• facebook
  • twitter
Thursday, 30 January, 2025

ওয়াকফ বিল: জেপিসি থেকে সাসপেন্ড কল্যাণ-সহ ১০ বিরোধী সাংসদ

'আমরা বারবার দাবি জানাচ্ছিলাম যে বৈঠকটি আগামী ৩০, ৩১ জানুয়ারি ডাকা হোক'

প্রতীকী চিত্র

যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে আবার তুমুল হট্টগোল। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ১০ জন বিরোধী সাংসদকে একদিনের জন্য বরখাস্ত করা হল। সংশোধনী বিল নিয়ে শুক্রবার জোর বিতর্ক বাধে শাসক এবং বিরোধী সাংসদদের মধ্যে। তৃণমূলের শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন যৌথ সংসদীয় কমিটির প্রধান তথা বিজেপি নেতা নিশিকান্ত দুবে। তর্কাতর্কি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে, কল্যাণ-সহ ১০ বিরোধী সাংসদকে এদিনের মতো সাসপেন্ড করা হয়েছে। আগামী ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত বৈঠক মুলতুবি রাখা হয়েছে বলে খবর।

শুক্রবার যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠক শুরু হতেই শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি সরকারের নির্দেশে কাজ করছেন কমিটির চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পাল। বৈঠকে তাঁদের বক্তব্য শোনাই হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন বিরোধী সদস্যরা। এরপর পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে মার্শাল ডাকতে হয়।  বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই বিরোধী সাংসদদের সাসপেন্ড হওযার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

নিশিকান্ত দুবে জানান, বিরোধী সদস্যরা বিশেষত আসাদউদ্দিন ওয়েইসিজি মনে করেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রতিনিধিত্ব মানা হচ্ছে না, তাঁদের কথা শোনা হচ্ছে না। তাঁরা কাশ্মীরের নির্বাচিত সকল প্রতিনিধিকে বৈঠকে হাজির করতে বলেন। অবশেষে বিরোধীদের দাবিমতো স্পিকার এদিনের মতো বৈঠক মুলতুবি করে দেন।

এদিকে, তৃণমূল এমপি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, আমরা বারবার দাবি জানাচ্ছিলাম যে বৈঠকটি আগামী ৩০, ৩১ জানুয়ারি ডাকা হোক। কিন্তু, আমাদের অনুরোধে কর্ণপাত করা হয়নি। সামনেই দিল্লি বিধানসভার নির্বাচন, তাই ওদের ওয়াকফ বিল সংশোধন নিয়ে এত তাড়াহুড়ো। তিনি আরও বলেন, গতকাল রাতে আমরা সকলে যখন দিল্লি এস পৌঁছাই, আচমকাই বৈঠকের আলোচ্যসূচি বদলে দেওয়া হয়।

যদিও এর আগে আমাদের বলা হয়েছিল, বৈঠকে আলোচনা হবে পর্যায়ক্রমে।কল্যাণের আরও অভিযোগ, বৈঠকে যা চলছিল তাকে এককথায় অঘোষিত জরুরি অবস্থা বলা চলে। এসব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, কারণ শিয়রে উপস্থিত দিল্লির ভোট। আমরা সব বুঝি। স্পিকার কারও কথাই শুনছিলেন না, এটা কি জমিদারি চলছে? ওরা বিরোধী সদস্যদের কোনও সম্মানই দিচ্ছে না। যৌথ সংসদীয় কমিটিকে একটি প্রহসনে পরিণত করে দিয়েছে ওরা।

কল্যাণ বন্যোপাধ্যায় ছাড়াও সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের তালিকায় রয়েছেন, তৃণমূলের নাদিমউল হক, কংগ্রেস সাংসদ মহম্মদ জাভেদ, ইমরান মাসুদ, এবং সৈয়দ নাসির হোসেন, ডিএমকে সাংসদ এ রাজা ও মহম্মদ আবদুল্লাহ, এআইএমআইএম সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি, সপার সাংসদ মহিবুল্লাহ এবং শিবসেনা উদ্ধব গোষ্ঠীর সাংসদ অরবিন্দ সাওয়ান্ত।

উল্লেখ্য, ওয়াকফ বিল নিয়ে গত অক্টোবরেও যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠকে একইরকম ভাবে অশান্তির সৃষ্টি হয়েছিল। সে দিন আহতও হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ। কাচের বোতল ভেঙে তাঁর হাত কেটে যায়। বৈঠকে অসংসদীয় ভাষা ব্যবহারেরও অভিযোগ উঠেছিল কল্যাণের বিরুদ্ধে। সেবারও তাঁকে এক দিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল।