মায়ের সঙ্গে ‘পরকীয়া’র বদলা  নিতেই জোড়াবাগানের খুন

প্রতীকী চিত্র

মায়ের সাথে ‘পরকীয়া’।  আর তার বদলা নিতেই জোড়াবাগানের এলআইসি এজেন্টকে  খুন করে নাবালক।  এলআইসি এজেন্ট অভিজিৎ বন্দোপাধ্যায়ের খুনের কিনারা করতে গিয়ে নাবালকের কাণ্ডকারখানা দেখে রীতিমতো তাজ্জব পুলিশ। এই ঘটনায় ওই নাবালককে আটক করেছে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে যে, মৃত অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার মায়ের ‘পরকীয়া’ সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে, সে এই খুনের পরিকল্পনা করে এবং অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে খুন করে।  নাবালককে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, পরিকল্পনা করেই কালীপুজোর দিন জোড়াবাগানে  মৃতর বাড়িতে গিয়েছিল ওই নাবালক। এরপর সে অভিজিৎবাবুকে  ছুরি দিয়ে ১১ বার কুপিয়ে খুন করে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে।

অভিজিতবাবুর মৃত্যু হয়েছে জানতে পেরে, ওই নাবালক তাঁর হার, আংটি, মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে পালিয়ে যায়।  সেই মোবাইল নদিয়ায় গিয়ে ‘অন’ করে ওই নাবালক। ওই মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখেই তাকে নদীয়া থেকে আটক করেছে পুলিশ।  পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এলআইসির কাজের সূত্রে আলাপ হয় নদীয়ার চাপড়ার বাসিন্দা এক মহিলার।  ধীরে ধীরে তাঁদের মধ্যে একটি সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মাঝে মাঝে ওই মহিলা জোড়াবাগানে  অভিজিৎবাবুর বাড়িতে আসতেন।  কখনও আবার অভিজিৎবাবু চাপড়ায় ওই মহিলার বাড়িতে যেতেন।  তাঁদের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টি আস্তে আস্তে বুঝতে পারে ওই নাবালক। এই বিষয়ে মায়ের কাছে আপত্তি জানায় সে। কিন্তু মা গুরুত্ব না দিয়ে তাদের সম্পর্ক চালিয়ে যেতে থাকে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ওই নাবালক তার মাকে হুমকি দিয়েছিল যে, এর বদলা সে নেবে।  সেই অনুযায়ী এক প্রকার পরিকল্পনা করেই বৃহস্পতিবার ওই নাবালক চাপরা থেকে কলকাতায় আসে।  তার সঙ্গে একটি ছুরি ছিল।  এরপর  অভিজিৎবাবুর বাড়িতে ঢুকে তাঁর ওপর সে হামলা চালায়। বাড়িতে থাকা আরও একটি ছুরিকে সে কোপানোর কাজে লাগায় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশ ওই নাবালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও জানতে পেরেছে,  সে মৃতের মাথায় ৯বার কোপ মারে।  অভিজিৎবাবু আটকাতে গেলে, তাঁর দুই হাতে সে দুবার  কোপ দেয়।  আঘাতের ফলে  ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অভিজিৎ বাবুর।  মৃত্যু হয়েছে বুঝতে পেরে ওই নাবালক তাঁর শরীর থেকে হার, আংটি খুলে নেয়।  এবং মোবাইলটিও হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।  এরপর ওই মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন  ট্র্যাক করেই অভিযুক্ত নাবালককে আটক করে পুলিশ। শুক্রবার নদীয়ার চাপরা থেকে ওই নাবালককে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে।  এই ঘটনায় ওই নাবালকের সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।