শনিবার নিউ আলিপুরের বিধ্বংসী অগ্নিকান্ডে সর্বস্বান্ত হয়েছেন ঝুপড়ির বাসিন্দারা। আগুনের লেলিহান শিখায় তাঁরা হারিয়েছেন শেষ সম্বলটুকু। বাতাস ভারি হচ্ছে হাহাকার আর ক্রন্দনরোলে। মাসের খোরাক চাল, ডাল থেকে শুরু করে জমানো টাকা এমনকি জরুরি কাগজপত্র সহ আধার, ভোটার ও রেশন কার্ডের মতো দরকারি নথি। পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে পোশাক থেকে শুরু করে শীতের কম্বল, এমনকি বিছানাপত্র। দুশ্চিন্তায় সারারাত চোখের পাতা এক করতে পারেননি। জীবনের সমস্ত স্বপ্ন ভেঙে চুরমার। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে প্রথম দিন খোলা আকাশের নিচে রাত কেটেছে তাঁদের।
ঝুপড়ির অনেকে জনমজুর খেটে খান। আবার অনেক মহিলা লোকের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। তাঁদের জমানো টাকা থেকে শুরু করে পোশাক ও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।
ঝুপড়ির এক বাসিন্দা অন্তঃস্বত্তা মোহিনী দাস কোনোরকমে আগুনের করাল গ্রাস থেকে পালিয়ে বেঁচেছেন। রক্ষা পেয়েছে তাঁর সন্তান। চলতি মাসেই ভূমিষ্ঠ হওয়ার কথা রয়েছে তার। সংবাদ মাধ্যমকে মোহিনী জানিয়েছেন, আগুন সব কিছু কেড়ে নিয়েছে। আগামী ২৫ তারিখের মধ্যে ডাক্তার ভর্তি হওয়ার তারিখ দিয়েছেন। কিন্তু টাকা-পয়সা সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। হাতে একটা কানাকড়িও নেই। যথাসময়ে কী করে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হবেন, তা ভেবে কুল-কিনারা করতে পারছেন না।
যদিও আগুন লাগার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও অরূপ বিশ্বাস। ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারাও। অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের আপাতত একটি স্কুলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁরা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত তপসিয়ার পর শনিবার সন্ধ্যায় নিউ আলিপুরের ঝুপড়িতে অগ্নিকান্ড। মুহূর্তে পুড়ে ছাই হয়ে যায় বাড়িগুলি। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসে দমকল ও সেনাবাহিনী। আগুন নেভানোর পাশাপাশি শুরু হয় উদ্ধার কাজ। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এদিকে মেয়র ফিরহাদ হাকিম শহরের বিভিন্ন ঝুপড়িতে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।