• facebook
  • twitter
Thursday, 19 September, 2024

পানিহাটি শ্মশানের তথ্যে অভয়ার মৃত্যুর সময় নিয়ে বিস্তর ‘অসঙ্গতি’ প্রকাশ্যে এল

পানিহাটির যে শ্মশানে অভয়াকে দাহ করা হয়েছিল, সেখানের রেজিস্টারে লেখা, ‘মৃত্যুর সময় দুপুর ১২টা ৪৪ মিনিট।’

এবার অভয়ার মৃত্যুর সময় নিয়ে বিস্তর গরমিল প্রকাশ্যে এল পানিহাটি শ্মশানের তথ্যে। আরজি করের চিকিৎসক তরুণীর মৃত্যুর যে সময় ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল, তা পানিহাটি শ্মশানে জারি করা মৃত্যুর শংসাপত্র থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন!
৯ আগস্ট ঠিক কখন মৃত্যু হয়েছিল চেস্ট মেডিসিন বিভাগের তরুণী চিকিৎসকের? এই প্রশ্ন নিয়েই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। কারণ, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের সঙ্গে মিলই নেই মৃত্যুর শংসাপত্রের? পানিহাটি শ্মশানের পক্ষ থেকে এই বিস্ফোরক দাবি করা হচ্ছে।

এই ‘অসঙ্গতি’ প্রকাশ্যে আসতেই, শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এই বদলে যাওয়া সময় নিয়ে এখন জল্পনা শুরু হয়েছে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৯ আগস্ট ভোর ৩টে থেকে সকাল ৬টার মধ্যে মৃত্যু হয় অভয়ার। কিন্তু শ্মশানের রেজিস্টারের নথি অন্য কথা বলছে। পানিহাটির যে শ্মশানে অভয়াকে দাহ করা হয়েছিল, সেখানের রেজিস্টারে লেখা, ‘মৃত্যুর সময় দুপুর ১২টা ৪৪ মিনিট।’

এই রেজিস্টার দেখেই ঘাট সার্টিফিকেট তৈরি হয়েছে। সেক্ষেত্রে দু’টি নথিতে উল্লেখ করা সময়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক দেখা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে কী করে নির্যাতিতার মৃত্যুর সময়টা বদলে গেল?‌ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এই বিষয়ে শ্মশানের ম্যানেজার বলছেন, ‘‌যে কেউ বললেই তো আর লিখতে পারব না। যে সময়টা ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা ছিল, সেটাই লেখা হয়েছে। এখানে কোনও ভুল হচ্ছে না।’‌

সময়ের এই বিস্তর গরমিল নিয়ে অভিযোগ জানান অভয়ার বাবা–মাও। মৃত তরুণী চিকিৎসকের বাবা বলেন, ‘আমার মেয়েকে ধর্ষণ ও খুনের পিছনে অনেক বড় চক্রান্ত রয়েছে। বিষয়টিকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতেই এই চক্রান্ত।’‌

এদিকে এই সময়ের অসঙ্গতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাসও। তাঁর বক্তব্য, ‘এটা তো বড় অসঙ্গতি। এটা কেমন করে হয়? এর থেকে অনেক কিছু সামনে আসবে। এই অপরাধ যারা করেছে, তাদের গ্রেফতার করতে হবে।’‌

প্রসঙ্গত, গত ৯ আগস্ট আরজি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার রুম থেকে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। ফরেনসিক পরীক্ষার পর সেদিনই আরজি কর হাসপাতালে অভয়ার ময়নাতদন্ত হয়। তারপর রাতে বাবা–মায়ের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হয়। ওই রাতেই দাহ হয়ে যায়।

এই ঘটনায় সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশ। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশে, এই ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। সঞ্জয়কে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয় কলকাতা পুলিশ। এখন অভিযুক্ত সঞ্জয় জেল হেফাজতে রয়েছে। সিবিআই তদন্তে নামার পর ইতিমধ্যেই ১৫ দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে আরজি কর হাসপাতালের মর্গে এসেছিল সিবিআই। সেখানে অনিয়ম রয়েছে বলে তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে সিবিআই। কিন্তু তদন্ত কতদূর এগোল, তা সিবিআইয়ের তরফে এখনও জানানো হচ্ছে না। এদিনও সিবিআই দপ্তরে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হন আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। এবার অভয়ার মৃত্যুর সময় নিয়েও গরমিল প্রকাশ্যে এল।