টালা থানাতে বসেই তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ, বিস্ফোরক দাবি সিবিআইয়ের

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক খুন ও ধর্ষণের মামলায় বুধবার আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে শিয়ালদহ আদালতে পেশ করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে এদিন তথ্য প্রমাণ লোপাট এবং এফআইআর দেরিতে দায়ের করার অভিযোগ ওঠে। বুধবার আদালতে সন্দীপ ঘোষের নার্কো টেস্ট এবং পলিগ্রাফ পরীক্ষার বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির কলকাতা শাখার বিশেষজ্ঞ ভিন রাজ্যে থাকায় শুনানি স্থগিত করা হয়।

এদিন আদালতে সন্দীপ ঘোষের আইনজীবী দাবি করেন যে, এফআইআর দেরিতে করার অভিযোগ তাঁর মক্কেলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তিনি জানান, ৯ আগস্ট সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে সন্দীপ টালা থানার তৎকালীন ওসিকে ঘটনাটি জানিয়েছিলেন এবং দুপুর আড়াইটে নাগাদ হাসপাতালের সুপারের মাধ্যমে লিখিত অভিযোগ করা হয়। এই প্রেক্ষিতে এফআইআর দেরিতে দায়েরের অভিযোগ সন্দীপের ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক নয় বলে যুক্তি দেন তিনি। তিনি আরও উল্লেখ করেন, মেডিক্যাল কলেজে কোনও ঘটনা ঘটলে তার প্রাথমিক দায়িত্ব অধ্যক্ষের উপর হলেও, হাসপাতালে ঘটনার ক্ষেত্রে সেই দায়িত্ব হাসপাতাল সুপারের উপর বর্তায়।

অন্যদিকে, অভিজিৎ মণ্ডলের আইনজীবী আদালতে বলেন, টালা থানার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। ফুটেজ এলে অভিজিৎকে সেই অনুযায়ী জেরা করা হবে। তাঁর যুক্তি, টালা থানা ঘটনাস্থল নয় এবং পুলিশকর্মীকে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে অনুমতি নেওয়া হয়নি। অভিজিৎ সাতবার নোটিশ পেয়ে হাজিরা দিয়েছেন এবং গ্রেপ্তারের আগে কারণ স্পষ্ট করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।


অভিজিৎ মণ্ডলের আইনজীবী এ দিন জামিনের আবেদন করেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, অভিজিৎ অভিযোগ পাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং তাঁর বিরুদ্ধে যে ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে, তা জামিনযোগ্য। পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেন, অভিজিৎকে মামলার মূল অভিযোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা যায়নি।

সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে দু”জনকেই ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার আবেদন করা হয়। সিবিআইয়ের আইনজীবী আরজি কর কাণ্ডের পরের জনরোষকে ‘বিরল থেকে বিরলতম’ বলে অভিহিত করেন। তিনি জানান, সিসিটিভি ফুটেজ এবং মোবাইলের ফরেন্সিক রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা চলছে। সিবিআইয়ের তরফে আরও দাবি করা হয়েছে, টালা থানাতেই তথ্য-প্রমাণে গরমিল করা হয়েছে। মিথ্যে কিছু তথ্য যুক্ত করা হয়েছে, বা বদল করা হয়েছে। এদিন আদালত চত্বরেই ”উই ওয়ান্ট জাস্টিস” স্লোগানও ওঠে। সন্দীপ এবং অভিজিতের কঠোর শাস্তির দাবিও তোলেন আইনজীবীদের অনেকেই।