মহামারী করোনা ভাইরাস অনেকের রুটিরুজি কেড়ে নিয়েছে। আবার এই ভাইরাসের দৌলতেই তৈরি হচ্ছে এক নতুন বাজার। স্যানিটাইজার, হ্যান্ডওয়াশ থেকে মাস্ক এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর তালিকায়। আর সেই বাজারকে ধরতে প্রতিযোগিতার শেষ নেই। আগামী দিনে যে মাস্কও মানুষের ফ্যাশন স্টেটমেন্ট হয়ে উঠতে পারে তার নজির মিলতে শুরু করেছে।
কিছুদিন আগেই কর্নাটকের এক স্বর্ণকার রুপোর মাস্ক বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। এবার কেরলের ফোটোগ্রাফার তৈরি করলেন ‘যেমন দেখতে, তেমন মাস্ক’।
মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হওয়ার পরে অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন এখন থেকে মানুষের মুখ দেখা চেনা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। কারণ, মাস্ক যে মুখের অর্ধেকটাই ঢেকে রাখে। ছেলেদের গোঁফের বাহার আর মেয়েদের লিপস্টিকের রং আর দেখা যাবে না বলেই মনে করা হচ্ছিল। সেই সমস্যা দূর করলেন কেরলের ফোটোগ্রাফার।
রাজ্যের কোট্টায়াম শহরের বাসিন্দা বিনেশ পাল নিজের স্টুডিওতেই অর্ডার মাফিক এমন মাস্ক তৈরি করে দিচ্ছেন। দামও খুব বেশি রাখেননি। এক একটি মাস্ক ৬০ টাকা। এমন মাস্ক যা পরে থাকলেও চেনা যাবে স্পষ্ট। চাহিদাও কম নয়।
বিনেশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই তিন হাজার মাস্ক বানিয়ে ডেলিভারি করেছেন। এখনও হাজার পাঁচেক অর্ডার রয়েছে। কিন্তু এমন ভাবনা এল কী করে? বিনেশ জানিয়েছেন, লকডাউনের মধ্যে যখন মাস্ক পরা বাধ্যতামূল হল তখন একদিন আমি পাড়ারই একটা দোকানে যাই। কিন্তু চেনা দোকানদার মাস্ক পরা আমায় চিনতে পারেন না। তখনই এমন একটা কিছু করার কথা মাথায় আসে। আমার স্টুডিও পার্সোনালাইজ টি-শার্ট, কফি মগ ছাপা হয়। সেই সঙ্গে মাস্ক তৈরি শুরু করি। প্রথমে নিজের তারপর অর্ডার নেওয়া শুরু হয়।
পারিবারিক সূত্রেই বিনেশের এই স্টুডিও। প্রায় ৫৫ বছরের পারিবারিক ব্যবসা। বিয়ের কাজেই মূলত চলে ব্যবসা। লকডাউনের জেরে সেই ব্যবসা ক্ষতির মুখে পড়ে। এখন সেটাকেই বিনেশ বাঁচিয়ে তুলেছেন অভিনব মাস্ক তৈরি করে। এখন আট থেকে আশি সব বয়সের অর্ডারই নাকি পাচ্ছেন তিনি। এক একটা মাস্ক ছাপতে সময় লাগে ১৫ মিনিট। ক্রেতারাও খুশি।
বিনেশ শুধু একটা শর্ত রেখেছেন। হাসি মুখের ছবি দিয়েই তৈরি করছেন মাস্ক। সুদূর কেরলে এখন এই মাস্ক মিললেও চিন্তা নেই। খুব তাড়াতাড়ি কলকাতা-সহ আপনার শহরেও এসে যাবে এমন হাসি মুখের মাস্ক।