মহানগরের বস্তি, কলোনি ও ঠিকা জমিতে বসবাসকারী মানুষদের জন্য সুখবর। এবার ন্যূনতম ফি-এর বিনিময়ে পুরসভা বাড়ির প্ল্যান অনুমোদন দেবে এবং নির্মীয়মাণ বাড়ির বৈধতার সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। গরিব ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষদের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা।
পুরসভার তিন মেয়র পারিষদ, ডিজি বিল্ডিং এবং সার্ভের চিফ ম্যানেজারকে নিয়ে গঠিত কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখে সুপারিশ করবে। তারপর তা অনুমোদন হবে মেয়র পারিষদের বৈঠকে। মঙ্গলবার বাজেট অধিবেশনে এ কথা জানান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হন।
তবে মেয়র স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সব বাড়ি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৈধতা পাবে না। বিশেষজ্ঞ ও ইঞ্জিনিয়ারদের রিপোর্টের ভিত্তিতে পরিকাঠামো খতিয়ে দেখেই এই অনুমোদন দেওয়া হবে। বিল্ডিং সংক্রান্ত এই কমিটিতে রয়েছেন দেবব্রত মজুমদার, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় ও মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়।
গার্ডেনরিচ ও বাঘাযতীন এলাকায় সাম্প্রতিক বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনার পর এই কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিটির সুপারিশ দেখে ১০, ১১ ও ১২ নম্বর বরোর যেসব বাড়ি পুর কর, প্ল্যান অনুমোদন বা নাগরিক পরিষেবা সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছে, তাদের সমস্যারও সমাধান করা হবে।
বিল্ডিং পরিকল্পনা নিয়ে এই কমিটির লক্ষ্য ব্যাখ্যা করে মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে পুর কর কমানো হলে পুরসভার রাজস্ব বাড়বে, আবার সাধারণ মানুষও অসৎ প্রোমোটারদের ফাঁদে পড়বে না। তিন কাঠা বা তার কম জমিতে কিছু ছাড় দিয়ে যদি বাড়ির প্ল্যান অনুমোদন করা হয়, তাহলে মধ্যবিত্ত বাঙালির স্বপ্নের বৈধ বাড়ি পাওয়াও সহজ হবে।’
বাজেট অধিবেশনে বিরোধীদের কটাক্ষ করে মেয়র বলেন, ‘কোভিডের সময় কেন্দ্রের সরকার বেআইনিভাবে আমাকে গ্রেপ্তার করেছিল। কিন্তু আমি বেরিয়ে এসে প্রথমেই ভ্যাকসিন নিয়েছি, তারপর শহরের মানুষের জন্য পরিষেবা চালিয়ে গিয়েছি। বেসরকারি হাসপাতাল যখন বন্ধ ছিল, তখন পুরসভার ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়াররা প্রতিদিন কাজ করেছেন। আমরা হৃদয় দিয়ে কাজ করি, তাই আজ কলকাতা দেশের সেরা শহর।’
বাম শাসনের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, ‘বামফ্রন্ট জমি-সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা জোগাড় করত, আর বর্তমান তৃণমূল বোর্ড অমূল্যায়িত সম্পত্তি কাজে লাগিয়ে রাজস্ব বাড়াচ্ছে এবং ঘাটতি কমাচ্ছে।’