শহরের বিভিন্ন পুরনো ও পরিত্যক্ত বাড়ির ঝুঁকি এড়াতে এবার কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। সম্প্রতি, পুরসভার কমিশনার এক বিশেষ নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছেন যে শহরের এমন সমস্ত বাড়ি, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে কেউ বসবাস করেন না, সেগুলিকে চিহ্নিত করে ‘বিপজ্জনক’ নোটিস সাঁটাতে হবে। পাশাপাশি, এই ধরনের বাড়িগুলির উপর নিয়মিত নজরদারির ব্যবস্থাও করতে হবে।
পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের বহু পুরনো বাড়ি, যেগুলির রক্ষণাবেক্ষণ নেই এবং দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা পড়ে আছে, সেগুলি ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এর ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। এই ধরনের বাড়ি অনেক সময়েই স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। বিশেষ করে বর্ষার সময় বাড়িগুলি ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটে। তাই শহরের সমস্ত ওয়ার্ডের বিল্ডিং বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এমন বাড়িগুলি দ্রুত খুঁজে বের করে তাদের বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত করতে হবে।
তবে, শুধুমাত্র নোটিস সাঁটানোই যথেষ্ট নয় বলে স্পষ্ট করেছে পুরসভা। প্রতিটি ওয়ার্ডের বিল্ডিং অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এই বাড়িগুলির নিয়মিত পরিদর্শন করতে হবে। পাশাপাশি, বাড়ির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তা ডিজিটাল ওয়ার্ক ডায়েরিতে নথিভুক্ত করার কথাও বলা হয়েছে। এর মধ্যে থাকবে প্রতিটি বাড়ির বর্তমান ছবি ও পরিদর্শনের তারিখ।
পুরসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, শহরে অনেক বাড়ি আগে থেকেই বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সেই নোটিস খুলে ফেলা হয় বা ঝড়-জলে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে, সেগুলি পুনরায় চিহ্নিত করার কাজ চলবে। পাশাপাশি, এই উদ্যোগের মধ্যে দিয়ে নতুনভাবে নজরদারি ব্যবস্থাও চালু করা হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কলকাতার মতো একটি ঘনবসতিপূর্ণ শহরে পরিত্যক্ত এবং ঝুঁকিপূর্ণ বাড়ি বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে। এই উদ্যোগ একদিকে যেমন দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাবে, তেমনই শহরের বাসিন্দাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করবে। পুরসভা আশা করছে, এই পদক্ষেপ শহরের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করবে এবং যেকোনও দুর্ঘটনা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।