আমরা কেজরিওয়ালকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরাব না, স্পষ্ট জানাল সুপ্রিম কোর্ট 

অরবিন্দ কেজরিওয়াল (File Photo: IANS)

দিল্লি, ১৩ মে – ফের স্বস্তির খবর আম আদমি পার্টির শিবিরে। গত শুক্রবার সুপ্রিম রায়ে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ১ জুন অবধি তিনি  জামিনে মুক্ত থাকার অনুমতি পেয়েছেন। সোমবার আবার একটি পিটিশনের জবাবে সুপ্রিম কোর্ট আবার স্পষ্ট জানাল, আবগারি মামলায় গ্রেফতারির কারণে কোনওভাবেই কেজরিওয়ালকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরানো যাবে না।

গত ১০ এপ্রিল এই একই দাবিতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় দিল্লি হাইকোর্টে। বলা হয়, অবিলম্বে কেজরিওয়ালকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু এই মামলায় সাড়া দেওয়ার বদলে  দিল্লি হাইকোর্ট ৫০ হাজার টাকার জরিমানা করে মামলাকারীকে। পরে সুপ্রিম কোর্ট সাময়িক স্বস্তি দেয় কেজরিওয়ালকে। সোমবার বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয়, এই ব্যাপারে পদক্ষেপ করতে চাইলে কেবলমাত্র দিল্লির উপ-রাজ্যপাল করতে পারেন। ‘এখানে আইনি অধিকার আসছে কীভাবে ? উচিত-অনুচিত বোধ থেকে আপনাদের কিছু বলার থাকতেই পারে। কিন্তু এই ব্যাপারে কিছু করার হলে দিল্লির উপ-রাজ্যপাল করতে পারেন। আমরা এতে নাক গলাব না’।
 

গত ২১ মার্চ আবগারি মামলায় গ্রেফতার হন কেজরিওয়াল।অবশেষে নির্বাচনের আবহে  কেজরিওয়ালকে সাময়িক স্বস্তি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যদিও শর্ত রাখা হয়েছে, কেজরিওয়াল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দফতর ও সচিবালয়ে যেতে পারবেন না। তবে কেজরিওয়ালকে নিয়ে ইতিমধ্যেই দিল্লি ও পাঞ্জাবে নতুন উদ্যমে প্রচার চালাচ্ছে আপ। 

বিজেপি কেজরিওয়ালের পদত্যাগ দাবি করে এলেও জেল থেকেই কেজরিওয়ালের সরকার চালানোর পাল্টা জবাব দিয়ে এসেছে আপ নেতৃত্ব।অবশেষে সুপ্রিম কোর্টও জানিয়ে দিল  গ্রেফতারির কারণে কোনওভাবেই কেজরিওয়ালকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরানো যাবে না। 


এদিকে জমি দুর্নীতি সংক্রান্ত বেআইনি আর্থিক লেনদেনের মামলায় ধৃত ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের জামিনের আবেদন খারিজ করেছে আদালত। সোমবার রাঁচীর ‘বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইন’  সংক্রান্ত বিশেষ আদালত ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা  নেতা হেমন্তের জামিনের আবেদন খারিজ করেছে।

জমি সংক্রান্ত আর্থিক দুর্নীতির মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি ইডি গ্রেফতার করেছিল হেমন্তকে। গ্রেফতারির আগে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। ইডির গ্রেফতারি ‘বেআইনি’ বলে অভিযোগ করে শীর্ষ আদালতে আগেই আবেদন জানিয়েছেন হেমন্ত। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে  জামিন পেলেন না ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। সোমবার জেএমএম নেতার জামিনের আর্জি খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের অন্তর্বর্তী জামিনের উদাহরণ উল্লেখ করেই  আর্জি জানিয়েছিলেন হেমন্ত। কিন্তু নির্বাচনে প্রচার করতে চেয়ে জামিন মিলল না তাঁর। 

লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকেই সোরেনের আর্জি ছিল, ভোটপ্রচারে সামিল হওয়ার জন্য তাঁকে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হোক। কিন্তু গত শুক্রবারও হেমন্তের আর্জি খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। অন্যান্য মামলার সঙ্গেই হেমন্তের জামিনের আর্জির শুনানি হবে বলেই সুপ্রিম কোর্ট জানায়।

সোমবার বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চে হেমন্তের মামলার শুনানি শুরু হয়। প্রথমেই হেমন্তের অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী কপিল সিবাল এবং অরুণাভ চৌধুরী। তাঁদের তরফে বলা হয়, নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ার জন্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয়েছে। সেই একই যুক্তিতে সাময়িকভাবে জামিন দেওয়া হোক হেমন্তকেও। কিন্তু এই আবেদনে সাড়া দেয়নি দুই বিচারপতির বেঞ্চ। আগামী ১৭ মে হেমন্তের মামলার শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে।