আগ্নেয়াস্ত্রসহ গুলি বিক্রির অভিযোগে উত্তাল উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর। এখানেই শেষ নয়, এ রাজ্যে আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির সঙ্গে ফের উঠে এল বিহার যোগের তথ্য। নির্দিষ্ট সূত্র মারফত খবর পেতেই, অশোকনগরের হিজলপুকুর এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে ছয় দুষ্কৃতীকে রবিবার গভীর রাতে গ্রেপ্তার করেছে অশোকনগর থানার পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে ৮টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতরা হলেন তন্ময় লোধ, সন্দীপ দত্তবনিক, রাজবল্লভ গুহ, তন্ময় দেবনাথ, সৈকত গুহ এবং দীপঙ্কর নন্দী।
সোমবার ধৃতদের বারাসত আদালতে তোলা হলে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রি এবং সরবরাহ চক্রের সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত আছেন কি না এবং এই চক্রের পশ্চাতে দুষ্কৃতীদের মূল উদ্দেশ্যই বা কি ছিল তা খতিয়ে দেখছে অশোকনগর থানার পুলিশ। সূত্রের খবর, বিহারের মুঙ্গের থেকে এই বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র এনে বঙ্গে বিক্রির আগে সেগুলো নিজেদের মধ্যে ভাগবাঁটোয়ারা করার সময় অভিযান চালিয়ে ছয় দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অশোকনগর পুলিশের এই অভিযানকে ‘বড়ো সফলতা’র তকমা দিয়েছেন বারাসত পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্পর্শ নিলাঙ্গী। সোমবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে সম্পূর্ণ ঘটনার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
স্পর্শ নিলাঙ্গী জানিয়েছেন, ‘আমরা গোপন সূত্রে খবর পাই, অশোকনগরের হিজলপুকুর এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্রর বিক্রির ছক করা হয়েছে। সেই মতো অশোকনগর থানা প্রস্তুত ছিল। প্রথমে একটি ব্যাগের মধ্যে পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র সহ তিনজনকে ঘটনাস্থলেই আটক করে পুলিশ, পরে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তিনটে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। মোট ৮টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে।’ এই চক্রের কি কোনও মাস্টারমাইন্ড রয়েছে? এর জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ধৃত ছয় দুষ্কৃতীর বাড়ি অশোকনগরেই। প্রত্যেকেরই ‘ক্রিমিনাল রেকর্ড’ রয়েছে অর্থাৎ এর আগেও আগ্নেয়াস্ত্র সহ মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিল ওরা। জেল মুক্তির পরই ফের আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির ছক কষেছিল ওরা। সুতরাং আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির চক্রে ধৃতরা বহু বছর ধরেই যুক্ত। তবে এই বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি কোথা থেকে সংগ্রহ করেছিল ধৃতরা এবং কোথায় তা বিক্রির ছক করা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের ভাষায়, ‘তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে। আমরা এই আগ্নেয়াস্ত্র সরবারহের গোটা দলটির খোঁজ করবো।’ পুলিশ সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে একটি ওয়ানশাটার এবং সাতটি সেভেনএমএম পিস্তল রয়েছে। পাশাপাশি ১২ রাউন্ড গুলিও উদ্ধার করা হয়েছে। সাতটি সেভেনএমএম পিস্তল বিহারের মুঙ্গের থেকেই আনা হয়েছিল বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।