বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস উপলক্ষে সোমবার কলকাতা পুরসভার সদর দপ্তরে আয়োজিত হল এক সচেতনতামূলক শিবির। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, স্বাস্থ্য বিভাগের সরকারি আধিকারিক ও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিরা। যক্ষ্মা রোগীদের সেবায় নিয়োজিত কর্মীদেরও এদিন বিশেষভাবে সম্মানিত করা হয়।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৪ সালে কলকাতা পুরসভার যক্ষ্মা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের অধীনে শহরে ১২,২১৩ জন যক্ষ্মা রোগী চিহ্নিত করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ৫,২৮৪ জন বেসরকারি চিকিৎসার আওতাভুক্ত। এছাড়া ৫২৬ জন ওষুধ প্রতিরোধী (ডিআর-টিবি) রোগী চিকিৎসা পেয়েছেন। যার মধ্যে ২০৪ জন বেসরকারি হাসপাতালের রোগী। রোগীদের আর্থিক সহায়তায় ১৬ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা খরচ করান হয়েছে এবং বেসরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের ১২ লক্ষ ৯১ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও জানা গিয়েছে, শহরের বস্তি এলাকায় ৫ লাখ ৭৫ হাজার মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। যার মধ্যে ১,২৯০ জনের কফের নমুনা পরীক্ষা করে ৫৭ জনের যক্ষ্মা ধরা পড়েছে। চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতির ফলে আগে যেখানে ২০ মাস ধরে ৫টি ওষুধ খেতে হত, এখন আধুনিক পদ্ধতিতে মাত্র ৬ মাসে ৪টি ওষুধ খেলেই যক্ষ্মা সারবে বলে জানানো হয়েছে।
এছাড়াও, যক্ষ্মা নির্ণয়ের জন্য ১১টি সিবি-নাট ল্যাব ও ১৫টি ট্রু-নাট ল্যাব ২৪ ঘণ্টা চালু রাখা হয়েছে। শহর জুড়ে ২১টি মেডিকেল সেমিনার, ৪৩টি সচেতনতামূলক পথনাটক ও জাদু প্রদর্শনী এবং ২১৫টি কমিউনিটি সভা আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া নতুন প্রযুক্তি সিওয়াই-টিবি ইনট্রাডার্মাল পরীক্ষা চালু করা হয়েছে যক্ষ্মা নির্ণয়ের জন্য।
ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ জানান, পরিবেশ দূষণ যক্ষার প্রকোপ বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই শুধু চিকিৎসা নয়, শহরকে দূষণমুক্ত রাখা ও চারপাশ পরিষ্কার রাখাও অত্যন্ত জরুরি। যক্ষ্মা নির্মূলের লক্ষ্যে কলকাতা পুরসভা ২০২৪ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে ‘১০০ দিনের যক্ষা মুক্ত বাংলা’ অভিযান শুরু করেছে, যেখানে ইতিমধ্যেই ৮ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।