‘ন্যায় বিচারের দাবিকে অতিরঞ্জিত করা অর্থহীন’ : ফিরহাদ হাকিম

মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ফাইল চিত্র।

মঙ্গলবার কলকাতা পৌরসংস্থার বিভিন্ন বিভাগের বিশ্বকর্মা পুজোয় সামিল হন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বিভিন্ন বিভাগের বিশ্বকর্মা পুজো পরিক্রমা শেষে এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একদিকে যেমন ধর্মীয় সম্প্রীতির বার্তা দিলেন তেমনি জুনিয়র ডাক্তারদের টানা কর্মবিরতি প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন ফিরহাদ হাকিম। আরজি কর কাণ্ডের বিচারের দাবিকে বর্তমানে ‘অতিরঞ্জিত’ করা হচ্ছে, এমনই দাবি মন্ত্রীর। বিশ্বকর্মা পুজোর মতো বাঙালির অন্যতম উল্লেখযোগ্য উৎসবের দিনে কালো ঘুড়ি ওড়ানো বা কালো বেলুন ওড়ানোর ভাবনাকেও কটাক্ষ করেছেন মেয়র।

কলকাতা পৌরসংস্থার ইঞ্জিনিয়ার্সদের এই প্রতিবাদের ধরণকে আক্রমণ শানিয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘ন্যায় বিচার আমরা সবাই চাই। তবে যাঁরা বিচারের দাবিকে অতিরঞ্জিত করছেন, তাঁরা আসলে একটা হুজুক তৈরি করার চেষ্টা করছেন। মামলাটি সিবিআই তদন্ত করছে এবং সুপ্রিম কোর্টে তা বিচারাধীন। নাগরিক হিসাবে সুপ্রিম কোর্টের উপর বিশ্বাস করা আমাদের কর্তব্য। আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস, দোষীর উপযুক্ত শাস্তি হবে। ফাঁসিই হবে। এই পরিস্থিতিতে ন্যায় বিচারের দাবিকে অতিরঞ্জিত করা অর্থহীন’। ফিরহাদের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘কালো বলুন উড়িয়ে সমস্যার সমাধান হবে না’। পুজো বয়কটের মতো প্রতিবাদের ধরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। তাঁর যুক্তি, সারাবছর ধরেই বহু মানুষ অর্থনৈতিক ভাবে পুজোর উপর নির্ভরশীল।

দফায় দফায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর অবশেষে সোমবার রাতে সেই বৈঠক সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তারদের দাবি মতো কলকাতা পুলিশ কমিশনার এবং দুই স্বাস্থ্যকর্তার বদলি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমনকি তার বাস্তবায়নও করেছেন ইতিমধ্যেই। তা সত্ত্বেও জুনিয়র চিকিৎসকগণ কর্মবিরতির সিদ্ধান্তে অনড়। মেয়রের ভাষায় তাঁদের এই সিদ্ধান্ত ‘দুর্ভাগ্যজনক’। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের অধিকাংশ দাবি মেনে নিয়েছেন এমনকি তাঁদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে তৎপর হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় গরিব মানুষের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে ফিরহাদের বক্তব্য, ‘আশা করি তাঁদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের দাবি পূরণে তৎপর হয়েছেন সেখানে কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার দরকার আছে বলে মনে হয় না।


এবার আমাদের শীর্ষ আদালতের উপর ভরসা রাখা উচিৎ’। জুনিয়র চিকিৎসকদের বক্তব্য ছিল, মুখ্যমন্ত্রীর সকল মৌখিক আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা কর্মবিরতিতেই থাকবেন। এ প্রসঙ্গে ফিরহাদের বক্তব্য, ‘তাঁরা ছোটো ছেলেমেয়ে, তাঁরা জানে না। যখন রাজ্যের প্রধান বলে দিয়েছেন, তখন সেটা প্রশাসনিক ভাবে কার্যকর হবেই। তার জন্য লাইভ-স্ট্রিমিং বা ভিডিওগ্রাফির প্রয়োজন হয় না। দেশের প্রধানও বৈদেশিক রাষ্ট্রের প্রধানের সঙ্গে নানা বৈঠকে বসেন। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রের প্রধানের বক্তব্য কার্যকর হওয়ার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা থাকে না’। এদিন পৌরসংস্থার একাধিক বিভাগে আয়োজিত বিশ্বকর্মা পুজো প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, ‘বিশ্বকর্মা হলেন ইঞ্জিনিয়ারদের দেবতা তাই সারা বছর যেন প্রযুক্তির কাজগুলি নিখুঁত হয় তাই কলকাতা পৌরসংস্থার একাধিক বিভাগে বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন করা হয়েছে’।