বিচারক আবাসনে হামলায় ক্লোজ এক এসআই

ডায়মন্ড হারবারে বিচারকদের আবাসনে হামলার অভিযোগে আটক এক ব্যক্তি। পাশাপাশি ক্লোজ করা হল বিচারক আবাসনের দায়িত্বে থাকা এক সাব ইন্সপেক্টরকে। তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত। তবে পুলিশ সূত্রে খবর, আবাসনে কোনও হামলার ঘটনা ঘটেনি। হামলার আশঙ্কা থেকে তোলা হয়েছে এমন অভিযোগ। বাসভবনে দুর্বৃত্তদের হামলার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, গত আট তারিখ ডায়মন্ড হারবারের বিচারক তাঁর আবাসনে দুষ্কৃতী হামলার অভিযোগ তোলেন। সেই ঘটনায় বিচারকের এও অভিযোগ,বিচারকদের আবাসনের বিদ্যুতের লাইন বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা হয়েছিল । পৈলান পুলিশ হেডকোয়াটারের কুমারেশ দাসের নির্দেশেই দুষ্কৃতীরা আবাসনে ঢোকে। পরে যখন তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যান তখন এফআইআর নিতে পুলিশ গড়িমসি করে বলেও অভিযোগ। এই নিয়ে বিচারক কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলেন কাছে চিঠি পাঠান।

এই ঘটনার পরই কার্যত নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। প্রায় আধ ঘন্টা ডায়মন্ড হারবার এডিজের কক্ষে বৈঠক হয় জেলা পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে জেলা বিচারকদের। সেখানে ডায়মন্ড হারবার আদালতের একাধিক বিচারক ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। বৈঠকের পর বিচারকদের আবাসনে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।


এ প্রসঙ্গে ডায়মন্ড হারবারের এসপি রাহুল গোস্বামী বলেন, ‘অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে গিয়েছে। কয়েকজন দুষ্কৃতী মুখ ঢাকা অবস্থায় আবাসনের ভিতরে ঘোরাঘুরি করেছে। তেমনটাই দেখা গিয়েছে। ঘটনা জানার পর আইসি সেখানে উপস্থিত হন। এরপর যে সকল সিকিউরিটি ছিল তাঁদের সকলের সঙ্গে কথা বলেন। এই ঘটনায় প্রাথমিক তদন্ত হয়েছে। এফআইআর দায়ের হয়েছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে একজনকে আটক করেছি। বাড়ানো হচ্ছে বিচারক আবাসনের নিরাপত্তা। পুলিশ কর্মীর সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি মেটাল ডিরেক্টর বসানো হচ্ছে আবাসনের সামনে। হামলা হয়েছে এরকম কোনও অভিযোগ পাইনি। আশঙ্কা থেকে একটা অভিযোগ এসেছিল। এফআইআর রুজু করে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলার রুজু করা হয়েছে। তবে কী কারণে এই আশঙ্কা সেদিকটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

এলাকার কাউন্সিলর সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘আমরা বিষয়টি শুনেছি, এক জন লোক কাপড়ে মুখ ঢেকে জজ সাহেবের আবাসনে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। তারা সিসিটিভি ফুটেজ়ও সংগ্রহ করেছে। এই ঘটনা নিয়ে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও ব্যবস্থা নিতে বলেছেন পুলিশকে। গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে বিষয়টি।’

বিচারকেরা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরে বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে পুলিশ সুপার জানান, ইতিমধ্যে ওই ঘটনায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিচারকদের উপর হামলার অভিযোগ যথেষ্ঠ গুরুত্ব সহকারেই দেখা হচ্ছে। এখানে কাউকে ছাড় দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। এক জন পুলিশ আধিকারিকের নামে অভিযোগ এসেছিল। সেটাও গুরুত্ব সহকারে আমরা দেখছি।’ বিচারকের আবাসনে হামলার অভিযোগ। ঘটনায় আটক এক ব্যক্তি। পাশাপাশি ক্লোজ করা হল বিচারক আবাসনের দায়িত্বে থাকা এক সাব ইন্সপেক্টরকে। তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত। তবে পুলিশ সূত্রে খবর, আবাসনে কোনও হামলার ঘটনা ঘটেনি। হামলার আশঙ্কা থেকে তোলা হয়েছে এমন অভিযোগ।

এ দিকে এই ঘটনায় রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়ালকে চিঠি দিয়েছেন। বিচারকদের নিরাপত্তা দাবি যেমন করেছেন,তেমনই অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন তিনি।