নিউ দিল্লি: গতকাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জম্মু-কাশ্মীরের নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে পৌরোহিত্য করেন। উপত্যকায় ক্রমাগত সন্ত্রাস দমন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতেই এই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডাকেন।
পাশাপাশি, তিনি ইউএপিএ ধারার যথাযথ প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব বাড়িয়েছেন। তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার পক্ষে জোর দিয়েছেন। পুরো উপত্যকাকে নিরাপত্তা রক্ষীদের কব্জায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি স্থানীয় পুলিশ, সেনা এবং কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলেছেন। এই কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে স্থানীয় গোয়েন্দাদের শক্তিশালী করারও নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা এবং জম্মু ও কাশ্মীরের সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার সময়, শাহ সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান জোরদার করার এবং সন্ত্রাসের আঁতুর ঘরকে সম্পূর্ণ নির্মূল করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।”
এদিন এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা, গোয়েন্দা ব্যুরোর পরিচালক তপন ডেকা, জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা এবং সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডে।
সম্প্রতি রাজৌরি জেলার পুঞ্চ এলাকায় সন্ত্রাসবাদীরা সেনাবাহিনীর দুটি গাড়িতে অতর্কিতে হামলা চালায়। এই হামলায় চার নিরাপত্তাকর্মী নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। ঘটনার মাত্র কয়েকদিন পর এই উচ্চ স্তরের নিরাপত্তা সংক্রান্ত পর্যালোচনা বৈঠক করা হল।
প্রসঙ্গত হামলার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করার পরেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়। সেই সময় নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে তিনজন স্থানীয়কেও হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
অন্যদিকে গত বছরের নভেম্বরে, রাজৌরির কালাকোটে সেনাবাহিনীর বিশেষ বাহিনী সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু করার পরে দুই ক্যাপ্টেন সহ পাঁচজন সেনাও নিহত হন। গত বছর এপ্রিল এবং মে মাসে রাজৌরি-পুঞ্চ অঞ্চলে জোড়া আক্রমণে ১০ জন সেনা নিহত হন। এই অঞ্চলটি ২০০৩ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে সন্ত্রাসবাদ মুক্ত ছিল বলে দাবি করা হয়। তারপরে ঘন ঘন সংঘর্ষ ঘটতে শুরু করে। ২০২১ এবং ২০২২ সালে এই এলাকায় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের সময় ৩৫ জনেরও বেশি সেনা শহিদ হন।