধবারও সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল এক ব্যক্তির। ঘটনাচক্রে, তিনি আবার নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত বলে অভিযোগ থাকা এক সংস্থার ডিরেক্টর! দুর্নীতিতে জড়িয়ে থাকায় অভিযুক্ত আরও এক সংস্থার প্রতিনিধিত্বও করছেন ওই ব্যক্তি। সে কারণে এদিন সিটি সেশন কোর্টে ইডির বিশেষ আদালতে তাঁর সাক্ষ্য নেওয়ার কথা থাকলেও তা হল না। ওই সাক্ষী অভিযুক্ত দুই সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করছেন বলে বুধবার আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত। বিচারক ওই সাক্ষীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, তিনি ‘অনন্ত টেক্সটাইল’ এবং ‘ভিউমোর হাইরাইজ’ নামে ইডির চার্জশিটে থাকা দু’টি অভিযুক্ত সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করছেন।
সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির মধ্যে একটি আবার বেলঘরিয়ায় অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের যে আবাসন থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছিল, সেই ঠিকানায় অবস্থিত। এর পরেই ইডির বিশেষ আদালতের বিচারক জানিয়ে দেন, ‘ওই ব্যক্তি অভিযুক্ত সংস্থার প্রতিনিধি হওয়ায় তাঁর সাক্ষ্যগ্রহণ করা যাচ্ছে না’। সোম ও মঙ্গলবারও নিয়োগ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের পর্ব চলেছে। রাজসাক্ষী হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য। পর পর দু’দিন সেই কল্যাণময়ের বিরুদ্ধেই আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন তাঁর মামা, যিনি আবার সম্পর্কে পার্থের বেয়াই হন তাঁর দাবি, ভাগ্নেই অভিযুক্ত সব সংস্থার অ্যাকাউন্টের দেখাশোনা করতেন।
উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে ৫টি সংস্থার হদিস পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তার মধ্যে ২টি সংস্থার প্রতিনিধি হিসাবে বুধবার আদালতে এসেছিলেন ওই ব্যক্তি, যিনি আবার নিয়োগ মামলায় অন্যতম সাক্ষীও। উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ২০২২ সালের ২২ জুলাই দক্ষিণ কলকাতার নাকতলায় পার্থর বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল ইডি। দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। একই সময় পার্থর ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত অর্পিতার টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে হানা দেয় ইডি। তল্লাশিতে দু’জায়গা থেকে প্রচুর নগদ, সোনা, বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করেছিল তারা। ইডি দাবি করে, সোনাদানা, ফ্ল্যাট, বাড়ি মিলিয়ে কম করে ৬০ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এই মামলার বিচার চলছে সিটি সেশন কোর্টে ইডি এজলাসে।