সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্যের মতো বিলুপ্তির পথে কলকাতা শহরের ট্রামও। ট্রামযাত্রার মাধ্যমে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ, সুন্দরবন রক্ষার বার্তা দিতে শহরে এসেছেন ট্রামপ্রেমীরা। অস্ট্রেলিয়ান সরকারের সাহায্যে প্রত্যেক বছরের মতো এবারও শহরে আয়োজিত হচ্ছে এই ট্রামযাত্রা অনুষ্ঠান। শুক্রবার থেকে রাস্তায় নেমেছে একটি সুসজ্জিত ট্রাম, যা চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গড়িয়াহাট-এসপ্ল্যানেড-শ্যামবাজার রুটে বিশেষ এই ট্রামটিতে বিনামূল্যে ভ্রমণ করতে পারবেন শহরের মানুষ।
মেলবোর্নের ট্রাম কন্ডাক্টর রবের্তো আন্দ্রেয়া ও অস্ট্রেলিয়ার একটি প্রতিনিধি দল প্রতীকী টিকিটের মাধ্যমে যাত্রীদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। তাঁদের সঙ্গে গল্পও করছেন। বাংলা তথা সুন্দরবনের একাধিক চিত্র এঁকে ট্রামটিকে সাজিয়েছেন চিত্রশিল্পী সুমন্ত মুখোপাধ্যায় এবং পিংলার পটশিল্পী স্বর্ণ চিত্রকর। এক সময় কলকাতার ৪০টিরও বেশি রুটে ট্রাম চলত। আর এখন মাত্র দুটি রুটে ট্রাম চলে। কলকাতা-মেলবোর্ন ট্রামযাত্রার এবারের বার্তা হল, পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে ট্রাম পরিষেবাকে যেমন বাঁচিয়ে রাখতে হবে, তেমনই ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভকে।
অস্ট্রেলিয়ান কন্ডাক্টর রবের্তো ডি আন্দ্রেয়া বলেন, ‘বিশ্বের সব শহর লাইট রেল হিসেবে ট্রাম ফিরিয়ে আনছে। এর লক্ষ্যই হচ্ছে, ভিড় কমানো এবং দূষণমুক্তি। ট্রামকে বাঁচাতে সকলকে উদ্যোগ নিতে হবে।’ ট্রামযাত্রা উপলক্ষে ৩১ মার্চ বিকেল সাড়ে ৪টেয় আইসিসিআর রবীন্দ্রনাথ টেগোর সেন্টার সত্যজিৎ রায় অডিটোরিয়ামে সুন্দরবন ও কলকাতার জলবায়ু সংকট নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি এসপ্ল্যানেড ট্রাম টার্মিনাসেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে।
ট্রামযাত্রার আর্টিস্টিক ডিরেক্টর মহাদেব শীর বলেন, ‘সুন্দরবনের সঙ্গে ট্রামকে রক্ষা করতে আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে অস্ট্রেলিয়ার কনস্যুলেট। ট্রাম যেমন কলকাতা থেকে বিলুপ্তের পথে, তেমনই সুন্দরবনেও অনেক কিছু বিলুপ্তের পথে। এই দুটিকেই রক্ষা করার বার্তা দেওয়া হচ্ছে ট্রামযাত্রা উৎসবে।’