উত্তরপ্রদেশে বিজেপির বিপুল জয়ের ফলে যোগী আদিত্যনাথ এমন কিছু কীর্তি গড়েছেন যা উত্তরপ্রদেশের নিরিখে অভাবনীয়।
প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মেয়াদ পুরো করে টানা দ্বিতীয় দফায় জিতলেন যোগী। গত ৭০ বছরে রাজ্যে ২১ জন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন।
এর আগে কেউ এই কৃতিত্ব অর্জন করতে পারেননি। দ্বিতীয়ত, টানা দ্বিতীয়বার জয়ী মুখ্যমন্ত্রীর তালিকায় পঞ্চম যোগী আদিত্যনাথ।
এর আগে ১৯৫৭-তে সম্পূৰ্ণানন্দ, ১৯৬২তে চন্দ্ৰভানু গুপ্তা, ১৯৭৪-এ হেমবতী নন্দন বহুগুণা এবং ১৯৮৫-তে নারায়ণ দত্ত তিওয়ারি এই কৃতিত্ব অর্জন করেন।
তৃতীয়ত, ৩৭ বছরে প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ক্ষমতা ধরে রাখলেন যোগী। অখণ্ড উত্তরপ্রদেশে শেষবার এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন ১৯৮৫-তে নারায়ণ দত্ত তিওয়ারি।
চতুর্থ, অতীতে যে সমস্ত মুখ্যমন্ত্রী ফের জিতে ক্ষমতা ধরে রেখেছিলেন, সকলেই কংগ্রেসের।
বিজেপির প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এই সাফল্যের মুখ দেখলেন যোগী তাঁর আগে বিজেপির তিন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং, রামপ্রকাশ গুপ্তা এবং রাজনাথ সিং একাজে ব্যর্থ হন।
পঞ্চম, ১৫ বছরে প্রথম বিধায়ক হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসনে যোগী। তিনি বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন।
২০০৭-২০১২ মায়াবতী এবং ২০১২-২০১৭ অখিলেশ যাদব, দু’জনেই ছিলেন বিধান পরিষদের সদস্য। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর যোগীও বিধান পরিষদের সদস্য হন।
ষষ্ঠ, তৃতীয় মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করেছেন যোগী। এর আগে মায়াবতী এবং অখিলেশ যাদব ছাড়া কেউ মুখ্যমন্ত্রিত্বের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। সপ্তম, নয়ডা অভিশাপ’ মুক্তি।
নয়ডা একটি রেসিডেন্সিয়াল তথা ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি। গৌতম বুদ্ধ জেলায় হলেও দিল্লির উপকণ্ঠে।
কথিত আছে, নিজেদের শাসনকালে যে সমস্ত মুখ্যমন্ত্রী নয়ডা সফর করেছেন, তাঁরা হয় পরের ভোটে জিততে পারেননি অথবা মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি।
১৯৮৮-র জুনে মুখ্যমন্ত্রী বীরবাহাদুর সিং নয়ডা থেকে ফেরার কয়েকদিন পরেই ইস্তফা দিতে বাধ্য হন। তখন থেকেই এই প্রবণতা শুরু। তারপর এন ডি তিওয়ারির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা।
এরপর থেকেই নয়ডাকে এড়িয়ে যেতে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রীরা। নয়ডা যাননি মুলায়ম সিং যাদব, কল্যাণ সিং, রাজনাথ সিং, অখিলেশ যাদব।
কিন্তু তা উপেক্ষা করেই ২০১১-র অক্টোবরে একটি অনুষ্ঠানে যান মায়াবতী। এবং পরের বছর বিধানসভা ভোটে হেরে যান।
তাঁর মতোই ২০১৮-য় দিল্লি মেট্রোর অনুষ্ঠানে নয়ডা গিয়েছিলেন যোগী। কিন্তু অভিশাপ মুক্তি ঘটিয়ে তিনি জয়ের মুখ দেখেছেন।