ভারতের পুরনো রেল স্টেশনগুলির মধ্যে অন্যতম শিয়ালদহ স্টেশন। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই স্টেশনে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষের অবাধ যাতায়াত। কেউ ব্যবসার স্বার্থে, কেউ চাকরির স্বার্থে কেউ আবার ভ্রমণের স্বার্থেই এই স্টেশনে পা রাখেন। কিন্তু যদি রাতারাতি বদলে যায় এই স্টেশনের নাম? হয়তো খুব শীঘ্রই এমনটাই হতে চলেছে। কারণ শিয়ালদহ স্টেশনের নাম বদলের প্রস্তাব রেখেছেন রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য।
বুধবার একাধিক রেল প্রকল্পের উদ্বোধনে শহরে আসেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। রেলমন্ত্রীকে স্বাগত জানান কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ শান্তনু ঠাকুর, রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যসহ একাধিক নেতা-নেত্রী। বুধবার রেলমন্ত্রীর সামনেই শিয়ালদহ স্টেশনের নাম বদলের প্রস্তাব রাখেন শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, এই স্টেশনের নাম বদলে রাখা হোক শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়।
কেন এই আবেদন? হঠাৎ শিয়ালহ স্টেশনের নাম বদলাতে কেন উঠে পড়ে লাগল গেরুয়া শিবির? উঠছে প্রশ্ন। এ ব্যপারে শমীক ভট্টাচার্য জানান, এক সময় সর্বস্বান্ত হওয়া লক্ষ লক্ষ মানুষ এই শিয়ালদহ স্টেশনে ভিড় করেছিলেন। শিয়ালদহের আশপাশেই ক্যাম্প করে তাঁদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। পুরো বিষয়টির তত্ত্বাবধানে ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তাই রেলমন্ত্রীর উপস্থিতিতে শিয়ালদহ স্টেশনের নাম বদলে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় করার দাবি জানায় গেরুয়া শিবির। বিষয়টি ভেবে দেখবেন বলে আশ্বাস দেন অশ্বিনী বৈষ্ণব।
শমীকের এই দাবি ঘিরেই তুঙ্গে বিতর্ক। শুরু রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির নেতৃত্বকে কড়া ভাষায় আক্রমণ তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের। তাঁর কথায়, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রাজ্যের উন্নয়নে একাধিক কাজ করেছেন। সেই অনুযায়ী বিজেপি সরকার কিছুই করতে পারেনি। সম্প্রতি একের পর এক রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। আগে যাত্রী সুরক্ষার দিকে নজর দিন। তার পর নাম বদল।’
অশ্বিনী বৈষ্ণবের হাত ধরে একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধনের পর বুধবারই প্রথম নসিপুর রেলব্রিজের উপর দিয়ে আজিমগঞ্জ পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হয়। রেলমন্ত্রীর দাবি, গত ১০ বছরে রাজ্যের রেল প্রকল্পের উন্নয়নে ১৩ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে বার বার অভিযোগ উঠেছে, রাজ্যের তরফে রেল প্রকল্পের জন্য জমি দেওয়া হয়নি। সেই কারণেই রেল প্রকল্পের উন্নয়নে জটিলতা তৈরি হয়েছে। রাজ্যের সহযোগিতায় এই জমি-জট কেটে গেলে শীঘ্রই রেল প্রকল্পের বাস্তবায়ন হবে বলে আশ্বাস দেন রেলমন্ত্রী। এ বিষয়ে রাজ্যের কাছে সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি।