• facebook
  • twitter
Tuesday, 24 September, 2024

খাদ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে শারদীয়ার প্রাক্কালে বারাসত থেকে পুরুলিয়ার প্রান্তিক মানুষদের বস্ত্রদান পৌরপিতার

বিগত ২৪ বছর ধরেই জনসেবায় নিযুক্ত এই প্রতিষ্ঠান। মানবসেবার এই সংখ্যাটা বৃদ্ধি পেয়ে গতবছর ৫০০০ ছাড়িয়েছে। দেবব্রত পালের ভাষায়, 'শুধুমাত্র ব্যবসায়িক সত্ত্বা নয়, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও মানবিক মূল্যবোধের জায়গা থেকেই এই কর্মকাণ্ড।'

নীল জ্যোতি ভারত গ্যাস কেবল একটি প্রতিষ্ঠান নয়, পাশাপাশি এটি নিয়োজিত মানব সেবাতেও। শনিবার আরও একবার এর প্রমাণ মিললো। বারাসত পুরসভার ১০নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দেবব্রত পালের উদ্যোগে এবং ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বারাসতে নীল জ্যোতি ভারত গ্যাস প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হলো স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির এবং বস্ত্রদান অনুষ্ঠান। দেবব্রত পাল ছাড়াও এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ, ব্যারাকপুরের তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক, বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান অশনি মুখার্জি সহ পুরসভার অন্যান্য পৌরপিতাগণ। প্রতি বছরের মতো এবছরও শারদীয়ার প্রাক্কালে দেবব্রত পালের তৎপরতায় নীল জ্যোতি ভারত গ্যাস হতদরিদ্র মানুষের হাতে তুলে দিল বস্ত্র এবং কম্বল। এখানেই শেষ নয়, রক্তদান শিবিরের মত মহৎ অনুষ্ঠানের আয়োজন থেকে প্রায় ১০০০ জন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের ঔষধ প্রদানও করা হয় এদিন।

শনিবার এলাকার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের হাতে মেডিক্যাল-কিট তুলে দেন খাদ্যমন্ত্রী। সব মিলিয়ে, নীল জ্যোতি ভারত গ্যাসের অবদান অনস্বীকার্য। প্রসঙ্গত, দেবব্রত পালের উদ্যোগে বিগত দুই দশক ধরেই জনসেবায় আত্মনিয়োগ করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। এর অবদান সীমাবদ্ধ নেই কেবল উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত শহরের মধ্যে। পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত অযোধ্যা পাহাড় হয়ে ডুয়ার্সের চা-বাগান পর্যন্ত খেটে খাওয়া সাঁওতাল, শবর, বীরহোড়, টোটো, লোধা প্রভৃতি আদিবাসী ও প্রান্তিক মানুষদের মুখে হাসি ফোটাতে দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে নতুন বস্ত্র এবং কম্বল উপহার দিয়ে থাকে এই প্রতিষ্ঠান। বিগত ২৪ বছর ধরেই জনসেবায় নিযুক্ত এই প্রতিষ্ঠান। মানবসেবার এই সংখ্যাটা বৃদ্ধি পেয়ে গতবছর ৫০০০ ছাড়িয়েছে। দেবব্রত পালের ভাষায়, ‘শুধুমাত্র ব্যবসায়িক সত্ত্বা নয়, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও মানবিক মূল্যবোধের জায়গা থেকেই এই কর্মকাণ্ড।’

খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে প্রকৃত উৎসবের সার্থকতা তুলে ধরেছেন। তাঁর ভাষায়, ‘জনসেবার মধ্যেই উৎসবের আনন্দ নিহিত থাকে। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হোক কিংবা কোনো জটিল রোগে আক্রান্ত শিশুর হাতে প্রয়োজনীয় ওষুধ তুলে দেওয়া, এর মাধ্যমেই তাঁদের মুখে আমরা হাসি ফোটাতে পারি। তাঁদের হাসিই আমাদের কাছে উৎসবের আনন্দের সমান।’

সাংসদ পার্থ ভৌমিকের ভাষায়, ‘উৎসবের একটাই ধর্ম- তা হলো মানব ধর্ম। দুর্গাপুজো কেবল একটি সাধারণ পুজো নয়, জাতি-ধর্ম-অর্থনৈতিক বাধা সব ভুলে আনন্দে সামিল হওয়ার সুযোগ এটি। আর এই উৎসবে সমাজের সকল স্তরের মানুষের যোগদান সুনিশ্চিত করতে পারাই আমাদের সফলতা।’

এই প্রতিষ্ঠান প্রসঙ্গে দেবব্রত পাল জানিয়েছেন, ‘আমরা কেবল বস্ত্রদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। নীল জ্যোতি ভারত গ্যাস থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের ঔষধ প্রদানের পাশাপাশি ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষদের ঔষধ সরবরাহ, পাইওনিয়ার ক্লাবকে অ্যাম্বুলেন্স প্রদান, বারাসত থানাকে শববাহী যান প্রদান, আয়লা-আমফানের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াও বন্যা দুর্গত নিরন্ন মানুষদের পাশে দাঁড়ানো, করোনার প্রকোপে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের একমাস যাবৎ প্রতিদিন খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করা, দুঃস্থ অথচ মেধাবী ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আগামী জীবনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করা, স্কুলছুট বাচ্চাদের স্কুলে ফিরিয়ে এনে বইপত্র প্রদানের মাধ্যমে উৎসাহ দেওয়া প্রভৃতি কাজ করে থাকে।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহেই অযোধ্যা পাহাড় হয়ে ডুয়ার্সের চা-বাগানের দুস্থ মানুষের কাছে পৌঁছে যাবেন তাঁরা। সেখানে প্রায় ৪০০০ জন মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হবে নতুন বস্ত্র।