বিচারের দাবিতে উত্তাল রবিবারের রাজপথ, নৈহাটিতে প্রতিবাদ মিছিলে হামলার অভিযোগ

আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তাল রবিবারের রাজপথ। পথে নামেন টলিউডের কলাকুশলী থেকে শুরু করে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের সমর্থকরা। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি হবে। তার আগের রাতে ফের রাস্তায় নামলেন নাগরিকরা। শহরের বিভিন্ন জায়গায় হয় মিছিল, জমায়েত। সোদপুর থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত করা হয় মানববন্ধন। পথ অবরোধ এবং মিছিল করেও অনেকে প্রতিবাদে শামিল হন। কালো বেলুন উড়িয়ে অভিনব প্রতিবাদও করা হয়। এরই মধ্যে নৈহাটিতে এক প্রতিবাদ মিছিলে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। আরজি কর কাণ্ডে বিচারের দাবিতে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ থেকে মিছিল করেন চিকিৎসকরা।

এই মিছিল থেকেই উই ওয়ান্ট জাস্টিস লেখা কালো বেলুন ওড়ানো হয়।  মিছিলে উপস্থিত ছিলেন আরজি কর মেডিক্যালে মৃত চিকিৎসক তরুণীর বাবা–মাও।  রবিবার আরজি কর কাণ্ডে বিচার চেয়ে বয়স্ক নাগরিকরা সোদপুর থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত দীর্ঘ ১৫ কিলোমিটার পথ জুড়ে মানববন্ধনে শামিল হয়েছিলেন। বিটি রোড ধরে রাস্তার এক পাশে লাইন করে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁরা। সিমলা পল্লিতে স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ির সামনে থেকে মিছিল করে শ্যামবাজার পর্যন্ত যান ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান দলের সমর্থকরা।  মিছিলে ছিল দুই দলের পতাকা ও বিচারের দাবিতে লেখা প্ল্যাকার্ড। ফুটবল সমর্থকদের পাশাপাশি এদিন এই মিছিলে পা মিলিয়েছেন শহরের সাহিত্যিক, নাট্যব্যক্তিত্ব এবং শিল্পীরা।
এদিন টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো থেকে শুরু হয় কলাকুশলীদের মিছিল। তারপর হাজরায় মিছিল শেষ করে সেখানেই অবস্থানে বসেন তাঁরা। করেন মানববন্ধনও। হাজরা মোড়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদে শামিল হন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। এছাড়াও অপরাজিতা আঢ্য, জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, মানসী সিনহা থেকে শুরু করে বহু তারকা এদিন মিছিলে হাজির ছিলেন। আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে রবিবার বিকেলে পথে নেমেছিলেন কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরাও। ‘কুমোরটুলি দিচ্ছে ডাক, আমার দুর্গা বিচার পাক’– এই স্লোগানে পথে নেমেছিলেন তাঁরা। মিছিলে শামিল হন শিল্পী সনাতন দিন্দাও।

বিভিন্ন জায়গার পাশাপাশি নৈহাটিতেও আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেই মিছিল চলাকালীনই হামলার অভিযোগ ওঠে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি মিছিলে বাধা দেওয়া ও মাইকের তার ছিঁড়ে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। এক আন্দোলনকারী জানিয়েছেন, ‘আমরা সকলে পার্কের সামনে জমায়েত হয়েছিলাম। পরে সেখানে একদল মানুষের ঢল ঢুকে পড়ে।  কিছুটা পেরিয়ে আসার পর থেকেই ওরা ঝামেলা অশান্তি শুরু করে। গায়ে হাত তোলে। আমাদের মাইক্রোফোনের সমস্ত তার ছিঁড়ে দেওয়া হয়। আমরা কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে স্লোগান দিইনি। প্রশাসনের বিরুদ্ধে কোনও স্লোগান দিইনি। কিন্তু রাজনৈতিক লোকজন এখানে অনুপ্রবেশ করে রীতিমত আমাদের গায়ে হাত চালিয়েছে। পুলিশকে মাঝখানে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষে এসে দুই তিনকে দেখতে পেলাম। কিন্তু তাঁদের কোনও তৎপরতা দেখতে পেলাম না। পুলিশের তৎপরতা থাকলে এমন কিছু ঘটত না।’


আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে এদিন পথে নামেন রিকশা চালকরাও। এদিন রিকশা নিয়েই হেদুয়া থেকে কলেজস্ট্রিট পর্যন্ত মিছিল করেন তাঁরা। কলেজস্ট্রিটে পৌঁছে তাঁরা বিক্ষোভও দেখান।