ডাক্তারদের আন্দোলনে বিজেপি-র পামেলা!  ‘রাজনৈতিক উস্কানি থেকে দূরে থাকা’র আর্জি তৃণমূলের

স্বাস্থ্য ভবনের বাইরে অবস্থান বিক্ষোভ চালানো জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনে লাগতে পারে রাজনৈতিক রং! আশঙ্কা প্রকাশ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের। আগেভাগেই আন্দোলনরত চিকিৎসকদের ‘রাজনৈতিক উস্কানি থেকে দূরে থাকা’র আর্জি জানালো তৃণমূল। কিন্তু কেন এই আশঙ্কা প্রকাশ শাসকদলের? বৃহস্পতিবার সমাজমাধ্যমে একটি ‘কোলাজ’ পোস্ট করেছে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস, যেখানে দেখা যাচ্ছে মাদক পাচারে অভিযুক্ত বিজেপি যুব নেত্রী পামেলা গোস্বামী স্বাস্থ্য ভবনের বাইরে চিকিৎসকদের আন্দোলনে সামিল হয়েছেন এবং তাঁদের মধ্যে খাবারও বন্টন করছেন। তৃণমূলের পোস্ট করা ওই কোলাজে দেখা যাচ্ছে, একাধিক বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে পামেলার ছবি। এর থেকেই স্পষ্ট, পামেলা কেবল একজন সাধারণ বিজেপি কর্মী নন বরং তিনি বিজেপি যুবমোর্চার সাধারণ সম্পাদক। তৃণমূলের কটাক্ষ, ‘উস্কানির পর্দাফাঁস হয়েছে! অরাজনৈতিক প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন মাদক মামলায় জড়িত বিজেপি নেত্রী পামেলা গোস্বামী’।

নির্দিষ্ট পোস্ট করে তৃণমূলের তরফ থেকে সমাজমাধ্যমে লেখা হয়েছে,’ভেকধারী আন্দোলনকারীদের থেকে সাবধান। প্রথমদিন থেকে আরজি করের ঘটনা নিয়ে শকুনের রাজনীতি করে চলেছে বিজেপি। ন্যায়বিচারের আড়ালে বিজেপির শকুনের রাজনীতিকে ধিক্কার! জুনিয়র ডাক্তারদের আবেদন জানানো হচ্ছে, রাজনৈতিক উস্কানি থেকে দূরে থেকে তা প্রতিহত করার’। এই প্রসঙ্গে বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র শশী পাঁজা এবং রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।

শশী পাঁজা বলেন, ‘ আগেও বিজেপি বিধায়িকা অগ্নিমিত্রা পাল পৌঁছে গিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে। এবার মাদক পাচারে অভিযুক্ত বিজেপি নেত্রী পামেলা গোস্বামীও সেখানে পৌঁছে গেছেন। ডাক্তারদের অনুরোধ, রাজনৈতিক প্রলোভন থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখুন’। এরপরই ডাক্তারদের কাজে ফেরার আর্জি জানিয়ে শশী বলেন, ‘আরজি করের ন্যায় বিচার দাবির পাশাপাশি আপনাদের প্রধান কর্তব্য চিকিৎসা পরিষেবাকে স্বাভাবিক রাখা। অনুরোধ, আপনারা আবার কাজে ফিরে আসুন’। কুণাল ঘোষ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ডাক্তারদের আন্দোলনে যে সকল মুখ দেখা যাচ্ছে, তাতে আন্দোলন অরাজনৈতিক কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। যে বিপুল রসদ আন্দোলনকারীদের জন্য আসছে তার উৎসই বা কি? সুপ্রিম-নির্দেশ উপেক্ষিত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ও খোলা মনে আলোচনার জন্য বারংবার চিঠি পাঠিয়েছেন’।


এরপরই কুণালের প্রশ্ন, ‘তাহলে কাদের উস্কানিতে ডাক্তাররা এই আলোচনায় ইতিবাচক ভাবে সাড়া দিচ্ছেন না? পামেলা গোস্বামীদের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের যোগাযোগ কিভাবে? কে, কাকে আন্দোলনে ডাকছেন? এই প্রশ্ন উঠছেই। এই বিষয়গুলি দেখলেই বোঝা যায় কোন প্ররোচনায় রাজ্য সরকারের খোলা মনের আলোচনায় সাড়া দিচ্ছেন না জুনিয়র ডাক্তাররা’।

প্রসঙ্গত, পামেলা মডেলিং ও অভিনয় ছেড়ে ২০১৯ সালে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ২০২১ সালে তাঁকে মাদক পাচারের অভিযোগে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে তাঁর উপস্থিতি নিয়ে এবার সুর চড়ালো তৃণমূল। আন্দোলনে গেরুয়া রং লাগার আশঙ্কা প্রকাশ করে ডাক্তারদের সাবধানবাণী শোনালো শাসকদল।