• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

বিশ্বের প্রথম, আকাশ থেকে আস্ত হাসপাতাল নামাল সেনা

প্রত্যন্ত এলাকায় চিকিৎসা পরিষেবায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ

সীমান্ত হোক বা দেশের যে কোনও দুর্গম অঞ্চল, যুদ্ধক্ষেত্রে আহত সৈনিকদের চিকিৎসা দিতে এবার আকাশ থেকে নামবে হাসপাতাল। তারই সফল প্রশিক্ষণ হল শনিবার। ১৫ হাজার ফুট উপর থেকে মাটিতে নামল আস্ত হাসপাতাল। ভারতীয় সেনা ও বায়ুসেনার যৌথ উদ্যোগে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে সফল পরীক্ষা হল চলমান হাসপাতালের। এই হাসপাতালের আরেকটি বড় গুন্ এটিকে মাত্র ৮ মিনিটে সাজিয়ে নিয়ে চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করে ফেলা যায়।

বিশ্বে এরকম হাসপাতাল প্রথম। ‘এয়ার লিফট’ই ছিল একমাত্র উপায়। তাতে ঝুঁকি কম ছিল না। এই পরিস্থিতিতে বদল আনতেই অভিনব এই উদ্যোগ। যেখানে চলমান হাসপাতাল পৌঁছে যাবে দুর্গতদের কাছে। এই পদক্ষেপে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হতে চলেছে দেশের সেনাবাহিনী।

সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিনব এই পোর্টেবল হাসপাতালের নাম ‘আরোগ্য মৈত্রী হেলথ কিউব’। আপতকালিন পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে এটি। উদ্দেশ্য যুদ্ধে আহত সেনাকে যুদ্ধক্ষেত্রেই যাতে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া যায়। এদিন বায়ুসেনার হারকিউলিস বিমান পোর্টেবল হাসপাতালকে ১৫ হাজার ফুট উপর থেকে প্যারাশুটের মাধ্যমে নামানো হয় মাটিতে।

জানা যাচ্ছে, ‘আরোগ্য মৈত্রী হেলথ কিউব’ বিশ্বের প্রথম চলমান হাসপাতাল। কেরলের তিরুবন্তপুরমে ভারত সরকারের সংস্থা এইচএলএল লাইফ কেয়ার তৈরি করেছে এটি। ‘প্রোজেক্ট ভীষ্মের’ মাধ্যমে এটি ডিজাইন করা হয়েছে। যেখানে হাসপাতালের ৭২ রকম সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাবে বলে জানা যাচ্ছে। যেখানে থাকবে একটি ছোট আইসিইউ, অপারেশন থিয়েটার, রান্নাঘর, খাবার, জল, একটি বিদ্যুৎ জেনারেটর, রক্ত পরীক্ষার সরঞ্জাম, একটি এক্স-রে মেশিন-সহ আরও নানান ধরনের চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকবে এখানে।

জানা যাচ্ছে, চলমান এই হাসপাতালে গুলিতে আহত জওয়ানের চিকিৎসার পাশাপাশি পোড়া, মাথা, মেরুদণ্ড এবং বুকের আঘাত, ছোট অস্ত্রোপচার, হাড় ভেঙে যাওয়া এবং বিপুল রক্তপাত হচ্ছে এমন রোগীর চিকিৎসা সম্ভব। একসঙ্গে ২০০ জনের বেশি রোগীকে চিকিৎসা দিতে সক্ষম এই হাসপাতাল। চলমান এই হাসপাতালের কিউবগুলি অত্যন্ত হালকা ওজনের হওয়ায় সহজে বহনযোগ্য। এবং এয়ারড্রপের পর যে কোনও জায়গায় দ্রুত স্থাপন করা যেতে পারে।

সেনা সূত্রে জানা যাচ্ছে, সাধারণত একটি হাসপাতাল তৈরি করতে অন্তত দেড় কোটি টাকা খরচ হয় পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ জিনিসপত্র আমদানি করে প্রত্যন্ত জায়গায় তা স্থাপন করে যথেষ্ট কঠিন ও সময় সাপেক্ষ বিষয়। সেখানে এই হাসপাতাল মাত্র ৮ মিনিটে সাজিয়ে নিয়ে চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করে ফেলা যায়। তবে শুধু মাটি নয় সমুদ্র পথেও এটিকে যে কোনও জায়গায় সহজে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।