দীপাবলির শেষে স্বল্প বিরতি কাটিয়ে স্বমহিমায় সরাসরি রাজনৈতিক ময়দানে ‘কামব্যাক’ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের রদবদল প্রসঙ্গ উত্থাপন করে ‘ঝাঁকুনি’ দিয়েছিলেন দলের অন্দরেই। এবার পূর্ব-পরিকল্পনা মাফিক নিজের সংসদীয় এলাকা ডায়মন্ড হারবারে গিয়ে শনিবার বিকেলে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন তৃণমূল সেনাপতি। আমতলার দলীয় কার্যালয়েই অনুষ্ঠিত হলো এই ‘বিজয়া সম্মিলনী’-এর অনুষ্ঠান। বলা যেতে পারে, অভিষেকের চোখের সফল অস্ত্রোপচারের পর ডায়মন্ড হারবারে এটাই তাঁর প্রথম ‘মিলন মেলা’। প্রসঙ্গত, এই অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন অভিষেকের সহকর্মী সুমিত রায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মিডিয়া কোঅর্ডিনেটর ভরতেন্দু শর্মা।
উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচন মিটেছে ৪ মাসের কিছু বেশি সময় হয়েছে, এর মধ্যেই জনসাধারণের অভাব-অভিযোগ শুনে তার সমাধান সূত্র খুঁজতে তৎপর হয়েছেন অভিষেক। এদিন তাঁরই নির্দেশ মতো আমতলার দলীয় কার্যালয়ের বাইরে খোলা হয় ‘হেল্প ডেস্ক’। যেখানে ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের মানুষরা তাঁদের এলাকার অভাব, অভিযোগের কথা জানাতে পারবেন অভিষেকের প্রতিনিধিদের কাছেই। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন সাংসদ খোদ। পাশাপাশি একাধিক উদ্যোগের কথা জানতে পারবেন মানুষ। সেই মতো বহু মানুষ একে একে লাইন দিয়ে নিজস্ব অভাব-অভিযোগ জানাচ্ছেন এবং অভিষেকের প্রতিনিধিরা তা লিপিবদ্ধ করে নিচ্ছেন, এই চিত্র ক্যামেরাবন্দি হয় এদিন।
এদিন দলীয় কার্যালয়ে অভিষেকের আগমনকে কেন্দ্র করে জনপ্লাবন নামে আমতলার পথে। অভিষেক আমতলার দলীয় কার্যালয়ে পৌঁছতেই তাঁর নামে জয়ধ্বনি ওঠে, শীঘ্রই তিনি যাতে সুস্থ হয়ে ওঠেন সে প্রার্থনাও শোনা যায়। ফুল-বর্ষণে এদিন সাংসদকে স্বাগত জানান ডায়মণ্ড হারবারবাসী। রাস্তা জুড়ে দলীয় পতাকা হাতে সারিবদ্ধ কর্মী-সমর্থক থেকে সাধারণ মানুষের উচ্ছ্বাস এবং উন্মাদনা ছিল নজরকাড়া। উল্লেখ্য, এদিন দলীয় কার্যালয়ের দুয়ার খোলা হয়েছিল দলীয় নেতা-কর্মী থেকে আপামর জনসাধারণের জন্য।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ডায়মন্ড হারবার লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রত্যেক বিধায়ক, পুরপ্রতিনিধি থেকে পৌরপ্রধানরা, পঞ্চায়েত প্রধান সহ প্রত্যেক স্তরের সকল জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একের পর এক সাক্ষাৎ করে কুশল বিনিময় করেন যুবরাজ। পাশাপাশি উপস্থিত হয়েছিলেন সাতগাছিয়া বিধানসভার তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শওকত মোল্লা, বিষ্ণুপুর ২নং ব্লক সভাপতি নবকুমার বেতাল, জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর খান, সাতগাছিয়ার বিধানসভার বিধায়ক মোহন নস্কর এবং বজবজ বিধানসভার বিধায়ক অশোক দেব সহ প্রমুখ। সাংসদকে এদিন ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় একাধিক উপহারও। রাজনৈতিক মহল বলছে, সংক্ষিপ্ত বিরতি শেষে বিজয়া সম্মিলনীর মাধ্যমে জনসংযোগ শুরু করলেন অভিষেক। তবে এদিন চোখে অস্ত্রোপচারের কারণে বিশেষ চশমা পরেই দেখা যায় তাঁকে। সর্বোপরি সাংসদকে এতদিন পর সুস্থ অবস্থায় নিজেদের মধ্যে পেয়ে আপ্লুত কর্মী-সমর্থকরা।