আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে পদত্যাগ করেন জহর সরকার। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেন ১২ সেপ্টেম্বর । তার আগেই ৮ সেপ্টেম্বর সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। গত রবিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাংসদ পদে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে গিয়ে ধনখড়ের দফতরে হাজির হয়ে তাঁর হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেন জহর সরকার।
গত রবিবার তাঁর অসন্তোষের কারণ জানিয়ে করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সতর্ক করে চিঠি দিয়েছিলেন জহর সরকার। আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে দলীয় অবস্থানের বিরোধিতা করে মমতাকে চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমার এত বছরের জীবনে এমন ক্ষোভ ও সরকারের প্রতি সম্পূর্ণ অনাস্থা আগে কখনো দেখিনি। এখন সরকার যেসব ব্যবস্থা নিচ্ছে তা খুবই সামান্য এবং অনেক দেরি হয়ে গেছে। এই প্রতিবাদ শুধু ‘অভয়া’র পক্ষে নয়, রাজ্য সরকার এবং শাসক দলের বিরুদ্ধেও।’
আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় বিচারের দাবিতে আন্দোলন শুরুর পরে মমতা এই আন্দোলনকে ‘বাম-বিজেপির আন্দোলন’ বলে দাবি করেছিলেন। চিঠিতে তার নিন্দা করে জহর লেখেন, ‘আমার বিশ্বাস, এই আন্দোলনে পথে নামা মানুষেরা অ-রাজনৈতিক এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিবাদ করছেন। অতএব রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে এই আন্দোলনকে প্রতিরোধ করা ঠিক হবে না। এঁরা কেউ রাজনীতি পছন্দ করেন না। তাঁরা শুধু বিচার ও শাস্তির দাবি তুলেছেন।’
চিঠি পাওয়ার পর জহর সরকারকে ফোন করেন মমতা। তাঁকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু জহর সরকার জানান, পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তাঁর পক্ষে আর পিছিয়ে আসা সম্ভব নয়।
কিন্তু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন খোদ নিজে ধরনা মঞ্চে গিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে যোগাযোগের পথ সহজ করে দেওয়ার মানসিকতাকে সম্মান জানিয়েছেন জহর সরকার। তিনি যেন বোঝাতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে এমন কিছুই তাঁর প্রত্যাশা ছিল।