নির্দেশক অগ্নিদেব ও তাঁর স্ত্রী সুদীপা চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির পুজো, এ বছর পা দিল ১৪৬ বছরে। সাবেক প্রতিমা প্রতি বছরের মতো এবছরও রাজবেশে সেজে উঠবে, এমনটাই জানালেন সুদীপা। প্রায় সাড়ে ছয় ফিট উচ্চতার প্রতিমার অঙ্গ সম্পূর্ণরূপে ঢাকা থাকে সোনা, রুপো ও জড়োয়ার গয়নায়। একটি বিশেষ সীতাহার পরানো হয় দেবীকে, যা তাঁর কণ্ঠ থেকে ঘট পর্যন্ত নেমে আসে।
একসময় ঢাকার পারিবারিক বাড়িতে যে-নিয়মে পুজো হতো, তার সবটুকু জানানোর মতো বর্ষীয়ানরা আর জীবিত নেই। তাই সাবর্ণ রায়চৌধুরিদের বাড়ির সাহায্য নিয়ে তাদের নিয়ম মতেই পুজো করা হয় চাটুয্যে বাড়ির দুর্গাকে। সুদীপা বলেন, ‘একটা মিথ প্রচলিত আছে আমাদের পরিবারে। দক্ষরাজা যেহেতু পার্বতীর স্বামী হিসাবে শিবকে মেনে নিতে রাজি ছিলেন না, তাই একরকম অপমানিত হয়েই শিব বিবাহের পর কালবিলম্ব না করে চলে যান। এতে আহত হন পার্বতী। পরে স্ত্রীয়ের অভিমান ভাঙাতে শিব প্রতিজ্ঞা করেন প্রতিবার সপ্তমীর দিন মেনকার সঙ্গে দেখা করে আসবেন ও তাঁকে প্রণাম করবেন। কিন্তু তিনি শুধু একটি ফল ও দুধই শুধু মুখে দেবেন, অন্নগ্রহণ করবেন না। শিব প্রণাম করবে শুনে মেনকার লজ্জায় মাথা কাটা যাওয়ার অবস্থা।
তাই এবাড়ির এয়োস্ত্রীরা প্রতিবার সপ্তমীতে শিব এলে আলতা পরে, ভারী রুপোর বিছে পরে পা ঢেকে ফেলেন-যেন শিব মেনকার পা-দুটি চিনতে না পারেন। শিব সিদ্ধি খেয়ে নিদ্রামগ্ন হলে তারপর মাকে দামি অলংকারে সাজানো হয়- যাতে শিব রাগ না করেন এই ভেবে যে, তাঁর মতো ভিক্ষুকের স্ত্রীর কামিনি কাঞ্চনে এত লোভ! এবাড়িতে সন্ধি পুজোর পর মাকে আমিষ ভোগ নিবেদন করেন বাড়ির পুরুষরা। আর দশমীর দিন বিসর্জনের আগে, মায়ের সমস্ত গয়না খুলিয়ে তা নিজের কাছে গচ্ছিত রাখার অধিকারও বাড়ির পুরুষদেরই।’
এবছরও রীতি মেনে ঢাকা থেকে আনানো তিলগুড়া চালের মাখাপোলাও ভোগ রান্না হবে চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে, হবে আত্মীয় বান্ধবদের সমাগম।