টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল গ্রেপ্তারের পর এবার কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে সিবিআই। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানির পর বিনীতকে তলব করা হতে পারে। এই মামলায় ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের’ গন্ধ পাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শনিবার আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। তাঁদের ৩ দিনের সিবিআই হেফাজত দিয়েছে শিয়ালদহ আদালত। সূত্রের খবর, টালা থানার ওসির পর এবার সিবিআইয়ের নজরে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। তাঁকে তলব করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিজেপি নেতা অমিত মালব্যও বিনীতের বিরুদ্ধে অপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। টালা থানার ওসির বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ লোপাট সহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়েছে। বৃহত্তর ষড়যন্ত্র হয়ে থাকতে পারে বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসাররা। তবে আধিকারিকরা জানিয়েছেন, অভিজিৎকে মূল অভিযোগে অভিযুক্ত হিসেবে ধরা হচ্ছে না। তাঁর বিরুদ্ধে মূলত তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। এফআইআর দায়ের করতে দেরি হয়েছে বলেও এদিন আদালতে দাবি করেছেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। এমনকী এফআইআর না করেই দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৯ আগস্ট আরজি কর হাসপাতাল থেকে দেহ উদ্ধারের পর বিনীত গোয়েল ও টালা থানার ওসির মধ্যে একাধিকবার যোগাযোগ হয়েছে বলে জানিয়েছে সিবিআই। তদন্তকারীদের অনুমান, ওই দিন সকালে টালা থাকায় এই ঘটনায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তা আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তদন্তকারীদের দাবি, এসব ঘটনা কলকাতার পুলিশ কমিশনারের মদত ছাড়া করা সম্ভব নয়।
সিবিআইয়ের দাবি, টালা থাকার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল ইচ্ছা করে কর্তব্যে গাফিলতি করেছেন। গোটা তদন্তে তিনি পরোক্ষভাবে মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করতে সাহায্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু কার নির্দেশে এরকম কাণ্ড ঘটালেন অভিজিৎ? সেই তথ্য পেতেই প্রস্তুতি শুরু করতে চাইছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা। গ্রেপ্তারের আগেও একাধিকবার সিবিআই আধিকারিকদের মুখোমুখি হয়েছেন অভিজিৎ। সম্প্রতি তিনি বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে ভবানীপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেই নিয়ে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। তাঁর ‘অসুস্থতা’ নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন। তবে ‘অসুস্থতা’র অস্ত্র তাঁকে গ্রেপ্তার হওয়ার থেকে আটকাতে পারল না।
পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের দাবিতে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থানে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। প্রথম থেকেই তাঁরা পুলিশের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট ছিলেন। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।