পূর্ব ঘোষণা মতো ষষ্ঠীর বিকেলে সিজিও কমপ্লেক্সে অভিযান করল চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের তিনটি সংগঠন। স্বাস্থ্য কর্মীদের সংগঠনের মধ্যে নার্সদের পৃথক তিনটি সংগঠনও ছিল। তাঁদের অভিযানের উদ্দেশ্য, আর জি করের ঘটনার দ্রুত তদন্ত দাবি এবং সিবিআই-এর পেশ করা চার্জশিটে অসন্তোষ। যার জেরে মিছিল করে সিজিও কমপ্লেক্সের সিবিআই দপ্তরে অভিযান চালানো হয়। জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনে সম্মতি জানিয়ে এবং সিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে মিছিল করা হয়। স্লোগান ওঠে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস।’
বুধবার বিকেলে এই মিছিলের আয়োজন করে ডক্টর্স ফোরাম, মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টার এবং নার্সেস ইউনিটি নামে তিনটি সংগঠন। আন্দোলনকারীরা বেলা ৩টেয় করুণাময়ী মোড় থেকে সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান করে।
প্রসঙ্গত গত সোমবার শিয়ালদহ আদালতে মুখবন্ধ খামে চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই। সেখানে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে সাফ জানানো হয়, আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতার নির্যাতনের জন্য একমাত্র ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ই দোষী। তারপর আবারও গর্জে ওঠেন চিকিৎসক মহল। তাদের সাফ দাবি, কেন শুধুমাত্র সঞ্জয়কেই দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে? এই অভিযোগ তুলে আজ মহাষষ্ঠীর দিন চিকিৎসক মহলের পক্ষ থেকে ডাক দেওয়া হল সিজিও কমপ্লেক্স অভিযানের।
২০ সেপ্টেম্বর প্রথম সিবিআই দপ্তরের ঘেরাও অভিযানে নামেন চিকিৎসকরা। সেই দিনের অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। আজ ৯ অক্টোবর সিজিও কমপ্লেক্সে অভিযানের নেতৃত্বে রয়েছেন সিনিয়র চিকিৎসকরাও।
সিবিআইয়ের তদন্তের নমুনা নিয়ে আজ তাঁদের সিজিও কমপ্লেক্সে অভিযানের ডাক দেওয়া হয়। তাঁদের দাবি, ৯ আগস্ট ঘটে যাওয়া আরজি করের মর্মান্তিক ঘটনার পর আজ ৯ অক্টোবর, দুই মাস অতিক্রান্ত। কিন্তু সিবিআই-এর পক্ষ থেকে তদন্তে কোনও অগ্রগতি নেই। একমাত্র সঞ্জয়ের পক্ষ থেকে এই ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয়, কেন বাকিদের আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে? এই অভিযোগকে সামনে রেখে আজ চিকিৎসক মহলের পক্ষ থেকে ডাক দেওয়া হয় সিজিও কমপ্লেক্স অভিযানের।
উল্লেখ্য, গতকাল চিকিৎসক মহলের পক্ষ থেকে আগেই ডাক দেওয়া হয়েছিল মহামিছিলের। জুনিয়র ডাক্তারদের পক্ষ থেকে বিকেল ৪ টের সময় কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলায় জুনিয়র চিকিৎসকদের অনশন মঞ্চ পর্যন্ত এই মিছিলে অংশগ্রহণের ডাক দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে অনুমতি দেয়নি কলকাতা পুলিশ। কেন? গতকাল ছিল মহাপঞ্চমী, তাই রাস্তা জুড়ে থাকবে মানুষের ঢল। কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত যেতে পড়ে দুটি বড় পুজো। আর প্রতিবছরই সেখানে দেখা মেলে উপচে পড়া ভিড়। আর সেই আবহে যদি মহামিছিল করা হয়, তাহলে তৈরি হবে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি। সেই কথা মাথায় রেখে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে গতকাল জুনিয়র চিকিৎসকদের ডাক দেওয়া মহামিছিলে অনুমতি দেওয়া হয়নি।
কিন্তু পুলিশের বাধাকে অগ্রাহ্য করেই পঞ্চমীর বিকেলে পথে নামতে দেখা যায় চিকিৎসকদের। একটি নয়, বরং জোড়া মিছিল হয় তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে। একটি মিছিল শুরু হয় কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন মঞ্চ পর্যন্ত। আরও একটি মিছিল শুরু হয় মেডিক্যাল কলেজের পিছন গেট থেকে ভিক্টোরিয়া হাউস পর্যন্ত।
মহাপঞ্চমীর পর আজ মহাষষ্ঠীর দিন আবারও চিকিৎসক মহলের পক্ষ থেকে দুপুরে ডাক দেওয়া হয় মিছিলের। লক্ষ্য ছিল সিজিও কমপ্লেক্সের সিবিআই দপ্তর অভিযান।