নেতাজির স্মৃতিধন্য কসবার সরলা পুণ্যাশ্রম দখল করে প্রোমোটিং করার ছক। তদন্তে নামল কলকাতা পুলিশ। শুধু যে প্রোমোটিংয়ের ছক তা নয়, ওই আশ্রমের মহিলা আবাসিকদের মারধর করে ঘর থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগে তদন্তে নেমেছে রাজ্য মহিলা কমিশন। পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের থেকে রিপোর্ট তলব করেছেন কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়।
আশ্রমের আবাসিকদের অভিযোগ, স্বয়ং নেতাজি তাঁর শিক্ষকের জন্য এই আশ্রমের জমি বরাদ্দ করেছিলেন। এখন এই আশ্রমের জমি দখল করে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা প্রোমোটার দিয়ে এই জমিতে বহুতল বানানোর পরিকল্পনা করছে। আরো অভিযোগ, একজন ভুয়ো চ্যাটার্ড আকাউন্টেন্ট মিথ্যে নথিপত্র তৈরী করে আবাসিকদের উৎখাত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্য মহিলা কমিশনের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরেও অভিযোগ জানানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সরলা পুণ্যাশ্রমের পরিচালন সমিতির সভাপতি বিশ্বজিৎ গুহ। যদিও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘জমি দখলের বিষয়টি আইনি। তবে আমরা আশ্রমের মহিলা আবাসিকদের উপর অত্যাচার এবং মারধরের অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। পুলিশকর্তারা বিস্তারিত তদন্ত করে জানাবেন।’
কসবার এই সরলা পুণ্যাশ্রমটি ১৯২৯ সালে তৈরি করেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর শিক্ষক বেণীমাধব দাস। পরে সুভাষচন্দ্র বসুর উদ্যোগেই কসবায় আশ্রমের জমির ব্যবস্থা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আশ্রমটিতে বহুমুখী নানা প্রকল্প ও পরিকাঠামো গড়ে তোলেন সুভাষচন্দ্রের শিক্ষক বেণীমাধবের দুই কন্যা বীণা ও কল্যাণীদেবী। সরলা পুণ্যাশ্রমে বাংলার বহু নামী প্রশাসক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এসেছেন। খোদ সুভাষ চন্দ্র বসুর নাম জড়িয়ে এই আশ্রমের সঙ্গে। এখন অসহায় প্রবীণ মহিলারা এই আশ্রমে বিনা খরচে এসে জীবনের শেষ দিনগুলি কাটান। এখনও বেশ কিছু অসহায় মহিলা এখানে আবাসিক হিসাবে রয়েছেন।
সূত্রের খবর, কোভিডের পর ২০২৩ সালে আশ্রমের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। আশ্রমের পরিচালন সমিতির তরফে অভিযোগ, ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাই এখন মহিলা আবাসিকদের বের করে দিয়ে ঘর দখল করতে চাইছে। প্রোমোটিং করতে দেওয়া হবে না, জানিয়েছেন আবাসিকরা। সরলা পুণ্যাশ্রমকে বাঁচাতে আবাসিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এলাকার বাসিন্দারাও।