একদিকে সংখ্যালঘু মুসলিমদের মন পেতে ‘সওগাত এ মোদী’ শুরু করেছে কেন্দ্র। আর অন্যদিকে বিজেপি শাসিত এক রাজ্য উত্তরপ্রদেশে নমাজ পড়ার জন্য অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক করল। রমজান মাস চলাকালীনই কড়া নির্দেশিকা জারি করলেন উত্তরপ্রদেশের মিরাটের শীর্ষ পুলিশকর্তা। সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, অনুমতি ব্যতীত রাস্তায় বসে নমাজ পড়া চলবে না। তাতে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হয়।
মিরাট পুলিশের এসপি আয়ুষ বিক্রম সিং বলছেন, বিনা অনুমতিতে রাস্তায় বসে নমাজ পড়লে পাসপোর্ট পর্যন্ত বাতিল করা হতে পারে। তিনি গতবছরের কথা মনে করিয়ে পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ‘গতবার রাস্তায় নমাজ পড়ার জন্য ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এই বছরও কেউ রাস্তায় নমাজ পড়লে আইনি শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।’ মিরাটের এসপি আয়ুষ বিক্রম সিং সাফ বলছেন, ইদগাহ এবং মসজিদ ছাড়া কেউ কোথাও নমাজ পড়তে পারবেন না। কোনও অনুমতি ছাড়া রাস্তায় নমাজ পড়লে কঠোর শাস্তি পেতে হবে। ইদগাহ এবং মসজিদ থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় এভাবে নমাজ পড়া নিয়ে মিরাট পুলিশের কাছে বিস্তর অভিযোগ জমা পড়েছে। সেটার ভিত্তিতেই ওই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। পাসপোর্ট বা লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে। আর একবার পাসপোর্ট বাতিল হলে নতুন করে পাসপোর্ট পেতে অনেক ঝক্কি পোয়াতে হবে। পুলিশের অনুমতি ছাড়া পাসপোর্ট পাওয়া যাবে না।
ইতিমধ্যেই পুলিশ জেলা স্তরে ও স্থানীয় অঞ্চল ভিত্তিক থানাগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছে। রাজনৈতিক দলগুলির থেকেও পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। ইদ ঘিরে যাতে কোনও ধরনের ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক অশান্তির সৃষ্টি না হয়, তার জন্যও পদক্ষেপ করা হয়েছে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, যদি কেউ ভুয়ো তথ্য রটায় বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। ইদ-উল ফিতর উপলক্ষ্যে রাজ্যে নিরাপত্তা বাড়াতে প্রভিন্সিয়াল আর্মড কনস্টেবুলারি ও র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স নামানো হয়েছে। থাকছে সাদা পোশাকেও পুলিশও।
বিভিন্ন জেলায় টহল দেওয়া হচ্ছে। বেশ কিছু এলাকা স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করে সেখানে নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য ড্রোন, সিসিটিভির মাধ্যমে নজরদারি চালানো হবে। পুলিশের এই পদক্ষেপ নিয়ে সমালোচনা করেছেন খোদ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা এনডিএ জোট শরিক আরএলডি প্রধান জয়ন্ত সিং চৌধুরী। তিনি এই পদক্ষেপকে জর্জ অরওয়েলের ১৯৮৪ সালের ‘ডিস্টোপিয়ান’ উপন্যাসে লেখা নিপীড়নমূলক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে তুলনা করেছেন।’