ট্যাংরায় দে পরিবারের তিনজনের হত্যাকাণ্ড নিয়ে চর্চার মধ্যেই এবার হালতুতেও একই ঘটনা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এই এলাকার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে এক পরিবারের তিনজনের ঝুলন্ত দেহ। স্বামী-স্ত্রী ও আড়াই বছরের সন্তানের দেহ উদ্ধারের পাশাপাশি ঘর থেকে সুইসাইড নোটও পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। এই তিনজনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দানা বাঁধছে রহস্য। গৃহকর্তা পেশায় অটোচালক বলে জানা গিয়েছে। তদন্তে নেমেছে কসবা থানার পুলিশ। ইতিমধ্যেই সন্তান-সহ দম্পতি আত্মহত্যার ঘটনায় মামা, মামি এবং মাসিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার হালতুর পূর্বপল্লি এলাকার একটি বাড়ি থেকে তিনজনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। ওই বাড়িতে সপরিবার থাকতেন ৪০ বছর বয়সি সোমনাথ রায়। মৃত্যু হয়েছে তাঁর স্ত্রী বছর পঁয়ত্রিশের সুমিত্রা রায় এবং আড়াই বছরের ছেলে রুদ্রনীলেরও। বাড়ি থেকে তিনজনেরই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিক অনুমান, সন্তানকে খুন করে মা-বাবা আত্মঘাতী হয়েছেন। মৃতদেহগুলিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই পাড়ায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই প্রতিবেশী, আত্মীয়রা একে একে জড়ো হন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন আর্থিক সমস্যায় ভুগছিল সোমনাথের পরিবার। সম্প্রতি বাজারে দেনা হয়ে গিয়েছিল। আবার আত্মীয়দের দাবি, সম্পত্তি নিয়ে পরিবারের সঙ্গে ঝামেলা চলছিল সোমনাথের। এসবের কারণে মানসিকভাবে কিছুটা বিধ্বস্ত ছিলেন তিনি। সেই কারণেই সপরিবারে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
প্রাথমিক তদন্তে নেমে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এদিন সোমনাথের মামা, মামি এবং মাসিকে আটক করে থানায় নিয়ে গিয়েছে। সূত্রের খবর, সুইসাইড নোটে সম্পত্তি বিবাদের কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি নিজের মামা ও মামির বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগও এনেছে সোমনাথ। সোমনাথের আনা অভিযোগের স্বপক্ষে তাঁর মামা-মামির বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ এনেছেন সোমনাথের শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সোমনাথের স্ত্রী সুমিত্রার বাবার অভিযোগ, ‘সোমনাথের বাবার জমি দখল করে গত কয়েক বছর ধরে রয়েছে ওর মামা, মামি এবং মাসি। এমনকী সোমনাথকেই ওর বাবার জমি, বাড়ি থেকে বহুবার উৎখাতের চেষ্টাও করেছে।’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘ওই মামা, মামির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই ওরা নিজেদের শেষ করে দিল।’ যদিও এ বিষয়ে সোমনাথের মামা প্রদীপকুমার ঘোষ যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।