প্রার্থীর নাম ঘোষণা হতেই হাড়োয়ায় প্রকাশ্যে তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীকোন্দল’

১৩ নভেম্বর রাজ্যের ৬ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। রবিবারই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে শাসক তৃণমূল। কোনও বড় মুখ নয়, বরং সংগঠনের লোকেদের উপরই ভরসা রেখেছে ঘাসফুল শিবির। কিন্তু প্রার্থী তালিকা প্রকাশ্যে আসতেই হাড়োয়া বিধানসভার উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্পষ্ট হল তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। হাড়োয়ার প্রার্থীকে ‘না পসন্দ’, এই মর্মে পড়ল পোস্টার। নীচু তলার কর্মীদের মধ্যে স্পষ্ট হল সমান্তরাল বিভাজন।

আসন্ন বিধানসভা উপনির্বাচনে হাড়োয়া কেন্দ্রের প্রার্থী শেখ রবিউল ইসলাম। তিনি বসিরহাটের প্রয়াত সাংসদ হাজি নুরুল ইসলামের ছেলে। কিন্তু রবিউলের নাম ঘোষণা হতেই দ্বিধাবিভক্ত তৃণমূলের নীচু তলার কর্মীরা। হাড়োয়া চত্বরে চোখ রাখলে সেই প্রমাণও মিলবে। রবিবার প্রার্থী ঘোষণার পরই শেখ রবিউল ইসলামের গলায় মালা পরিয়ে গোলাবাড়ি চত্বরে প্রচারে নেমে পড়ে দলের কর্মীদের একাংশ। অন্যদিকে দলের নীচু তলার কর্মীদের একাংশ শুরু করে পোস্টারিং। এলাকার বিভিন্ন অংশে রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ে। পোস্টারে উল্লেখ, ‘হাড়োয়া বিধানসভার উপনির্বাচনে কোনও বহিরাগত প্রার্থী চায় না তৃণমূল’। এছাড়াও ‘ভূমি পুত্র’র দাবিও স্পষ্ট হয় পোস্টারে।
রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে কেন এই ক্ষোভ? আসলে রবিউল আদতে দেগঙ্গার ছেলে। সেই কারণেই রবিউলকে বহিরাগত উল্লেখ করে ভূমি পুত্র-কে প্রার্থী হিসেবে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেসের নীচু তলার কর্মীদের একাংশ। আর তাই ভোটের আগে এলাকায় রবিউলের বিরুদ্ধে একাধিক পোস্টার পড়েছে বলে মনে করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও এ বিষয়ে খুব একটা মাথাব্যথা নেই রবিউলের। তিনি আপাতত প্রচারেই মনোনিবেশ করতে চাইছেন।
হাড়োয়া বিধানসভা আসনের দাবিদার ছিল সবথেকে বেশি। এই বিধানসভার শেষ বিধায়ক ছিলেন হাজি নুরুল ইসলাম। চব্বিশের লোকসভা ভোটে জয় পেয়ে তিনি বসিরহাটের সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন। কিন্তু গত ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি প্রয়াত হয়েছেন। তাই বসিরহাট লোকসভার পাশাপাশি হাড়োয়া বিধানসভা কেন্দ্রও ফাঁকা। হাড়োয়ার প্রার্থী নিয়ে যখন জল্পনা চলছে ঠিক তখনই এই কেন্দ্রে দেখা যায় একটি ফ্লেক্স। তাতে লেখা ছিল, ‘আসন্ন ১২১ হাড়োয়া বিধানসভার উপনির্বাচনে হাড়োয়া বিধানসভার ভূমিপুত্রকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায় সাধারণ জনগণ।’ এবার প্রার্থী ঘোষণার পরেও সেই একই দাবি তুলতে শুরু করল তৃণমূলের একাংশ।
এ বিষয়ে মুখ খুলেছে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘অনেকের মধ্যেই ভোটে দাঁড়ানোর উৎসাহ থাকে। প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর অন্যদের মধ্যে বিরক্তি লক্ষ্য করা যায়। তারই বহিঃপ্রকাশ এই পোস্টারে দেখা যায়’। যদিও তৃণমূল মনে করে, ভোট যত এগিয়ে আসবে ততই সমস্যার সমাধান হবে।