কাশ্মীরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ সকালে শ্রীনগর পৌছন ইউরােপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা। কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে পাকিস্তানের দাবি সত্যতা যাচাই করে দেখতে চেয়ে গতকাল ইউরােপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা মােদি ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছেন।
জম্মু ও কাশ্মীরের ওপর থেকে বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর কোনাে আন্তর্জাতিক সংগঠন (ইউরােপীয় ইউনিয়ন) জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ সফরে গেলেন। ইউরােপীয় ইউনিয়নের ২৭ জন প্রতিনিধি সেনা সদর দফতরে যান। সেখানে তাঁদেরকে সদ্য তৈরি হওয়া দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে জানানাে হয়। সেখানে তাঁরা মধ্যাহ্নভােজ করেন। উপত্যকার দুটি পাঁচ তারা হােটেলে প্রতিনিধি দলের সদস্যদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে তাঁরা ব্যবসায়ী, হাউসবােট মালিক ও সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
মােদি ইউরােপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে ভারত যে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ‘জিরাে টলারেন্স’ নীতিতে বিশ্বাসী এমন বার্তা দেন। পাকিস্তানের নাম না করে তিনি বলেন, ‘যারা সন্ত্রাসবাদকে রাষ্ট্রনীতি হিসেবে ব্যবস্থার করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত’।
ইউরােপের পার্লামেন্টের সদস্য নাথান গিল বলেন, ‘বিদেশি প্রতিনিধি হিসেবে আমরা কাশ্মীরে ঘুরে দেখার একটা বড় সুযােগ পেলাম- জম্মু ও কাশ্মীরের বাস্তবিক পরিস্থিতি কি, ওখানে ঠিক কি ঘটছে তার সবটাই নিজের চোখে দেখার সুযােগ পাওয়া গেল’। থিয়েরি মারিয়ানি বলেন, ‘কাশ্মীরের বাস্তবিক পরিস্থিতি আমরা দেখতে পাব। কমপক্ষে ওরা আমাদের যেটা দেখাতে চাইছে’।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তরফে জানানাে হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী আশা করছেন, ইউরােপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলটি জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখবেন- এতে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের উন্নয়ন ও প্রশাসন সম্পর্কে একটা সম্যক ধারণা তৈরি হওয়ার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বিভিন্নতা সম্পর্কেও বুঝতে পারবেন’। ইউরােপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি জম্মু কাশ্মীরের পরিস্থিতি ও সীমান্ত সন্ত্রাস নিয়ে জানান।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি ইউরােপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের কাশ্মীর সফরের অনুমতি দেওয়া নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন। আগস্ট মাসে তাঁকে শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তিনি টুইট করে লেখেন, ‘ইউরােপের পার্লামেন্ট সদস্যদের জম্মু-কাশ্মীরে সফর করার অনুমতি দেওয়া হল, কিন্তু দেশের সাংসদদের উপত্যকায় যাওয়ার কোনও অনুমতি দেওয়া হয় না- নিশ্চিত কোনও গােলমাল রয়েছে, যা চাপা দেওয়া হচ্ছে’। কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর বলেন, ‘কেন্দ্রের এহেন সিদ্ধান্ত ‘গণতন্ত্র অপমান করার সামিল’।
ইউরােপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের তরফে বলা হয়, ‘কাশ্মীর সফরে এসে ভালাে লাগছে। প্রধানমন্ত্রী মােদি বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা প্রত্যাহার করার বিষয়টি জানিয়েছিলেন। আমরা নিজের চোখে সামগ্রিক পরিস্থিতি দেখব। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলছি। আমরা চাই সব জায়গায় শান্তি স্থাপিত হােক’।