যদি আমরা ভারতের নিরিখে বিচার করি তাহলে হয়তো বলব এখানকার নারীরা ঘরকুনো বেশি৷ মানে পরিবার তাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ৷ তাই তাকে যদি বলা হয় পরিবার বাদ দিয়ে নিজে একা একা ঘুরে বেড়াও, তাহলে বেশিরভাগই হয়তো রাজি হবেন না৷ কিন্তু আমেরিকার এই সমীক্ষা কিন্তু উল্টোটাই বলছে৷ এই সমীক্ষা বলছে পুুরুষ নন, মহিলারাই বেশি ‘ভবঘুরে’ মানে ঘুরতে পচ্ছন্দ করেন বেশি৷
কেউ দল বেঁধে, কেউবা আবার একা ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন৷ আমেরিকার ভ্রমণবিষয়ক সংস্থা রোড স্কলার তাদের প্রতিষ্ঠানের আওতায় ভ্রমণকারী ব্যক্তিদের ওপর একটি জরিপ করে জানিয়েছে, ৩০ শতাংশ একাকী ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন৷ এদের বলা হয় ‘সলো ট্রাভেলার’৷ আর এই সলো ট্রাভেলারদের ৮৫ শতাংশই নারী৷
যুক্তরাজ্যের যাত্রীবাহী জাহাজ প্রতিষ্ঠান কনডর ফেরির তথ্যমতে, পৃথিবীজুড়ে নারী পর্যটকের সংখ্যা ৬৪ শতাংশ, যেখানে পুরুষ পর্যটকের সংখ্যা মাত্র ৩৬ শতাংশ৷ প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ২০২৩ সালে নারীরা পর্যটনের জন্য ব্যয় করেছেন প্রায় ১২ হাজার ৫০০ কোটি ডলার৷
ভ্রমণে এই লিঙ্গ ব্যবধানের কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, আমেরিকার নারীরা তাদের স্বামীর চেয়ে প্রায় ছয় বছর বেশি বেঁচে থাকেন৷ নারীদের গড় আয়ু যেখানে ৭৯.১ বছর, সেখানে পুরুষের গড় আয়ু ৭৩.২ বছর৷ রোড স্কলারের মতে, সলো ট্রাভেলারদের ৬০ শতাংশই বিবাহিত এবং তাঁরা তাদের সঙ্গীদের ছাড়াই ভ্রমণ করেন৷ কারণ জানতে চাইলে, ৪২ শতাংশ নারী বলেন তাঁদের সঙ্গীর ভ্রমণে আগ্রহ নেই এবং ৪০ শতাংশ নারী বলেন ভ্রমণের ক্ষেত্রে তাঁদের সঙ্গীর পছন্দ ভিন্ন৷ একা ভ্রমণের আরও কিছু কারণ হিসেবে ২৬ শতাংশ নারী বলেন, সলো ট্রাভেল তাঁদের নতুন বন্ধু খুঁজে পেতে সাহায্য করে, ২২ শতাংশ নারী একাকিত্ব উপভোগ করেন, ১৫ শতাংশ নারী বলেন তাঁরা তাঁদের গন্তব্য নির্ধারণ করতে পছন্দ করেন এবং ৬ শতাংশ নারী অন্য কারও রুটিনের সঙ্গে সমন্বয় না করতে পছন্দ করেন৷ তবে পুরুষেরা হাইকিং ও অ্যাডভেঞ্চারের মতো বিশেষ ধরনের ভ্রমণে আগ্রহী হয়৷
পরিসংখ্যান মতে, ভ্রমণে নারী ও পুরুষের পার্থক্য আর্থিক কারণে নয়৷ ২০২২ সালে করা একটি গবেষণায় দেখা যায়, নারীদের গড় আয় পুরুষের চেয়ে প্রায় ১৭ শতাংশ কম৷