ফের নতুন করে হিংসা ছড়াল মণিপুরের জিরিবাম জেলায়। জিরিবাম জেলার একটি গ্রামে হামলা চালায় জঙ্গিরা। হামলা হয় বরোবেকেরা থানায়। একমাস বিরতির পর আবার অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে মণিপুরে। শনিবার ভোর থেকে মেইতেই এবং কুকি সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে দফায় দফায় গুলির লড়াই চলে। পুলিশ সূত্রে খবর, জঙ্গিরা উন্নত মানের অস্ত্র ও বিস্ফোরক ব্যবহার করে বরোবেকেরা থানার কাছে হামলা শুরু করে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মনিপুরের বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। শুক্রবার রাতে ইম্ফল পূর্ব জেলায় দুই জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ তাদের চিহ্নিত করেছে। তারা নিষিদ্ধ কাংলেইপাক কমিউনিস্ট পার্টির মুতুম ইনাও সিং এবং খোয়াইরাকপাম রাজেন সিং। পুরেইরোম্বা খংনাংখং এলাকায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বরোবেকরা জিরিবাম শহর থেকে আনুমানিক ৩০ কিমি দূরে এবং ঘন জঙ্গলে আবৃত পাহাড়ী এলাকা। জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াই চলে সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স এবং স্থানীয় পুলিশের। পুলিশের দাবি, হামলা চালিয়েছে কুকি জঙ্গিরা।পাল্টা জবাব দেন মেইতেই সশস্ত্র বাহিনী আরাম্বাই টেঙ্গলের যোদ্ধারাও। সে সময় কুকিদের একাংশ থানায় হামলা চালায় বলে অভিযোগ। প্রসঙ্গত, সেপ্টেম্বরের গোড়ায় জিরিবাম জেলায় দু’গোষ্ঠীর গুলির লড়াইয়ে নিহত হয়েছিলেন পাঁচ জন।
পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য ওই এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা কর্মী পাঠানো হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। নিরাপত্তা বাহিনী বৃদ্ধ, নারী ও শিশুদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার সময় এই ঘটনা ঘটে।
গত বছরের মে মাসে জাতিহিংসা শুরু হওয়ার পর থেকে এই অঞ্চলে অসংখ্য হামলার ঘটনা ঘটে। গত ১৫ অক্টোবর, নয়াদিল্লিতে মণিপুরের মেইতি, কুকি এবং নাগা সম্প্রদায়ের প্রায় ২০ জন বিধায়ককে নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দিল্লিতে শান্তি ফেরাতে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করে। ১৭ মাস আগে জাতিগত হিংসা শুরু হওয়ার পর এটিই ছিল তাদের প্রথম বৈঠক। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার থোকচম সত্যব্রত সিং, টংব্রাম রবিন্দ্র, মেইতেইদের পক্ষ থেকে ছিলেন বসন্তকুমার সিং। কুকি গোষ্ঠী থেকে ছিলেন লেটপাও হাওকিপ এবং নেমচা কিপগেন। সভায় নাগা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন বিধায়ক রাম মুইভা, আওয়াংবো নিউমাই এবং এল ডিখো। এই সমাবেশের লক্ষ্য ছিল মণিপুরে ঘটে চলা উত্তেজনার শান্তিপূর্ণ সমাধান। কিন্তু সমঝোতার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক ঘটনাবলি প্রমান করে মণিপুরে শান্তি এখনও অধরা।