• facebook
  • twitter
Thursday, 21 November, 2024

পুরসভায় রাত্রিযাপন ফিরহাদের, কন্ট্রোল রুমে রাতভর নজরদারি  

বিভ্রান্ত না হয়ে নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বস্ত মাধ্যমে দুর্যোগ পরিস্থিতি সমন্ধে অবগত থাকতে আবেদন করেছে কলকাতা পুরসভা। জরুরি ব্যবস্থাপনা পরিচালন করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগকে কাজে লাগনো হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় দানা নিয়ে রাতভর সজাগ রইলো কলকাতা পুরসভা। নবান্নে রাত জাগলেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে শহরের পরিস্থিতির উপর নজরদারি রেখে পুরসভায় রাত্রিযাপন করলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। দুর্যোগের আগে থেকেই কন্ট্রোল রুম থেকে গোটা শহরে ২৪ ঘন্টা নজরদারি চলছে। পুরসভার জরুরি বিভাগের সমস্ত ছুটি আগেই বাতিল করা হয়েছিল। বুধবার দুপুর দু’টো থেকে শনিবার পর্যন্ত চরম সতর্কতা অবলম্বন করছে কলকাতা পুরসভা।

দানা’র প্রভাবে কলকাতা-সহ বঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতেও দুর্যোগের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আগাম সতর্কতা অবলম্বন করে কলকাতা পুরসভা জরুরি ভিত্তিতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পুরসচিবকে নোডাল অফিসার করে ব্যুরো ও ওয়ার্ডভিত্তিক বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় নিকাশি, বিদ্যুৎ, আলো, উদ্যান, স্বাস্থ্য এবং জঞ্জাল অপসারণ বিভাগকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছে পুরসভা। কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে সংযুক্ত রাখা হয়েছে নবান্ন ও লাল বাজার পুলিশ হেড কোয়ার্টার। কোনও বিপত্তি ঘটলে পুরসভার কন্ট্রোল রুমের যোগাযোগের নম্বর— ২২৮৬১২১২, ২২৮৬১৩১৩ এবং ২২৮৬১৪১৪ -এর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন সাধারণ মানুষ।
দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে শহরের বিভিন্ন স্থানে লাগানো ৬০০ -র বেশি অস্থায়ী বাঁশের কাঠামো, হোর্ডিং ও ব্যানার খুলে ফেলা হয়েছে। বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলিকে বিজ্ঞাপন ফি’র তিনগুণ জরিমানা করেছে পুরসভা। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দুর্ঘটনা এড়াতে তড়িঘড়ি এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি পুরসভা আধিকারিকদের। শহরের রাস্তাঘাট, ফুটপাথ এবং নিকাশি ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিকদের। রাস্তার দু’পাশে বিপদজ্জনক অবস্থায় থাকা গাছের দুর্বল ডালপালা কেটে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কলকাতা সংলগ্ন নিচু অঞ্চলে বসবাসকারীদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গঙ্গার ধারে অবস্থিত অঞ্চলগুলিতেও জরুরি আশ্রয়ের ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ কবলিত মানুষের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য এবং জল মজুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়কে কেন্দ্র করে পাওয়ার ব্যাকআপ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়কে ঘিরে মাইকিং করে জনসচেতনতামূলক প্রচার করেছে পুরসভা। পুরসভার তরফে নাগরিকদের  নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিজের দায়িত্বে সুরক্ষিত রাখতে বলা হয়েছে। বিভ্রান্ত না হয়ে নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বস্ত মাধ্যমে দুর্যোগ পরিস্থিতি সমন্ধে অবগত থাকতে আবেদন করেছে কলকাতা পুরসভা। জরুরি ব্যবস্থাপনা পরিচালন করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগকে কাজে লাগনো হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব মোকাবেলায় ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স কেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও স্টেট ইমারজেন্সি রেসপন্স টিম গঠন করে রাখা হয়েছে। কলকাতা পুরসভার কন্ট্রোল রুম  শনিবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকছে। তৈরি রাখা হয়েছে ২৮১টি নিকাশি যন্ত্র। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ৪৫২টি পাম্প সক্রিয় রাখা হয়েছে। হাইড্রোলিক ল্যাডার-সহ একাধিক যন্ত্রপাতিও প্রস্তুত রয়েছে।