আরজি কর হাসপাতালে ফের সিবিআই হানা

ফের আরজি কর হাসপাতালে সিবিআই হানা। শুক্রবার বিকেলে আরজি কর হাসপাতালে নির্যাতিতা চিকিৎসকের মা বাবাকেও নিয়ে যায় সিবিআই। আশঙ্কা, আরজি করের সেমিনার রুমে নিয়ে যাওয়া হতে পারে নির্যাতিতার পরিবারকে। ঘটনার দিন তাঁরা ঠিক কী দেখেছেন, কোথায় কোথায় কারা কারা ছিলেন— এই সব বিষয় আরও স্পষ্টভাবে জানতেই সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপ।

উল্লেখ্য, এর আগেও বহুবার আরজি কর হাসপাতাল চত্বরে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে সিবিআই। হাসপাতালের সেমিনার রুম ছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান পরিদর্শন করেন এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিক বার আলোচনা করেন তাঁরা। শুক্রবার তদন্তকারীরা কলেজ অধ্যক্ষের অফিস প্ল্যাটিনাম জুবিলি বিল্ডিংয়ে যান। এছাড়াও, অন্যান্য স্থানও ঘুরে দেখেন তাঁরা। গত ৯ আগস্ট আরজি করের জরুরি বিভাগের চতুর্থ তলার সেমিনার রুম থেকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার হয়। ওই ঘটনার জেরে গত এক মাস ধরে উত্তাল গোটা রাজ্য-রাজনীতি। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই এই ঘটনার তদন্ত করছে। এই ঘটনায় জড়িত এখনও পর্যন্ত একজন সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরজি কর কাণ্ডে বিচারের দাবিতে সাধারণ মানুষ কখনও ‘রাত দখল’ আবার কখনও স্বাস্থ্যভবন অভিযানের ডাক দিয়ে পথে নেমেছেন। জুনিয়র ডাক্তাররা গত মঙ্গলবার থেকে অবিরাম আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সুপ্রিম কোর্টেও স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলাটির শুনানি চলছে। সিবিআই তাঁদের তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে একটি রিপোর্ট সিল করা খামে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে জমা দিয়েছে, তবে সেই রিপোর্টের বিষয়বস্তু এখনও জানা যায়নি।


এর আগেও সিবিআই একাধিকবার আরজি কর পরিদর্শন করেছে এবং ঘটনাস্থলে থ্রি-ডি ম্যাপিং করেছে। ধৃতসহ সাতজনের পলিগ্রাফ টেস্টও করা হয়েছে। এবার সিবিআই শিয়ালদহ আদালতে ধৃতের নার্কো টেস্ট করার আবেদন করেছে। কিন্তু নার্কো টেস্টে ধৃত সঞ্জয়ের সম্মতি না থাকায় আদালত এই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।

মহিলা চিকিৎসক খুন ও ধর্ষণের তদন্তের মধ্যেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও সামনে আসে। অভিযোগ অনুযায়ী, তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি চলছিল। সেই অভিযোগের তদন্তের জন্য ১৬ আগস্ট রাজ্য সরকার একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে। এর পরের দিন উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়া হয়। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। মর্গ থেকে মৃতদেহ উধাও হওয়া থেকে শুরু করে হাসপাতালের জৈব বর্জ্য নিয়েও দুর্নীতির তথ্য উঠে এসেছে। হাসপাতালের প্রাক্তন অতিরিক্ত সুপার আখতার এই বিষয়গুলোতে পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। এই মামলার সূত্র ধরেই এর আগেও সিবিআই আরজি কর পরিদর্শন করেছে।