• facebook
  • twitter
Thursday, 13 March, 2025

ব্যবসায়ী খুন, ট্রলিব্যাগে মিলল দেহ, গ্রেপ্তার ২

ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে , পরিকল্পনা করেই খুন করেছেন তাঁরা।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ফের ট্রলিতে ভরে দেহ লোপাটের চেষ্টা। মঙ্গলবার গভীর রাতে ঘোলা থানার অন্তর্গত কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে একটি ট্রলি থেকে উদ্ধার হয়েছে এক ব্যক্তির মৃতদেহ। তাঁর হাত মুখ সেলোটেপ দিয়ে আটকানো ছিল এবং গলার নলি কাটা ছিল। গাড়িচালকের সহায়তায় ঘটনাটি পুলিশের সামনে আসে। উদ্ধার হওয়া দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। টাকা নিয়ে সমস্যার জেরেই ওই ব্যক্তিটিকে খুন করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রথমে ঘটনাস্থল থেকেই একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির কাছে একটি বাড়ি থেকে খুনে অভিযুক্ত অপর ব্যক্তিটিকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

সূত্রের খবর, মৃতের নাম ভাগারাম দেবাসি। তিনি বড়বাজারের কাপড়ের ব্যবসায়ী ছিলেন। রাজস্থানের বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে তিনি কলকাতার গিরিশ পার্কে থাকতেন। ধৃত কৃশপাল এবং করণ সিংহের কথা অনুযায়ী, তাঁদের থেকে চুড়িদার কিনতেন ভাগারাম। প্রায় ৮ লক্ষ টাকা তাঁদের থেকে ধার নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু টাকা ফেরত চাইলে দীর্ঘদিন ধরে ভাগারাম নানারকম বাহানা করছিলেন। মঙ্গলবার সেই টাকা চাইতেই গিরিশ পার্কের বাড়িতে যান ধৃতরা। আর তারপরই কফিতে বিষ মিশিয়ে ভাগারামকে খাওয়ানো হয়। তিনি জ্ঞান হারালে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলার নলিও কাটা হয়েছিল। এরপর ধৃতরা নীল ট্রলিব্যাগে করে মৃতের দেহ নিয়ে দমদম নাগের বাজার এলাকা থেকে রাত ৯টা নাগাদ ক্যাব বুক করে নদীয়া যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। পরিকল্পনা ছিল, কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের কাছে নির্জন জায়গায় ট্রলিটি ফেলে দিয়ে গা ঢাকা দেবেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাতে নাগেরবাজার থেকে ক্যাবে করে যাওয়ার পথে ঘোলা মহিষপোতার কাছে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের সামনে গাড়ি দাঁড় করাতে বলেন কৃশপাল এবং করণ। গাড়িচালক রাহুল অধিকারী মাঝপথে নির্জন জায়গায় গাড়ি থামানোর কারণ জিজ্ঞেস করলে তাঁরা বিভিন্ন রকম কথা বলতে থাকেন। চালকের দাবি, ভারী ট্রলিব্যাগে কী আছে এইসব প্রশ্ন করলে ধৃতদের সঙ্গে বচসা শুরু হয়। কিছু টাকা দিয়ে তাঁকে মুখ বন্ধ করার কথা বলা হয়েছিল। টাকা নিতে অস্বীকার করেছিলেন চালক। কথা কাটাকাটি দেখে রাতে টহলরত পুলিশ এগিয়ে এসেছিলেন। পুলিশ দেখে কৃশপাল পালিয়ে যান। এরপর পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে গাড়ি থেকে ট্রলিব্যাগে দেহ, নগদ ৬৫ হাজার টাকা এবং রক্তমাখা অস্ত্র উদ্ধার করেন। গ্রেপ্তার করা হয় করণকে। পালিয়ে গেলেও পরে ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে কৃশপালকে মুক্তারামবাবু স্ট্রিট থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে , পরিকল্পনা করেই খুন করেছেন তাঁরা। কোথায় দেহ লোপাট করবেন সেই জায়গাও আগে থেকে ঠিক করে রেখেছিলেন। শেষ পর্যন্ত গাড়িচালকের উপস্থিত বুদ্ধির জন্য তাঁরা ধরা পড়ে যান।