ডাক্তারদের অনশন প্রত্যাহার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিবকে চিঠি নাগরিক সমাজের

জুনিয়র ডাক্তারদের দাবির যথার্থতা এবং তা দ্রুত সমাধানের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নাগরিক সমাজের একাংশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে এই বিষয়ে দ্রুত হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানিয়ে বুধবার সকালে এক ই-মেল বার্তা পাঠানো হয়েছে, যাতে ৭৫ জনেরও বেশি বিশিষ্টজনের স্বাক্ষর রয়েছে। ওই ই-মেলে শিক্ষা, চলচ্চিত্র, চিকিৎসা এবং আইন পেশার অনেক গুণী ব্যক্তি সমর্থন জানিয়েছেন। ই-মেলটিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার প্রতিবাদে এবং হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা, সঠিক পরিকাঠামো, পর্যাপ্ত সরঞ্জাম এবং স্বচ্ছ রেফারেল ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে ৯ আগস্ট থেকে জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলন করছেন। এই দাবিগুলি শুধু ডাক্তারদেরই নয়, রোগী এবং তাঁদের পরিবারগুলিরও গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ই-মেলে আরও বলা হয়েছে যে, সিসিটিভি, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কর্মী, বিশ্রামের জায়গা ও শৌচাগারের ব্যবস্থা, প্রয়োজনীয় ওষুধের সঠিক সরবরাহ এবং মেডিকেল কলেজগুলিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার মতো বিষয়গুলো এখনো পূর্ণতা পায়নি, যা ডাক্তার ও রোগী উভয়ের জন্যই উদ্বেগের কারণ।

সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার উল্লেখও এই ই-মেলে করা হয়েছে, যেমন জয়নগরে শিশু হত্যাকাণ্ড এবং পার্ক স্ট্রিট থানায় মহিলার প্রতি হওয়া অত্যাচার। ই-মেলে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘আরজি করের ঘটনার পরও বিভিন্ন জায়গায় যৌন নিগ্রহ এবং পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি জাগিয়েছে। এই সমস্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে কার্যত একপ্রকার বাধ্য হয়েই জুনিয়র ডাক্তাররা আমরণ অনশনে যেতে বাধ্য হয়েছেন।’
নাগরিক সমাজের মতে, জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ একদম যথার্থ এবং অবিলম্বে সেগুলি সমাধান করা জরুরি। তাঁরা মনে করেন, সরকারের আগের দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা পরিষ্কার করে জানানো দরকার, এবং ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিবের দ্রুত আলোচনায় বসা উচিত। চিকিৎসকদের জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করাও সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, এবং টানা অনশনের ফলে তাঁদের জীবন বিপন্ন হতে দেওয়া উচিত নয়।
এই
ই-মেলটিতে সই করেছেন চলচ্চিত্রের দেবলীনা, ঋদ্ধি সেন, কৌশিক সেন, নাট্যকার রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, অধ্যাপক ঋত্বিকা বিশ্বাস, আইনজীবী সুপ্রতীক শ্যামল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ৫ অক্টোবর থেকে জুনিয়র ডাক্তাররা আমরণ অনশনে বসেছেন । কিন্তু এখনও পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। জুনিয়রদের সমর্থন জানিয়ে প্রতীকী অনশন করেছেন সিনিয়র ডাক্তারেরাও। মঙ্গলবার জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে দাঁড়িয়ে গণইস্তফা দিয়েছেন, সিনিয়র ডাক্তারেরাও।