সততার জন্য  উবের চালককে  পুরস্কৃত করল বারাসত পুলিশ

অভাব-অনটনই চিরকালের সঙ্গী। উৎসবের মরসুমেও ছুটি নেই। দিনের পর দিন শুধু অক্লান্ত পরিশ্রম। জীবনের এই চড়াই-উতরাইয়ের পরেও সততাকে ত্যাগ করেননি রাজারহাটের বাসিন্দা উবের চালক হাবিবুর রহমান বৈদ্য। উবের চালকের সৎ এবং মানবিক রূপে মুগ্ধ বারাসত পুলিশ। এমনকি হাবিবুরের সততার প্রমাণ মিলতেই বারাসত থানার আইসি মৈনাক ব্যানার্জি তাঁকে পুষ্পস্তবক এবং মিষ্টি উপহার দিয়ে সম্মানিতও করলেন।

ঘটনাটি বৃহস্পতিবার বিকেলের। দত্তপুকুরের বাসিন্দা মনীষা মৈত্র নামক এক তরুণী বারাসত থেকে হাবিবুরের উবেরে ওঠেন। তাঁর গন্তব্য ছিল দমদম এয়ারপোর্ট। সেই মতো হাবিবুর তাঁকে দমদম এয়ারপোর্টেই নামিয়ে দেন। কিন্তু মনীষা ভুলবশত তাঁর লক্ষাধিক টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কারের একটি ব্যাগ গাড়িতে রেখেই নেমে পড়েন।
এরপর হাবিবুর রহমান রাজারহাট লাউহাটির দিকে রওনা দেন। তবে মাঝপথেই বারাসত থানার তরফ থেকে হাবিবুরকে ফোন করে জানানো হয়, মনীষা মৈত্রর ব্যাগটি তাঁর গাড়িতেই রয়েছে এবং তিনি যেন দ্রুত থানায় এসে ব্যাগটি ফিরিয়ে দেন। যেমন নির্দেশ তেমন কাজ। পুলিশের ফোন পাওয়া মাত্রই নিজ গাড়িতে তড়িঘড়ি ব্যাগটি খোঁজেন উবের চালক। এরপর ব্যাগ মিলতেই হাবিবুর বারাসত থানায় হাজির হয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন লক্ষাধিক টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকারের ওই ব্যাগটি। উবের চালকের সততার পরিচয় পেয়ে তাঁকে সম্মানিত করে বারাসত পুলিশ।
পুলিশি-তৎপরতা এবং উবের চালকের সততায় আনন্দিত মনীষা মৈত্রও। এ প্রসঙ্গে মনীষার বক্তব্য, ‘বর্তমান সময়ে হাবিবুর রহমানের মতো সৎ মানুষ দেখা যায় না। তাঁকে অনেক ধন্যবাদ। আমি বাড়ি ফেরার পথে বারাসত থানার দ্বারস্থ হই। পুলিশে অভিযোগ করা মাত্র তাঁরাও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখেছেন বলেই আমি ব্যাগটি ফিরে পেয়েছি।’ এ বিষয়ে হাবিবুর রহমানের বক্তব্য, ‘বারাসত পুলিশের তরফে ফোন পাওয়া মাত্রই আমি তৎপর হই। সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারই আমাকে জানিয়ে দিয়েছিলেন ব্যাগটি গাড়ির পেছনের সিটে রয়েছে। এরপর আমি বারাসত থানায় এসে অফিসারের হাতে ব্যাগটি তুলে দিয়েছি।’
ঘটনায় জোড়া স্বস্তি। ধনলক্ষ্মীর আরাধনার দিনে ঐশ্বর্য হারিয়েও পুলিশি তৎপরতায় তা আবার ফিরে পাওয়ায় খুশি দত্তপুকুরের তরুণী। অন্যদিকে, এক যাত্রীর হারানো ব্যাগ ফিরিয়ে দিতে পেরে মানসিক শান্তি পেয়েছেন উবের চালকও। এক্ষেত্রে উবের চালকের সততা এবং নিষ্ঠার প্রশংসা করে তাঁকে বাহবা দিতেও পিছপা হয়নি বারাসত পুলিশ। সততাকে পুরস্কৃত করায় প্রশাসনিক মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে বারাসত পুলিশও।